আজকের দ্রুতগতির জীবনে পেটের নানা সমস্যা যেমন, গ্যাস, পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য ও হজমের গোলমাল প্রায় সকলেরই নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে। অনিয়মিত খাওয়াদাওয়া, কম ফাইবারযুক্ত খাদ্য এবং স্ট্রেসই এসব সমস্যার মূল কারণ। কিন্তু সুস্থ পেট ও শক্তিশালী হজমশক্তির চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে আমাদের রান্নাঘরেই। এইমস, হার্ভার্ড এবং স্ট্যানফোর্ড থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ডঃ সৌরভ শেঠি সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে এমনই তিনটি প্রাকৃতিক উপাদানের কথা উল্লেখ করেছেন, যা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখলে পেটের সমস্যা দূরে থাকতে পারে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক এই তিনটি বীজ-ভিত্তিক প্রাকৃতিক ওষুধ ও তা খাওয়ার সঠিক নিয়ম-
১. চিয়া বীজ: কোষ্ঠকাঠিন্যের বিরুদ্ধে কার্যকর
চিয়া বীজে রয়েছে প্রচুর দ্রবণীয় ফাইবার, যা জল শোষণ করে জেলের মতো এক ধরনের গঠন তৈরি করে। এটি হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে এবং অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ঘটায়।
খাওয়ার নিয়ম:
চিয়া বীজ কখনোই শুকনো অবস্থায় খাওয়া উচিত নয়। কমপক্ষে ২০-৩০ মিনিট বা সম্ভব হলে সারারাত পানিতে ভিজিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ডাঃ শেঠি। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য অনেকটাই কমে যায়।
২. তিসি বীজ: পেট ফাঁপা ও প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে
তিসি বীজ দেখতে ছোট হলেও পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড (ALA) প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে ও হৃদপিণ্ডের সুস্থতায় সহায়ক।
খাওয়ার নিয়ম:
তিসি বীজ অবশ্যই পিষে খাওয়া উচিত, কারণ সম্পূর্ণ অবস্থায় খেলে শরীর তা ভালোভাবে শোষণ করতে পারে না। সপ্তাহে ৩-৪ দিন পিষে রাখা তিসি বীজ খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ।
৩. তুলসী বীজ (সবজা): হজম শক্তি উন্নত করতে সহায়ক
তুলসী বীজ বা সবজা বীজ, দেখতে চিয়া বীজের মতো হলেও এটি আরও সুস্বাদু এবং দ্রুত জলে ফুলে ওঠে। এতে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার হজমে সহায়তা করে, এবং চিয়া বীজের মতোই অন্ত্র পরিষ্কারে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
খাওয়ার নিয়ম
তুলসী বীজ চিয়া বীজের সঙ্গে মিশিয়ে ওটমিল, বাদাম দুধ বা দইয়ের সঙ্গে খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ডঃ শেঠি। এতে খাবারের পুষ্টিগুণ বহুগুণ বেড়ে যায়।