ফুসফুসের ক্যান্সারের সমস্যা দ্রুত বাড়ছে। বিশেষ করে শহরের বাসিন্দারা এর শিকার হচ্ছেন। ধূমপান এবং দূষণের কারণে নতুন ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ৬.৯ শতাংশের জন্য ফুসফুসের ক্যান্সার একাই দায়ি। প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সারের চিকিৎসা একজন ব্যক্তির জীবন বাঁচাতে পারে, কিন্তু সমস্যা হল ফুসফুসের ক্যান্সার সনাক্ত করা কঠিন। আসলে, ফুসফুসে ক্যান্সার শনাক্ত করা যায় না যতক্ষণ না এটি একটি বড় এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
চিকিৎসকরা বলছেন, কাশি এমন একটি প্রাথমিক লক্ষণ যে ফুসফুসের ক্যান্সারকে সনাক্ত করে। আপনি যদি বিড়ি-সিগারেট খান এবং ফুসফুসের ক্যান্সার নিয়ে চিন্তিত থাকেন, তাহলে বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া দরকার। এক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখা খুবই জরুরি।
কাশির লক্ষণ বুঝুন
কাশি আপনার শ্বাসতন্ত্র সম্পর্কে অনেক কিছু বলে। যখনই কোনো জীবাণু বা কোনো ক্ষতিকারক উপাদান আমাদের শ্বাসনালীতে পৌঁছায়, তখনই কাশি হয় শরীরের প্রথম প্রতিক্রিয়া। এমনকি ফুসফুসের ক্যান্সারের ক্ষেত্রেও, কাশি হল রোগ শনাক্ত করার প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। যদি কোনো সাধারণ কারণে কাশি হতে থাকে, তাহলে কয়েকদিন পর আপনা থেকেই উপশম হয়ে যাবে। কিন্তু যদি কাশি কয়েক সপ্তাহ বা মাস ধরে চলতে থাকে তবে তা ফুসফুসের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
কাশির সঙ্গে অন্যান্য লক্ষণ
ফুসফুসের ক্যান্সারে কাশির পাশাপাশি কিছু বিশেষ উপসর্গের দিকেও নজর দেওয়া জরুরি। যেমন শ্লেষ্মায় রক্ত বা লাল রঙের মিউকাস, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা বা নিউমোনিয়ার অভিযোগ থাকতে পারে। এই ধরনের সমস্যা বারবার হতে পারে বা দীর্ঘ সময় ধরে চলতে পারে। আপনি যদি দীর্ঘ সময় কাশিতে ভোগেন বা দীর্ঘ সময় ধরে কাশিতে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন অনুভব করেন তবে তা ফুসফুসে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধির লক্ষণ। ক্যান্সারের শরীর বাসা বাঁধলে কাশির সময় বের হওয়া শব্দ আলাদা হতে পারে। এ ছাড়া কাশি বা কথা বলার সময়ও আপনি ব্যথা অনুভব করতে পারেন।
এই উপসর্গগুলোকেও অবহেলা করবেন না
কাশি সংক্রান্ত সব উপসর্গ দেখার পর একে ক্যান্সার ভাবাও ভুল। এর জন্য বিশেষ কিছু লক্ষণের দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন। এই লক্ষণগুলি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তির উপর নির্ভর করে। গলা বসে যাওয়া, ক্ষুধামন্দা, হঠাৎ ওজন হ্রাস, ক্লান্তি, নাক বা মুখ ফুলে যাওয়া, আঙ্গুলের আকার পরিবর্তন বা কাঁধে ব্যথা এই রোগের লক্ষণ হতে পারে।
কখন ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করবেন?
আপনি যদি চার সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে কাশিতে ভিন্ন শব্দ অনুভব করেন, অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। কাশি সাধারণ বা গুরুতর যেকোনো কারণে হতে পারে। একেবারেই অবহেলা করবেন না। মনে রাখবেন সেকেন্ড হ্যান্ড স্মোকারদেরও ফুসফুসের ক্যান্সারের সমস্যা বাড়ছে।