প্রতীকী ছবি শরীর সুস্থ রাখতে ভিটামিন এবং মিনারেল জরুরি। ভিটামিন ই, বি ১২-এর পাশাপাশি ভিটামিন ডি-ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন ডি আমাদের হাড়, দাঁত এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মজবুত করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি। শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি যাতে না হয়, তা নিয়েই নানা পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। তবে জানেন কি ভিটামিন ডি অত্যধিক হয়ে গেলে ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে আপনার শরীরের জন্যই। এই নিয়ে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
অত্যধিক পরিমাণ ভিটামিন ডি শরীরে প্রবেশ করলে কিডনি বিকল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অনেকেই পর্যাপ্ত রোদের তাপ না পাওয়ার কারণে ভিটামিন ডি ট্যাবলেট খেয়ে থাকেন। অনেক সময়ে সেই ওষুধের পরিমাণ বেড়ে যায়। যা শরীর সুস্থ রাখার বদলে আরও ক্ষতি করে দেয়। আপনিও যদি কোনও ভাবনা চিন্তা ছাড়াই দেদার ভিটামিন ডি ট্যাবলেট খেয়ে চলেছেন, তাহলে আজই সাবধান হন। এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ নেফ্রোলজি এবং ইউরোলজির বিশেষজ্ঞ নেফ্রোলজিস্ট (কিডনি বিশেষজ্ঞ) চিকিৎসাক ডা:নবীনাথ এম চেন্নাই ভিটামিন ডি কত পরিমাণ শরীরে থাকা উচিত, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
কতটা পরিমাণ ভিটামিন ডি শরীরে থাকা উচিত?
সাধারণত মানুষের শরীরে প্রতিনিয়ত স্বল্প পরিমাণেই ভিটামিন ডি প্রবেশ করে। কিডনি বিশেষজ্ঞ ডা: নবীনাথ এমের মতে, 'প্রায় ৪০০ থেকে ১০০০ IU পর্যন্ত ভিটামিন ডি একদিনে প্রয়োজন পড়ে। তবে যদি কেউ প্রতিদিন ৪ হাজার IU থেকেও বেশি ভিটামিন ডি শরীরে প্রবেশ করান এবং কয়েক মাসে তা ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার IU পর্যন্ত পৌঁছে যায় তবে শরীরের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।' আবার চিকিৎসক এ-ও জানিয়েছেন, কেউ কেউ অজান্তে ৬০ হাজার IU ট্যাবলেট খেয়ে ফেলছেন। এই মাত্রা অতিরিক্ত বেশি। এতে রক্তে ক্যালশিয়ামের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এই পরিস্থিতিতে বলা হয় হাইপারক্যালশেমিয়া। এতে কিডনিতে চাপ পড়ে এবং তা বিকল হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
কীভাবে কিডনি বিকলের আশঙ্কা?
ডা: নবীনাথ এম আরও বলেন, 'অতিরিক্ত ভিটামিন ডি কিডনি বিকল করে দিতে পারে। কিডনিকে যদি রক্ত থেকে অতিরিক্ত মাত্রায় বাড়তি ক্যালশিয়াম বের করতে হয় এবং ক্যালশিয়াম কিডনিতে জমা হতে থাকে, ধীরে ধীরে কিডনিতে তা পাথরের আকার ধারণ করে। সমস্যা গুরুতর হলে কিডনি ফেলিওরের আশঙ্কাও থাকে।'
ভিটামিন ডি ওভারডোজে কী হয়?
ডা: নবীনাথ এমের মতে, 'যদি ভিটামিন ডি শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে পৌঁছয় তার লক্ষ্মণ দ্রুত নজরে আসে না।' কী কী লক্ষ্মণ হলে বোঝা যাবে শরীরে ভিটামিন ডি-এর ওভারডোজ হয়ে গিয়েছে?
> গা গোলানো ভাব, বমি
> অতিরিক্ত জল তেষ্টা
> বারবার প্রস্রাব
> মাংসপেশী দুর্বল হয়ে যাওয়া
> ক্লান্তি
> পিঠের নীচের অংশে ব্যথা
এছাড়াও পায়ে যন্ত্রণা, ক্লান্তি এবং শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে যদি কিডনি বিকল হতে শুরু করে।
কীভাবে ভিটামিন ডি-এর ওভারডোজ থেকে বাঁচবেন?
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সাপ্লিমেন্ট খেতে শুরু করলে শরীরে ভিটামিন ডি-এর ওভারডোজের সম্ভাবনা তৈরি হয়। অনেকে না জেনেই ভিটামিন ডি-এর ট্যাবলেট খান কিংবা ইনজেকশন নিয়ে নেন। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া যা কখনওই করা উচিত নয়। শরীরে ভিটামিন ডি এবং ক্যালশিয়ামের পরিমাণ কত রয়েছে, তা নিয়মমাফিক পরীক্ষা করা দরকার।