ভিটামিন ডি শুধুমাত্র হাড়ের জন্য নয়, বরং বার্ধক্য ধীর করতে সাহায্য করতে পারে। নতুন এক গবেষণায় এমনটাই দাবি করেছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা।
অগাস্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ৬৫ বছর গড় বয়সী ১০৩১ জনের ওপর পাঁচ বছর ধরে পরীক্ষা চালান। অংশগ্রহণকারীদের অর্ধেককে প্রতিদিন ২০০০ আইইউ ভিটামিন ডি বড়ি দেওয়া হয়, বাকিদের দেওয়া হয় প্লাসিবো। গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, ভিটামিন ডি গ্রহণকারীদের ডিএনএ রক্ষাকারী টেলোমেরেস ১৪০ বেস জোড়া বেশি দীর্ঘ ছিল প্লাসিবো গ্রুপের তুলনায়। সাধারণত ১০ বছরে প্রায় ৪৬০ বেস জোড়া টেলোমেরেস ছোট হয়ে যায়। অর্থাৎ ভিটামিন ডি আসলেই বার্ধক্য ধীর করতে সাহায্য করতে পারে।
বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করেছেন, টেলোমেরেস কোষকে ক্ষয় থেকে রক্ষা করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি ছোট হতে থাকে, যার ফলে হৃদরোগ, ক্যান্সার বা আর্থ্রাইটিসের মতো রোগ দেখা দেয়। ধূমপান, মানসিক চাপ ও প্রদাহ টেলোমেরেস দ্রুত ক্ষয় করে। ভিটামিন ডি এই ক্ষয় প্রতিরোধে কার্যকর হতে পারে।
গবেষণায় আরও জানা গেছে, ভিটামিন ডি শুধু হাড়কে মজবুত করে না, বরং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়। এটি সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্টজনিত সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে এবং প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করে। এমনকি এটি অটোইমিউন রোগ প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, যদিও এ নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
তবে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, ভিটামিন ডি-এর অতিরিক্ত মাত্রা বিপজ্জনক হতে পারে। কিডনিতে পাথর কিংবা শরীরে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম জমে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এছাড়াও, টেলোমেরেস অত্যধিক দীর্ঘ হলে কিছু ধরণের ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক মাত্রা ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন হতে পারে এবং ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট নেওয়া উচিত নয়। আপাতত, সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম এবং মানসিক চাপমুক্ত জীবনই তরুণ ও সুস্থ থাকার সেরা উপায়।