বাংলায় একটা পুরনো প্রবাদ রয়েছে, সরষের মধ্যেই ভূত। বর্তমান অবস্থার দিকে তাকালে সেটিকেই আর ওকটু পরিবর্তন করে বলা যেতে পারে, গোটা সরষেটাই ভূত। আর সেই ভূত থেকেই বার হচ্ছে তেল। যা পৌঁছে যাচ্ছে আমাদের হেঁশেলে। সরষের তেল ভারতের এক বিরাট সংখ্যক মানুষ সরষের তেলে (Mustard oil) রান্না করেন। গত কয়েক মাসের হিসেব ধরলে তেলের দাম মারাত্মক পর্যায়ে বেড়ে গিয়েছে। লিটার প্রতি ৫০-৬০ টাকা পর্যন্ত বেশি দাম দিয়ে গৃহস্থকে কিনতে হচ্ছে সরষের তেল। অনেকে পকেটে টান পড়ায় একটু কমদামি তেলের দিকেই ঝুঁকছেন। একটু ভেবে দেখেছেন, এত দাম দিয়ে যে তেল খাওয়া এবং গায়ে মাখার জন্য বাজার থেকে কিনে নিয়ে আসছেন, তা আদৌ খাঁটি?
অনেকেই ব্র্যান্ডেড প্যাকেটের সরষের তেল কিনে থাকেন। নিশ্চিন্ত হয়ে ভাবেন, এতে ভেজাল থাকার সম্ভাবনাই নেই। ধারণাটি কিন্তু একেবারেই ভুল। সরষের গন্ধ ও ঝাঁঝ আনার জন্য নিম্ন মানের বা অপরিশোধিত পাম তেল, তুষ তেল বা সয়াবিন তেলের সঙ্গে মেশানো হচ্ছে এক ধরনের রাসায়নিক। বহুবার রাসায়নিক পরীক্ষায় এই সত্য উঠে এসেছে। অর্থাৎ নামী ব্র্যান্ডের তেল মানেই চোখ বুজে ব্যবহার করবেন, তার কিন্তু কোনও উপায় নেই। তা হলে বুঝবেন কী ভাবে যে আপনার বাড়িতে ব্যবহৃত সরষের তেল খাঁটি কিনা? উপায় আছে। সামান্য ঘরোয়া পরীক্ষায় চট করে ধরে ফেলবেন সরষের তেলটি খাঁটি কিনা।
প্রথম পদ্ধতি
ফ্রিজে রাখুন ২৪ ঘণ্টা: একটি কাপে সরষের তেল নিয়ে তা ২৪ ঘণ্টা ফ্রিজে রাখুন। এমন জায়গায় রাখবেন যেখানে নড়াচড়া হওয়ার সম্ভাবনা নেই। নির্দিষ্ট সময় পর বার করে যদি দেখেন তেল জমে গিয়েছে, বা তেলের উপর সাদা আস্তরণ পড়েছে, অথবা তেল সামান্য গাঢ় মনে হচ্ছে খানিকটা অংশ একটু ঘন হয়ে গিয়েছে, তা হলে বুঝবেন সরষের তেল খাঁটি নয়। এতে ক্ষতিকারক রাসায়নিক এবং কমদামি পাম তেল বা ভেডিটেবল তেল মেশানো রয়েছে। অবিলম্বে সেই তেল খাওয়া বন্ধ করুন।
দ্বিতীয় পদ্ধতি
হাতের তালুতে ঘষুন: যে সরষের তেল ব্যবহার করেন তার কয়েক ফোঁটা হাতের তালুতে নিয়ে দু' হাত ভালো করে ঘষুন। তালু গরম হয়ে উঠলে লক্ষ্য করুন হাত হলদে হয়ে গিয়েছে কিনা। খাঁটি সরষের তেল ভালো করে ঘষলে হাত তেলতেলে হবে কিন্তু চিটচিটে হবে না। হাতের তালুর রংও পাল্টে যাবে না। যদি রং পাল্টায় এবং হাত চিটচিটে মনে হয়, তবে জানবেন তেলে রাসায়নিক মেশানো রয়েছে। রঙে মেশানো হয়েছে সরষের তেলের হলদে রং আনার জন্য।