গ্যাস-অম্বল ছাড়াও পেটের এমন কিছু সাধারণ সমস্যা রয়েছে, যা দৈনন্দিন জীবনে বড় সমস্যার সৃষ্টি করে। এমন অনেকেই রয়েছেন পেটে খাবার পড়লেই মোচড় দেয়, দৌড়াতে হয় টয়লেটে। এটা এক বড় সমস্যা। যার জন্য বেশ লজ্জার সম্মুখীনও হতে হয় তাদের। কারণ বাইরে খাবার খেলে বা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে খাবার খাওয়ার পর টেনশনের সীমা থাকে না। খাবার খেয়ে টয়লেটে দৌড়ানো সেই ব্যক্তির ভাবমূর্তিকেও অনেকটা ক্ষুণ্ণ করে। অনেকে আবার মনে করেন, খাওয়ার পর টয়লেটে যাওয়াই ভালো। তাতে ভরা পেটের চাপে পেট ভালোভাবে পরিষ্কার হয়ে যায়। কিন্তু না। এটা শরীরের একটি সমস্যা, যা খুবই অস্বস্তিকর।
চিকিৎসকরা বলে থাকেন, খাবার খাওয়ার ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা পর শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে। এক্ষেত্রে পকস্থলী ক্ষুদ্রান্ত হয়ে বৃহদন্ত্রে বেশ কিছুটা সময় খাবারের অবশিষ্ট থাকে। তারপর তা পায়ুপথ হয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। কিন্তু তার আগেই যদি বেরিয়ে যায়, তবে দেরি না করে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। আসলে মানুষের মলত্যাগের কিছু শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া আছে, সে প্রক্রিয়ায় সমস্যা হলেই খাওয়ার পর পরই মলত্যাগের বেগ আসে।
কেন খাওয়ার পরপরই পায়খানা করতে হয়?
এখানে গ্যাস্ট্রোকোলিক রিফ্লেক্সের কথা সবার প্রথমে উঠে আসবে। এক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রোকোলিক রিফ্লেক্স হল একটি মানসিক রিফলেস্ক। এই রিফলেক্স গ্যাস্ট্রোইনটেসটিনাল ট্র্যাক্টের একবারে শেষ প্রান্তের রিফ্লেক্স নিয়ন্ত্রণ করে। খাবার পরপরই পায়খানা পাওয়ার এই সমস্যাকে বলে গ্যাস্ট্রোকোলিক রিফ্লেক্স বলে। এক্ষেত্রে খাবার খাওয়ার পরপরই কোলেনে সংকোচন, প্রসারণ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। এই প্রক্রিয়াটি হজম হয়ে যাওয়া খাবারকে শরীরের বাইরে পৌঁছে বের করে দিতে চায়। এক্ষেত্রে ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম থাকা ব্যক্তিদের এই সমস্যা বেশি হতে দেখা যায়।
কারণ কী?
কোনো খাবারে অ্যালার্জি থাকলে, গ্যাসের সমস্যা থাকলে বা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম থাকলে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। এছাড়া ডায়াবেটিস থাকলেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। যারা অতিরিক্ত ধূমপান করেন বা অ্যালকোহল পান করেন তাদের মধ্যে এই রোগ দেখা যায়। এছাড়া অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমে কোনও সমস্যা দেখা দিলে এই সমস্যা দেখা দেওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে কোনও ইনফেকশনের কারণে এমনটা হতে পারে।
মুক্তির উপায়
কোনো ধরনের ওষুধ ছাড়া এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রয়োজন সঠিক ডায়েট। রাস্তার খাবার বা ঝাল খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। দুধ জাতীয় খাবারে সমস্যা থাকলে না খাওয়াই ভালো। পরিমাণ মতো জল পান করতে হবে। ঘুমাতে হবে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা। প্রতিদিন করতে হবে হালকা ব্যায়াম।