অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ একইভাবে বসে থাকলে হাতে-পায়ে ঝি ঝি ধরে যায়। যাঁরা ডেস্ক জব করেন, তাঁদের প্রায়শই এই সমস্যায় পড়তে হয়। হাতে পায়ে পিন ফোটার মতো অনুভূতি হয়। কখনও কখনও ঝি ঝি ধরার পাশাপাশি শরীরে ব্যথা বা দুর্বলতাও অনুভব হয়। তবে এই ধরণের সমস্যায় যাঁরা বেশি ভোগেন তাঁদের বিষয়টি হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। কারণ এটি হতে পারে বড় কোনও সমস্যার ইঙ্গিত। চলুন জেনে নেওয়া যাক পায়ে ঝি ঝি ধরার কারণ কী? আর কীভাবেই বা এটিকে ঠিক করা যায়।
পায়ের স্নায়ুতে চাপ - দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকার কারণে পায়ের স্নায়ুর ওপর চাপ পড়ে এবং সেগুলি অসাড় হয়ে যায়, যার কারণে পায়ে ঝি ঝি ধরে। অনেক ক্ষেত্রে, পা বাঁকিয়ে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলেও এমনটা ঘটে।
সমাধান - এই সমস্যাটি বসার অবস্থান পরিবর্তন করে ঠিক করা যেতে পারে। স্নায়ুর উপর চাপ কমলে ঝনঝনানি নিজে থেকেই ভাল হয়ে যাবে।
ডায়াবেটিস - পায়ে জ্বালাপোড়ার অন্যতম প্রধান কারণ হল ডায়াবেটিস। হাত-পায়ে ঝি ঝি ধরাকে ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে মনে করা হয়। পায়ের তলা থেকে শুরু হয়ে এই ঝনঝনানি ধীরে ধীরে ওপর দিকে উঠতে থাকে।
সমাধান - এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।
ভিটামিন বি ১২-এর ঘাটতি - শরীরে ভিটামিন বি ১২-এর ঘাটতির কারণেও হাতে-পায়ে ঝি ঝি ধরার সমস্যা হতে হয়। এই সমস্যাটি ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে অধিক পরিমানে দেখা যায়। এছাড়া ক্লান্তি, বমি বমি ভাব এবং হজমের সমস্যাও ভিটামিন বি ১২-এর ঘাটতির লক্ষণ।
সমাধান - এই সমস্যার সমাধানে শরীরে ভিটামিন বি ১২-এর মাত্রা বাড়াতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনে সাপ্লিমেন্টও নিতে পারেন। তবে তার আগে কোনও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এছাড়া ডিম, স্যামন মাছ, চিজ এবং দুধ খেলেও এর মাত্রা বাড়ানো যায়।
গর্ভাবস্থা - গর্ভাবস্থায় জরায়ুর আকার বেড়ে যাওয়ার কারণে পায়ের স্নায়ুর ওপর চাপ পড়ে। যার কারণে হাতে ও পায়ে শিহরণ অনুভূত হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, এই সমস্যাটি প্রসবের পরে সেরে যায়। তবে যদি এই সমস্যার কারণে কেউ দুর্বলতা বা ফোলাভাবের সম্মুখীন হন, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারকে দেখান। এটি একটি গুরুতর সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।
সমাধান - গর্ভাবস্থায় এই সমস্যাটি দূর করতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন। পা ঝুলিয়ে বসবেন না। এছাড়া মাঝেমধ্যেই বসার পজিশন বদলে ফেলুন, শরীরে জলের পরিমান সঠিকভাবে বজায় রাখুন।
অত্যধিক অ্যালকোহল সেবন - যদি কেউ দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন করেন তাহলেও ক্ষতি হতে পারে স্নায়ুর। মহিলারা যদি দিনে একটির বেশি ও পুরুষেরা ২টির বেশি ড্রিঙ্ক নিলে এই সমস্যায় পড়তে পারেন। এক্ষেত্রে হাত-পায়ে দুর্বলতা দেখা যায়। আঙুলের সংবেদনশীলত কমে যায় এবং চলাফেরার সময় দেহের ভারসাম্যও বজায় থাকে না।
সমাধান - এই সমস্যাটির সমাধানের জন্য যতটা সম্ভব কম অ্যালকোহল সেবন করা উচিত।
আরও পড়ুন - অনুব্রত-কন্যার নামে জমি? বোলপুরে রেজিস্ট্রি অফিসে CBI