ঘুম শরীরের জন্য দরকার। সুস্বাস্থ্যের জন্য ঘুমের বিকল্প কিছু নেই। ডায়েটের মতো ঘুমও ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। ঠিকমতো ঘুম না হলে বিবিধ সমস্যা বাড়ে। হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও থাকে। রাতে অনেকেরই ঘুম আসতে চায় না। ঘুমোনোর জন্য নানা পন্থা নিয়েও লাভ হয় না। বিশ্বের বহু মানুষ স্লিপিং ডিসঅর্ডারের সমস্যায় ভুক্তভোগী। শর্টটার্ম ইনসোমনিয়া ও ক্রনিক ইনসোমনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা নেহাত কম নয়। অতিসম্প্রতি ৪ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষকে নিয়ে একটি গবেষণা করা হয়েছিল। তার রিপোর্ট বলছে,৩৫ শতাংশ মানুষ দিনে ৭ ঘণ্টার কম ঘুমোন। আর ঘুম কম হলে ঘিরে ধরে অসুখ-বিসুখ। হতে পারে ওজনবৃদ্ধি, হৃদরোগ এবং ডায়াবিটিস। ঘুমের অভাব প্রভাব ফেলে ব্যক্তির কাজকর্মে। চটজলদি ঘুমোনোর জন্য বিশেষ কৌশল নেয় সেনাবাহিনী। সেই কৌশলই থাকল এই প্রতিবেদনে-
সেনার কৌশল- যুদ্ধ বা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ঘুমের জন্য একটি কৌশল মেনে চলে সেনাবাহিনী। ১৯৮১ সালে এই পদ্ধতির কথা প্রথমবার জানা গিয়েছিল। মার্কিন সেনার উপরে লেখা চ্যাম্পিয়নশিপ পারফরম্যান্স বাই লয়েড উইন্টার বইয়ে এ কথার উল্লেখ হয়েছে। ওই বইয়ে বলা হয়েছে কীভাবে সেনাবাহিনীর জওয়ানরা যে কোনও পরিস্থিতিতে ২ মিনিটে ঘুমিয়ে পড়েন।
কী সেই কৌশল
সেনাবাহিনীর ঘুমোনোর কৌশলে পর্যাপ্ত আরাম, শ্বাসপ্রশ্বাস ঠিক রাখা ও কল্পনার ক্ষমতার উপরে জোর দেওয়া হয়। এটা করলে গেলে প্রথমে বিছানার ধারে বসে যেতে হবে। বেডের পাশে আলো যেন জ্বলে। ফোন দূরে রাখতে হবে। আগেভাগেই সকালের অ্যালার্ম দেওয়ার থাকলে দিয়ে দেওয়া উচিত।
এবার শরীরের মাংসপেশীগুলিকে টাইট করে নিতে হবে। ধীরে ধীরে আলগা করতে হবে মাংসপেশী। এবার শরীর নিস্তেজ হয়ে উঠবে। কাঁধ নামিয়ে ধীরে ধীরে ঢলে পড়তে হবে বিছানায়। আগে থেকে সাজিয়ে রাখতে হবে বিছানা। শ্বাসপ্রশ্বাসও স্বাভাবিক রাখতে হবে। শ্বাসপ্রশ্বাসের আওয়াজ শুনলেও মন্দ নয়। মনোনিবেশের এটাও একটা প্রক্রিয়া। প্রতিবার শ্বাসের সঙ্গে ছাতি ও পা-কে শিথিল করতে হবে। এবার ধীরে ধীরে শরীর একদম ঢিলে হয়ে যাবে। মাথা থেকে সব কিছু বের করে দিতে। কোনও ভাবনা থাকলে চলবে না। ১০ সেকেন্ডের জন্য চিন্তামুক্ত করতে হবে নিজেকে। স্বাভাবিকভাবে কোনও বিষয় মাথায় আসলে আসতে দেওয়া উচিত। কয়েক সেকেন্ডেই দেখবেন নিজেকে হালকা মনে করবেন ব্যক্তি।
এবার দু'টি বিষয় কল্পনা করতে পারেন। ভাবতে হবে, নীল আকাশের নীচে একটা বড় ঝিলে ভাসমান নৌকোয় শুয়ে আছেন। কিংবা বন্ধ ঘরে দোলনায় ঝুলছেন। এটা করতে না পারলে ১০ সেকেন্ডের জন্য নিজেকে বলতে হবে,'কোনও কিছু ভাবব না। ভাবনাকে আসতে দেব না।' এই গোটা প্রক্রিয়া সারতে হবে ২ মিনিটে। এবার আলো বন্ধ করে শুয়ে পড়তে হবে।
কদিনে সফল হবেন?
শুরুতে এই কৌশলে সাফল্য মিলবে না। সপ্তাহখানেক পর শরীর অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। এতটাই ক্লান্ত অনুভব করবেন ব্যক্তি যে ঘুম আসতে বাধ্য।
আরও পড়ুন- বারবার ভুলে যাচ্ছেন? এই ৬ অভ্যাসে শাণ দিন মগজাস্ত্রে, বাড়বে বুদ্ধি