ঘুম মানুষের জন্য অপরিহার্য। ঘুম না হলে শরীর সুস্থ থাকে না। নিরোগ ও সুস্থ জীবনের জন্য দরকার ঘুম। কিন্তু কতখানি ঘুম দিনে পর্যাপ্ত? প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের ঘুমের প্রয়োজন বেশি। কারণ ঘুমের মধ্যে শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটে। প্রাপ্তবয়স্করাও যখন ঘুমোয় তখন স্মৃতি জমা হতে থাকে মস্তিষ্কে। তবে শিশুরা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় বেশি ঘুমোয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘুমের পরিমাণ কমে। কোন বয়সে কত ঘণ্টার ঘুম সুস্থ থাকার চাবিকাঠি?
ঘুম কেন দরকার? শরীরকে শান্ত করতে, পেশীর টান দূর করতে এবং কোষ মেরামতের জন্য ঘুম প্রয়োজন। ঘুম মানসিক চাপ দূর করে মনকে শান্ত করতে সাহায্য করে। মস্তিষ্ক অপ্রয়োজনীয় স্মৃতিকে সরিয়ে দেয়। নতুন জিনিস শিখতে সাহায্য করে। শুধু ঘুমের ঘন্টাই নয়, ঘুমের মানও গুরুত্বপূর্ণ। শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য ঘুমের মানের উপর নির্ভর করে। দক্ষতা এবং মানসিক শক্তি বৃদ্ধির জন্যও গভীর ঘুম প্রয়োজন। বয়স অনুযায়ী পর্যাপ্ত ঘুম নিলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, মস্তিষ্কের কাজ ঠিকমতো হয়, হার্ট সুস্থ থাকে এবং কিডনি, লিভারের সমস্যাও দূরে রাখে। শেখার ক্ষমতা বাড়াতে হলে মনকে শান্ত রাখা দরকার। এর জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম।
কোন বয়সে একজনের কত ঘন্টা ঘুমানো উচিত?
নবজাতকের জন্য
১ থেকে ৪ সপ্তাহের শিশুর দিনে ১৫ থেকে ১৭ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন।
১ থেকে ৪ মাস বয়সী একটি শিশুর ১৪ থেকে ১৫ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন।
৪ মাস থেকে ১২ মাস বয়সী শিশুর ১৩ থেকে ১৪ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন
এক বছরের উপর
১ বছর থেকে ৩ বছরের একটি শিশুর ১২ থেকে ১৩ ঘন্টা ঘুম প্রয়োজন।
৩ থেকে ৬ বছরের শিশুর জন্য ১০ থেকে ১২ ঘন্টা ঘুম প্রয়োজন।
৬ থেকে ১২ বছরের একটি শিশুর প্রতিদিন প্রায় ৯ থেকে ১০ ঘন্টা ঘুম দরকার।
১২ থেকে ১৮ বছরের শিশুদের প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘন্টা ঘুমোনো উচিত।
প্রাপ্তবয়স্কদের ঘুমের সময়
১৮ বছর থেকে ২৫ বছর বয়সীদের প্রতিদিন ৭ থেকে ৯ ঘন্টা ঘুমানো দরকার।
২৬ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত ব্যক্তিদের দিনে অন্তত ৭ ঘণ্টা ঘুম দরকার।
৬০ বছরের বেশি বয়সীদের ৭-৮ ঘণ্টার ঘুম দরকার। ৫ ঘণ্টার কম বা ৯ ঘণ্টার বেশি হওয়া উচিত নয়।
ভাল ঘুমের জন্য কী দরকার
১। তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়া শ্রেয়। বেশি রাত করা উচিত নয়।
২। নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
৩। ঘুমের আগে কফি, চা বা ডার্ক চকোলেট একদম নয়।
৪। ইলেকট্রনিক ডিভাইস যেমন মোবাইল ঘাঁটবেন না।
৫। বিছানা আরামদায়ক করা দরকার।
৬। ঘুমের আগে স্বল্প আহার।