শাকের উপকারিতাশীত এলেই বাজারে সবুজ শাক-সবজিতে ভরে যায়। ঠান্ডার সময় গরম ভাতে শাক দিয়ে তৈরি একাধিক পদ খেতে ভালই লাগে। বাংলার শীতকালীন খাবারের সঙ্গে শাকের সম্পর্ক বহু পুরনো। শুধু স্বাদ নয়, শীতের শাক শরীরের জন্যও একেকটি প্রাকৃতিক ওষুধ। কোন শাক কী উপকারে আসে, জেনে নেওয়া যাক সেসব গুণকথা।
পালং শাক
শীতের সবচেয়ে পরিচিত শাক। এতে রয়েছে প্রচুর আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন এ। রক্তস্বল্পতা কমাতে পালং শাক বেশ কার্যকর। চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং ত্বক উজ্জ্বল রাখতে এই শাকের জুড়ি নেই। নিয়মিত পালং শাক খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যও অনেকটাই কমে।
লাল শাক
লাল শাককে বলা হয় গ্রামবাংলার সুপারফুড। এতে আয়রন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি থাকায় রক্ত পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। লিভার ভালো রাখতে এবং শরীরের বিষাক্ত উপাদান বের করতে লাল শাক উপকারী। যাদের হিমোগ্লোবিন কম, তাদের জন্য এটি দারুণ উপকারী।
পুঁই শাক
শীতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাওয়া যায়। এই শাক শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে এবং হজমে বিশেষ উপকারী। পাইলস বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় পুঁই শাক বেশ কার্যকর। ত্বকের শুষ্কতা কমাতেও এটি সহায়ক।
কলমি শাক
শুধু সহজলভ্যই নয়, পুষ্টিতেও ভরপুর। এতে আছে ভিটামিন সি ও আয়রন। সর্দি-কাশির প্রবণতা কমাতে এবং দাঁত-মাড়ি সুস্থ রাখতে কলমি শাক ভালো কাজ করে। নিয়মিত খেলে শরীরের ক্লান্তিও কমে।
নটে শাক
শীতের তুলনামূলক কম পরিচিত হলেও এর গুণ অনেক। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হার্টের জন্য উপকারী। বাতের ব্যথা ও শরীরের প্রদাহ কমাতেও নটে শাকের ভূমিকা রয়েছে।
মেথি শাক
এর তিক্ত স্বাদ অনেকের পছন্দ না হলেও এর উপকার অসাধারণ। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে মেথি শাক খুবই কার্যকর। এটি হজম শক্তি বাড়ায় এবং শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
সর্ষে শাক
শীতের শেষ দিকে বিশেষভাবে জনপ্রিয়। এতে রয়েছে ভিটামিন কে ও ক্যালসিয়াম, যা হাড় মজবুত রাখতে সহায়ক। ঠান্ডাজনিত ব্যথা ও জয়েন্টের সমস্যায় সর্ষে শাক উপকার দেয়।
মুলো শাক
অনেকে শুধু মূলা খান, কিন্তু মূলা শাক ফেলে দেন। এটাই সবচেয়ে বড় ভুল। মূলা শাক ভিটামিন এ, সি ও ক্যালসিয়ামে সমৃদ্ধ। এই শাক লিভার পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে, হজম শক্তি বাড়ায় এবং শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সহায়ক। শীতকালে সর্দি-কাশি ও গলা ব্যথায় মূলা শাক বেশ উপকারী বলে মনে করেন অনেক আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ।
লাউ শাক
হালকা ও সহজপাচ্য লাউ শাক কিডনি ভালো রাখতে সাহায্য করে। শরীরের জলশূন্যতা দূর করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতেও ভূমিকা রাখে।