পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব প্রতিমাসে মহিলাদের বেশ যন্ত্রণা দিয়ে থাকে। অধিকাংশ মহিলাদেরই এই সময়ে তলপেটে, কোমরে অসহ্য যন্ত্রণা হয়। সঙ্গে হাত-পা, স্তনেও যন্ত্রণা হয়ে থাকে। পিরিয়ডের এই ব্যথা নিয়েই মহিলাদের ঘরে-বাইরে কাজ করতে হয়। অনেকেই এই সময় ব্যথা কমাতে ওষুধ খেয়ে থাকেন। যেটা একেবারেই সঠিক নয় বলেই জানিয়েছেন একাধিক স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ। তবে এই ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ওষুধ না খেয়ে ঘরোয়া উপায়ে সারিয়ে তুলুন। যার সন্ধান দিয়েছেন চিকিৎসকেরাই।
কেন হয় ব্যথা
পিরিয়ডের ব্যথা বা ডিসমেনোরিয়া সাধারণত প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন নামক রাসায়নিকের প্রভাবে হয়, যা জরায়ুকে সংকুচিত করে এবং অক্সিজেন সরবরাহ কমিয়ে দেয়, ফলে তলপেটে ও পিঠে ব্যথা অনুভব হয়। কিছু ক্ষেত্রে, এন্ডোমেট্রিওসিস বা অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণেও পিরিয়ডের ব্যথা বেশি হতে পারে। তই ব্যথা কমানোর সহজ ও ঘরোয়া উপায়গুলো জেনে নিন।
গরম সেঁক
পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে খুব ভাল কাজ দেয় গরম সেঁক। এজন্য হিটিং প্যাড দিয়ে পেটের ইপর সেঁক দিন। তা না থাকলে কোনও কাপড় ইস্ত্রি দিয়ে গরম করে সেটাও পেটের উপর দিতে পারেন। ইস্ত্রিও হাতের কাছে না থাকলে গরম জল করুন। সেটা কাচের বোতলে ভরে পেটের উপরে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দিন। তাতে জরায়ুর পেশি শিথিল হবে। গরম ভাবে তলপেটে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে। আর পেটের ব্যথা পালাবে।
আয়ুর্বেদিক চা
আদা, ক্যামোমাইল চা বা মৌরি দিয়ে চা বানিয়ে খেলে এই সময় আরাম পেতে পারেন। এই মশলা চা প্রদাহ-বিরোধী এবং স্পাসমোডিক প্রভাব রয়েছে। বিশেষ করে আদা ব্যথার তীব্রতা কমাতে সাহায্য করে এবং প্রায়শই NSAIDs (ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ড্রাগ) এর মতোই কার্যকর -তবে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম।
ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন বি ১
ম্যাগনেসেয়িমা পেশী সংকোচন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন উৎপাদন কমাতে পারে। ভিটামিন বি১ স্নায়ুর কার্যকারিতা এবং শক্তি বিপাককে সমর্থন করে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা গেছে যে নিয়মিত গ্রহণ করলে উভয়ই পিরিয়ড ক্র্যাম্পের তীব্রতা এবং সময়কাল কমাতে পারে।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড
পিরিয়ডের সময় চর্বিযুক্ত মাছ ও সাপ্লিমেন্টে পাওয়া ওমেগা-৩ প্রদাহ-বিরোধী ও এটা পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে সহায়ক। এছাড়াও এই সময় মেজাজ বিগড়ে যাওয়ার বিষয়টিও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
নড়াচড়া ও শরীরচর্চা
২০১৮ সালের একটি গবেষণা অনুযায়ী, হালকা থেকে মাঝারি শরীরচর্চা করলে পিরিয়ড ক্র্যাম্প দ্রুত কমে যায়। সেই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে সব মহিলারা টানা ৮ সপ্তাহের প্রতি সপ্তাহে তিনদিন করে অন্ততপক্ষে ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করেছেন, তাঁদের ব্যথা অনেকটা কম হয়েছে।