বাঙালিদের যে কোনও শুভ অনুষ্ঠানে ফল-মিষ্টির পাশাপাশি জায়গা করে নিয়েছে পায়েস। পুজো হোক বা কোনও শুভকাজ, পায়েস ছাড়া তা অসম্পূর্ণ। উত্তর ভারতে তা ক্ষীর হিসাবে পরিচিত আবার দক্ষিণ ভারতে তা পায়সম। বাংলায় তা পায়েস। বাঙালির ১২ মাসের ১৩ পার্বণের বাঁধাধরা অতিথি হল পায়েস। তবে এই পায়েস শুধু খেতেই ভাল নয়, এই খাবারে রয়েছে একাধিক পুষ্টিগুণ।
পায়েসের মূল উপকরণ
পায়েস রান্নার মূল উপকরণ হল দুধ, চাল, চিনি। ক্ষেত্র বিশেষে চিনির বদলে দেওয়া হয় বাতাসা, মিছরি বা নলেন গুড়। স্বাদ বাড়াতে এরমধ্যে মেশে ছোট এলাচ, কিশমিশ, কাজু। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির সদস্য প্রজ্ঞাসুন্দরী দেবী লিখেছেন, “এইসব মশলাগুলি দেওয়া হয় খাবারের সোহাগ বাড়ানোর জন্য, এমনি এমনি নয়।”
পায়েস স্বাস্থ্যকর
স্বাদে অতুলনীয় পায়েস স্বাস্থ্যকরও বটে। বিশেষ করে চালের পায়েসে চাল থাকায় তা পাকস্থলীর স্বাস্থ্য ভালো রাখে। চালে স্টার্চ বা মাড় থাকে যা পেট ফোলা আটকায়। প্রচুর পরিমাণে শারীরিক কসরত করলে বা পরিশ্রম করলে গ্লাইসোজেনের মাত্রা কমে যায়। চালের পায়েসে কার্বোহাইড্রেট থাকে বলে তা গ্লাইসোজেনের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে।
একবাটি পায়েস খেলে কী হয়
এছাড়াও পায়েস গোটা শরীর বিশেষ করে পেট ঠান্ডা করে। বিশেষ করে গরমকালে শরীর গরম হয়ে গেলে এক বাটি ঠান্ডা পায়েস খেলে প্রাণ, মন জুড়িয়ে যায়। এছাড়াও পায়েসের মূল উপাদান হল দুধ। দুধে অ্যামিনো অ্যাসিড আছে যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ঠিক রাখতে সাহায্য করে। পায়েসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আর এ আছে। মেলে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। কোলেস্টেরলের মাত্রাও কম। এক বাটি পায়েসে মেলে ২৩৫ কিলো ক্যালরি এনার্জি, ১২২ কিলো ক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট, ২৪ কিলো ক্যালরি প্রোটিন, ৭৩ কিলো ক্যালরি ফ্যাট।
সঙ্গে রয়েছে একাধিক উপকারিতা
পায়েসে চিনির বদলে গুড় দিলে তা আরও পুষ্টিকর কারণ গুড় রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে আর ওজন বাড়ানো আটকায়। কাজু, কিশমিশ, আমন্ড বাদাম, পেস্তাবাদামের মতো ড্রাই ফ্রুটস শুধু পায়েসের স্বাদই বাড়ায় না তা পুষ্টিও জোগায়।