Government Run Jungle Safari: তিন মাস জঙ্গল বন্ধ থাকার পর শুক্রবার খুলে গেল রাজ্যের সমস্ত জঙ্গল। ১৬ সেপ্টেম্বর গরুমারা জাতীয় উদ্যান পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হল। খুলেছে জলদাপাড়া, চাপরামারি, লাটাগুড়ি, বক্সা, চিলাপাতা বন। সামনেই পুজো। তার আগেই শুরু হয়ে যাচ্ছে ভ্রমণের মরশুম। প্রথম দিনই ভিড় উপচে পড়ল।
নির্দিষ্ট দিনেই পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হল ডুয়ার্সের বিভিন্ন জঙ্গল। জঙ্গল খোলার প্রথমদিন সকালেই জঙ্গল সাফারি করতে ভিড় জমালেন পর্যটকরা। তিনমাস পর জঙ্গল ভ্রমণে বেরিয়ে বন্যপ্রাণী দেখে খুশি তাঁরা। তবে জঙ্গলে প্রবেশের ক্ষেত্রে পর্যটকদের অন্যবারের তুলনায় এবার কিছুটা বেশি টাকা গুনতে হচ্ছে। সেইসঙ্গে ক্যামেরা নিয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রেও গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। তবে তারপরও অবশ্য ভ্রুক্ষেপ নেই পর্যটকদের। ঘুরতে এসেছেন, ঘুরবেন তাতে আপত্তি নেই।
প্রতি বছর জুন মাসের ১৬ তারিখ থেকে পর্যটকদের জন্য বন্ধ হয়ে যায় ডুয়ার্সের গরুমারা, চাপড়ামারি, জলদাপাড়া সহ বিভিন্ন জঙ্গল। কেননা বর্ষাকাল বন্যপ্রাণীদের প্রজননের সময়। আর সেকারণেই বন্ধ থাকে জঙ্গল। জঙ্গলে প্রবেশের কারণে প্রজননের ক্ষেত্রে যাতে বন্যপ্রাণীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেকারণেই জঙ্গল এই তিন মাস বন্ধ রাখে বনদপ্তর। সামনেই পুজোর মরসুম। ইতিমধ্যেই ডুয়ার্সের বিভিন্ন হোটেল, রিসোর্টে পর্যটকদের বুকিং আসতে শুরু করেছে। তিনমাস পর পর্যটন ব্যবসায়ীরা আশাবাদী এই মরশুমে হয়তো ভালো ব্যবসা হবে। এ সময় অনেকেই ভিড় করবেন ডুয়ার্সে। পরিকল্পনায় রয়েছে জঙ্গল সাফারিও। ডুয়ার্সের জঙ্গলে পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ হাতির পিঠে চেপে কিংবা হুডখোলা জিপে জঙ্গল সাফারি। তারই তোড়জোড় চলছে গরুমারায়।
ইতিমধ্যে গরুমারা সহ রাজ্যের অন্যান্য জঙ্গলের সরকারি লজ বেশিরভাগই বুক হয়ে গিয়েছে বলে খবর। গরুমারাতে হাতি সাফারির জন্য আরও দুটি দুটি কুনকি হাতি নিয়ে এসেছে বন দফতর। হাতি পিঠে চেপে জঙ্গল সাফারির পাশাপাশি জিপ গাড়িতে গভীর জঙ্গলে ঘুরে হাতি, গণ্ডার, বাইসন দেখার সুযোগও রয়েছে। এবার আর বেসরকারি নয়, এবার উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে প্যাকেজ টুর চালু করতে চলেছে খোদ রাজ্য সরকার। বন দফতরের মাধ্যমে এই উদ্যোগ নিতে চলেছে তারা। জানিয়েছেন খোদ রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বিশেষত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত তথা বিদেশ থেকেও যাঁরা উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলে বেড়াতে আসতে চান, তাঁদের জন্য এই উদ্যোগ যথেষ্ট আকর্ষণীয় হবে। চাইলে অবশ্য যে কেউ প্যাকেজের সুবিধা নিতে পারবে।
প্যাকেজ ট্যুরের পরিকল্পনার বিষয়টি তুলে ধরেন রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এতে জঙ্গলে বেড়ানো থেকে হাতি বা জিপ সাফারি, বন বাংলোতে থাকা, স্টেশন বা বিমানবন্দর থেকে পিকআপ এবং ঘোরার পর এনজেপি বা বাগডোগরায় ড্রপ পর্যন্ত সমস্তটাই মিলবে প্যাকেজে। বনদফতরের অধীনে হওয়ায় প্রিমিয়াম প্যাকেজের আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা। তবে প্যাকেজে সুবিধা ও স্বাচ্ছন্দ অনুযায়ী প্রকারভেদ থাকতে পারে বলে জানানো হয়েছে। তবে এখনও সে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি। তবে সরকারি প্যাকেজ ছাড়াও আলাদাভাবেও ঘুরতে পারবেন পর্যটকরা।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে জঙ্গল সাফারি করতে গিয়ে গন্ডারের তাড়ায় পর্যটক বোঝাই জিপ উলটে যায়। কপাল জোরে প্রাণ বাঁচে পর্যটকদের। তারপরেই নড়েচড়ে বসে জলদাপাড়া বনবিভাগ। সেই সময় যেমন নতুন নিয়ম জারি করা হয়েছিল, তেমনই বিশেষ খেয়াল রাখা হচ্ছিল জঙ্গল সাফারি করতে আসা পর্যটকদের। এই প্যাকেজ চালু হলে বেসরকারি থেকে সরকারি হাতে চলে এলে বনাধিকারিকদের তত্বাবধানে চলে আসবে গোটা জঙ্গল ভ্রমণ। তাতে পর্যটকরা বাড়তি সুবিধা পাবেন। পাশাপাশি বিমাও চালু করা হবে জঙ্গল সাফারির জন্য।