কিডনি সংক্রান্ত সমস্যা (Kidney Related Problems) যে কোনও বয়সে যে কোনও ব্যক্তির হতে পারে। তবে মহিলারা এই সমস্যায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হন। ৩০ বছর বয়সের পরে, বেশিরভাগ মহিলাদেরই কিডনি সংক্রান্ত রোগের (Kidney Diseases) মুখোমুখি হতে হয়। এই ধরণের শারীরিক সমস্যা, মহিলাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। জানুন ৩০ বছর পর মহিলাদের কিডনি সংক্রান্ত সমস্যার প্রধান কারণ
কী কী।
হরমোনের পরিবর্তন (Hormonal Changes)
মহিলাদের সারা জীবনে বিভিন্ন ধরনের হরমোনের পরিবর্তনের সম্মুখীন হতে হয়। এই হরমোনের পরিবর্তনগুলি ৩০ বছর বয়সের আগে এবং পরেও ঘটতে থাকে। হরমোনের মাত্রার ওঠানামা, বিশেষ করে ইস্ট্রোজেন, কিডনির কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে। ইস্ট্রোজেন সুস্থ রক্তনালীগুলি বজায় রাখতে এবং কিডনিতে রক্ত প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইস্ট্রোজেনের মাত্রা ভারসাম্যহীনতার কারণে কিডনি রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। যার কারণে কিডনিতে সংক্রমণ, সিস্ট ও পাথরের মতো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
গর্ভধারণ- সম্পর্কিত সমস্যা (Pregnancy- Related Problems)
যে মহিলারা একাধিক সন্তানের জন্ম দিয়েছেন, তাদের জীবনের কোনও না কোনও সময় কিডনির সমস্যায় পড়তে হতে পারে। যে সব নারীদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপের সম্মুখীন হতে হয়, তাদেরও পরবর্তী জীবনে কিডনির ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। সেক্ষেত্রে, প্রসবের পরে মহিলাদের কিডনির বিশেষ যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
দীর্ঘস্থায়ী রোগ (Chronic Disease)
দীর্ঘদিন ধরে চলমান কোনও দীর্ঘস্থায়ী রোগের কারণে মহিলাদেরও কিডনির সমস্যায় পড়তে হতে পারে। অটোইমিউন ডিসঅর্ডার যেমন- লুপাস এবং রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস মহিলাদের কিডনিকে ক্ষতি প্রবণ করে তোলে। এর পাশাপাশি বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় বাড়ে কিডনি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা। এই দুটি সমস্যাই নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।
অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা (Unhealthy Lifestyle)
খারাপ জীবনধারা কিডনির কার্যকারিতার উপর খুব খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। ধূমপান, অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন, উচ্চ সোডিয়াম জাতীয় খাবার, চিনি এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ কিডনির সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়। কিডনি সুস্থ রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাদ্য এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন খুবই জরুরি।
জেনেটিক কারণ (Genetic Reason)
অনেক সময় পারিবারিক ইতিহাসের কারণেও কিডনির সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। পলিসিস্টিক কিডনি ডিজিজ (Polycystic Kidney Disease/ PKD) এবং নির্দিষ্ট ধরণের গ্লোমেরুলোনফ্রাইটিসের (Glomerulonephritis) মতো অবস্থা উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত হতে পারে এবং ৩০ বছর বয়সের পরে মহিলাদের মধ্যে দেখা দিতে পারে। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো জরুরি। পরিবারের সদস্যরা যাতে সময়ের আগেই এসব রোগ সম্পর্কে জানতে পারেন, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
এটি একটি সাধারণ তথ্য। কিডনি সংক্রান্ত যে কোনও ধরনের সমস্যা এড়াতে, মহিলাদের নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে চেকআপ করাতে হবে এবং শরীরে কোনও অস্বাভাবিক উপসর্গ দেখা গেলে, সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।