ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য খুবই দরকারি। রাতে টানা ঘুম হলে সারাদিন শরীর থাকে তরতাজা এবং চাপমুক্ত। কাজে মন লাগে। সেই সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে। হৃদরোগ, ডায়াবেটিস থেকে দূরে থাকা যায়। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকর ভাল ঘুম। তবে প্রায়ই রাতে ঘুম আসে না। এর নানা কারণ হয়েছে। সেজন্য দায়ী কয়েকটি অভ্যাস। যা অকাজের মনে হলেও আদতে কার্যকর।
দীর্ঘদিন ঘুমের অভাব হলে রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। যেমন- হার্ট অ্যাটাক, হার্ট স্ট্রোক, স্থূলতা। রাত ১০টার পরে বা ঘুমানোর আগে এই কাজগুলি কখনই করবেন না। কারণ তা স্বাস্থ্যের জন্য ঠিক নয়। বিবিধ অসুখবিসুখ ডেকে আনে।
ফোন ব্যবহার নয়- স্লিপ ফাউন্ডেশনের মতে, ঘুমোনোর আগে ফোন ব্যবহার করলে ঘুমের গুণমানকে প্রভাবিত করতে পারে। শরীরে ঘুম এবং জেগে থাকার একটি স্বাভাবিক চক্র আছে। সকালে শরীর হরমোন কর্টিসল তৈরি করে যা আমাদের ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে। সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেলাটোনিন হরমোন তৈরি হয় যা শরীরকে ঘুমের সংকেত দেয়। ফলে আপনি যদি ঘুমোনোর আগে ফোন ব্যবহার করলে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে। কারণ এই বৈদ্যুতিন যন্ত্র থেকে নির্গত ফ্লুরোসেন্ট এবং এলইডি আলোর মধ্যে থাকা নীল আলো ঘুম আসতে দেয় না। ঘুম আসার প্রক্রিয়ায় বাধা দেয়।
ঘুমোনোর আগে ব্যায়াম নয়- সুস্থ থাকার জন্য ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শরীরচর্চা করলে তাড়াতাড়ি আসে ঘুম। কিন্তু অতিরিক্ত শরীরচর্চা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই রাতে ঘুমোনোর আগে অতিরিক্ত শরীরচর্চা করবেন না। শরীরে তৈরি হয় উদ্বেগ হরমোন। রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। যে কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। শুধু তাই নয়, পরের দিন আরও ক্লান্ত বোধ করে শরীর।
দীর্ঘ সময় কাজ করবেন না- প্রয়োজনের চেয়ে বেশি বা ক্ষমতার বাইরে অতিরিক্ত ঘণ্টার কাজ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সপ্তাহে ৫৫ ঘন্টার বেশি কাজ করলে হৃদরোগ, হার্ট অ্যাটাক এবং মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ে। রাতের খাবারের পর অফিসের কাজ না করে বিশ্রাম করুন। ঘুম না আসলে চোখ বন্ধ করে শুয়ে পরুন।
চা এবং কফি নয়- চা এবং কফিতে ক্যাফিন থাকে। যা মস্তিষ্ককে দীর্ঘ সময় সচল রাখে। তাই ঘুমানোর আগে ক্যাফিনযুক্ত খাবার খেলে রাত জাগতে হতে পারে। একটি গবেষণায় দেখানো হয়েছে, ক্যাফিন শরীরের স্বাভাবিক ঘুম-জাগার চক্রকে ব্যাহত করে। যা অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণ হতে পারে। রাতে অনেকের চা-কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকে। এই অভ্যাস এখনই ত্যাগ করুন। সুস্থ থাকবে শরীর।
ভারী খাবার খাবেন না- ঘুমোনোর আগে খুব বেশি খাওয়া বা ভারী খাবার খাওয়া উচিত নয়। বেশি খেলে ঘুম আসে না। প্রচুর পরিমাণে উচ্চ-ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেলে বাড়ে শরীরের তাপমাত্রা। হজমে বিলম্ব হয়। তাই রাতে ঘুমোনোর আগে ডিনারে খানিকটা খিদে বাঁচিয়ে রেখে খাওয়া দরকার। অনেকেই এই অভ্যাস মেনে চলেন না। এর কুপ্রভাব ধীরে ধীরে পড়ে শরীরে।
আরও পড়ুন- প্রস্রাবের ধরন বলে দেয় বিকল হচ্ছে কিডনি, এই ৫ লক্ষণ দেখলেই সতর্ক হোন