তুলসী বা সব্জা বীজ, ছোট হলেও এর পুষ্টিগুণ বিশাল। এই ক্ষুদ্র বীজে লুকিয়ে রয়েছে ভরপুর ফাইবার, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সম্প্রতি এইমস, হার্ভার্ড ও স্ট্যানফোর্ড-প্রশিক্ষিত গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ডাঃ সৌরভ শেঠি ইনস্টাগ্রামে সব্জা বীজের নানা উপকারিতা সম্পর্কে বলেছেন। তাঁর মতে, “সব্জা বীজ কেবল একটি স্বাস্থ্য ট্রেন্ড নয়, বরং এটি আপনার শরীরের সামগ্রিক সুস্থতার চাবিকাঠি হতে পারে।”
১. হজমশক্তি উন্নত করে
ডাঃ শেঠির মতে, সব্জা বীজ জলে ভিজিয়ে রাখলে এর বাইরের স্তরটি জেলের মতো হয়ে যায়, যা হজমতন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ভিজিয়ে রাখা বীজ খেলে শরীর হাইড্রেটেড থাকে এবং গ্যাস, বদহজমের সমস্যা কমে যায়।
২. রক্তে শর্করা ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে
সব্জা বীজে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে। খাবারের পরে রক্তে গ্লুকোজের আকস্মিক বৃদ্ধি রোধ করে। একই সঙ্গে এটি খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায় এবং হার্ট সুস্থ থাকে।
৩. হাড় মজবুত করে
সব্জা বীজে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়রনের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ, যা হাড়ের গঠন মজবুত করতে সাহায্য করে। এটি শরীরের খনিজ ঘাটতি পূরণ করে এবং অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
৪. ওজন কমাতে সাহায্য করে
ওজন কমাতে চাইলে সব্জা বীজ হতে পারে প্রাকৃতিক সহায়ক। এই বীজ পেট ভরিয়ে রাখে, ফলে ক্ষুধা কম লাগে এবং অতিরিক্ত খাবার খাওয়া রোধ হয়। এতে ক্যালোরিও খুবই কম, তাই নিয়মিত খেলে শরীরে চর্বি জমে না।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও প্রদাহ কমায়
সব্জা বীজে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহ-নিবারক উপাদান, যা শরীরের ভেতরের প্রদাহ কমিয়ে ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। এটি ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য সংক্রমণের বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
সব্জা বীজ খাওয়ার সঠিক উপায়
ডাঃ শেঠির পরামর্শ, সব্জা বীজ কখনই শুকনো অবস্থায় খাওয়া উচিত নয়, কারণ এটি পেটে গিয়ে ফুলে যেতে পারে। কমপক্ষে ৩০ মিনিট জলে ভিজিয়ে রাখুন।তারপর রস, নারকেল জল, দুধ বা দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে সর্বোচ্চ উপকার পাওয়া যায়। গরমের সময় শরীর ঠান্ডা রাখতে এটি বিশেষভাবে কার্যকর।