জীবনযাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে নানা অসুখ-বিসুখ বাসা বাঁধছে মানুষের শরীরে। তেমন একটি অসুখ শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি। ইউরিক অ্যাসিড হল একটি বিষাক্ত পদার্থ যা মানব শরীরে উৎপন্ন হয়। কিডনি এই বিষাক্ত পদার্থগুলিতে পরিশ্রুত করে। প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেয়। শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে কিডনি তা পরিশ্রুত করতে পারে না। তখন তা গাঁটে গাঁটে স্ফটিকের আকারে জমা হতে শুরু করে। খাদ্যে পিউরিন জাতীয় খাবারের অত্যধিক ব্যবহার শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ে। গাঁটে গাঁটে স্ফটিক আকারে জমা হতে শুরু করে। যা হাইপারইউরিসেমিয়া নামে পরিচিত। গরমে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়ে। তিনবেলার খাবারে রাখুন ৫টি সবজি। সহজেই নিয়ন্ত্রণে আসবে ইউরিক অ্যাসিড।
একাধিক গবেষণা বলছে, টাইপ ২ ডায়াবেটিস,উচ্চ রক্তচাপ এবং ফ্যাটি লিভারের সঙ্গে যোগ রয়েছে উচ্চ ইউরিক অ্যাসিডের। গরমে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা দ্রুত বেড়ে যায়। গরমে বেশি ঘাম হয়। শরীরে জলশূন্যতা বাড়ে। শরীরে জলের অভাবের কারণে কিডনি পর্যাপ্ত পরিমাণে বিষাক্ত পদার্থগুলিকে শরীর থেকে বের করতে পারে না। যে কারণে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ে। ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাদ্যাভ্যাস ঠিক করা জরুরি। ইউরিক অ্যাসিডের রোগীরা জলসমৃদ্ধ সবুজ শাকসবজি খান। তাহলে সারা গ্রীষ্মে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এমনই ৫টি সবজির যা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে-
কুমড়ো- ইউরিক অ্যাসিডের রোগীদের গরমে কুমড়ো খাওয়া উচিত। কুমড়োতে পিউরিনের পরিমাণ কম থাকে। তাই ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে চাইলে কুমড়ো দুর্দান্ত বিকল্প। ভিটামিন সি, বিটা-ক্যারোটিন এবং লুটিনের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ কুমড়ো। এই সবজি প্রদাহ কমায়। ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ করে।
শসা- গরমে শসা খেলে শরীর হাইড্রেট থাকে। নিয়ন্ত্রণে থাকে ইউরিক অ্যাসিডও। ফাইবার সমৃদ্ধ শসা হজমশক্তির উন্নতি ঘটায়। হাত ও পায়ে জমে থাকা স্ফটিক ভেঙে প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেয়। যাঁদের রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি তাঁদের জন্য শসা একটি দুর্দান্ত বিকল্প।
টমেটো- ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে অব্যর্থ দাওয়াই টমেটো। নানা তরি-তরকারিতে টমেটোর ব্যবহার করা যায়। এটি স্যালাড এবং চাটনি করেও খাওয়া হয়। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ টমেটো ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
মাশরুম- ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ মাশরুম খেলে ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে থাকে। মাশরুমে বিটা-গ্লুকান পাওয়া যায়। যা গাঁটে গাঁটে ফোলাভাব কমায়। ব্যথা উপশম করে।
পটল- পটল জলসমৃদ্ধ সবজি। পটল ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা কমাতে সহায়ক। গাঁটে ব্যথা এবং আর্থ্রাইটিসের রোগীদের অবশ্যই এটি খাওয়া উচিত। এতে থাকা পুষ্টিগুণ ইউরিক অ্যাসিড কমাতে কার্যকর।