উত্তরবঙ্গে যেমন দুর্দান্ত লোকেশন, ডুয়ার্সের জঙ্গল, পাহাড়ে মন হারাতে চায় বারবার, তেমনই জঙ্গলের আনাচে কানাচে রয়েছে কিছু ভয়ের কারণও। নিরন্তর বেরিয়ে আসছে হাতি। লোকালয়ে ঢুকে তছনছ চালাচ্ছে হস্তিকূল। তার সঙ্গে চিতাবাঘ দোসর। কখন কে সামনে এসে পড়ে তা নিয়ে বিস্তর উদ্বেগ রয়েছে। স্থানীয়রাও এ নিয়ে তটস্থ, পর্যটকদের অবস্থায় তথৈবচ হতে পারে। তা বলে তো পর্যটক আসতে বারণ করা যায় না? কারণ এলাকার অর্থনীতির বড় অংশই পর্যটনের উপর নির্ভরশীল। তাই প্রশাসনের তরফে বন্দোবস্ত করা হয়েছে পুলিশের উদ্যোগে।
শুধু বাঘ-হাতিই নয়, সমস্য়া রয়েছে মানুষকে নিয়েও। দুষ্কৃতীরা সুযোগ বুঝে পর্যটকদের হেনস্থা করছে বলে খবর আসছে। কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশের এক পর্যটককে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে। তাকে মাদক খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে সর্বস্ত লুঠ করে নিয়ে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা অভিযোগ উঠেছে। এ সমস্ত সমস্যার মোকাবিলার জন্য প্রশাসনের তরফে পৃথক টিম বা সংগঠন করা হয়েছে। তবে অনেকেই বিষয়টি এখনও জানেন না। তাই যোগাযোগের পরিমাণ কম। প্রশাসন চাইছে বিষয়টি সবাই জানুক। তাহলে তাঁদেরই সুবিধা হবে।
কী কাজ করবে এই দল?
ডুয়ার্সে বেড়াতে এসে রিসর্টের ঠিকানা খোঁজা কিংবা জঙ্গলের রাস্তায় হাতির থেকে পাশ কাটিয়ে পর্যটকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে ‘ট্যুরিস্ট বন্ধু’। পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে পুলিশের এই বিশেষ বাহিনী পর্যটকদের লাগাতার হয়রানি রুখতে ও সুরক্ষায় কাজ করছে। জলপাইগুড়িতে গত অক্টোবর মাসে ক্রান্তি ও মেটেলি ব্লকে তিনটি ও মাল ব্লকে একটি করে মোট সাতটি, ‘ট্যুরিস্ট বন্ধু’ (Tourist Bandhu) পুলিশ সহায়তাকেন্দ্রের উদ্বোধন হয়। পাশাপাশি দুটি বিশেষ গাড়ি পুলিশ প্রশাসনের তরফে দেওয়া হয়।
ট্যুরিস্ট বন্ধুর শক্তি কী?
এই দুটি গাড়ি করে দু'জন এএসআই, দুজন কনস্টেবল ও একজন গাড়ির চালক থাকছে। গজলডোবা থেকে চাপরামারি পর্যন্ত পর্যটকদের হয়রানি রুখতে নজরদারি চালাচ্ছে টিমটি। জেলা পুলিশ সুপার খান্ডবাহালে উমেশ গণপত বলেন, ‘পর্যটকদের ভিড় যতদিন থাকবে ততদিন এটিকে চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
কয়েক সপ্তাহ আগে রাস্তায় ঝোপের আড়ালে একটি দাঁতাল লুকিয়ে ছিল। পর্যটকরা সেটা ঘুণাক্ষরে টের পাননি। তবে সেখানে থাকা ট্যুরিস্ট বন্ধুর সাহায্যেই পর্যটকদের হাতির বিপদ থেকে নিরাপদে নিয়ে আসে এই সংগঠন। সুরজিৎ জানান, শীতকালে জঙ্গল সাফারি থেকে ফিরতে অন্ধকার হয়ে যায়। তাই পর্যটকদের তিনি সুরক্ষিতভাবে নিয়ে আসেন। এছাড়া ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সাতটি ট্যুরিস্ট সহায়তাকেন্দ্র থেকে পর্যটকরা সহজে কোনও জায়গায় যাওয়ার ম্যাপ, গাড়ির ভাড়া সহ সমস্ত কিছু অনায়াসে জানতে পারছেন।