গ্রীষ্ণের দাবদাহ থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই তরমুজ খাচ্ছেন। রসাল এই ফলটির খোসা যতটা শক্ত তার ভেতরের অংশ ততটা নরম। এই ফলে জলের পরিমাণ এতটাই বেশি যে তা খেলেই আপনার মন-প্রাণ জুড়িয়ে যাবে। তরমুজের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণে জল, প্রায় ৯৭ শতাংশ। এছাড়াও ক্যালোরি একেবারেই নেই। যে কারণে যাঁরা ওজন কমাতে চাইছেন তাঁদের তরমুজ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়াও এই গরমে তরমুজ আমাদের শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখে। গরম পড়তেই বাজার ছেয়ে গিয়েছে তরমুজে। তবে তরমুজ মিষ্টি হওয়ায় অনেক ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা ভয় পান তরমুজ খাওয়ার ব্যাপারে। আবার অনেকে চিন্তায় থাকেন খেলেও কতটুকু খাবেন? রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ডায়াবেটিকদের শারীরিক অবনতি হতে শুরু করে। তাই তো মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে মানা করা হয় এমন রোগীদের।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এক কাপ তরমুজ বা ১৫২ গ্রাম তরমুজে গ্লাইসেমিক লোড অনেক কম পরিমাণে থাকে। তাই সঠিক পরিমাণ তরমুজ খেলে কখনো রক্তের গ্লুকোজ বাড়বে না। একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ অনেক বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। যেমন, তার দৈনিক ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ, ইনসুলিন বা ওষুধের পরিমাণ, খাদ্যের সময়, পরিমাণ ও প্রকৃতির ওপর।
আরও পড়ুন: Watermelon With Salt Bad Impact: নুন ছিটিয়ে তরমুজ খাচ্ছেন? জেনে নিন নিজের কতটা ক্ষতি করছেন
চিকিৎসকরা এও জানিয়েছেন যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা এক কাপ (১৫২ গ্রাম) তরমুজ মধ্য সকালে খেলে কখনোই তার গ্লুকোজ বাড়বে না। কোনো ফল পরিমাণে বেশি খেলে রক্তের গ্লুকোজ বেড়ে যেতে পারে। আবার কেউ সকালে অনেকে প্রাতঃরাশ খেয়ে দুপুরে তরমুজ খেলে তাতেও গ্লুকোজ বাড়তে পারে। তাই খাদ্যের সঠিক পরিমাণ বজায় রেখে দুপুরে বা বিকেলে তরমুজ অবশ্যই খাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: Watermelon eating tips: গরমে তরমুজ খাচ্ছেন, অজান্তেই বিপদ ডেকে আনছেন না তো?
তবে মনে রাখতে হবে এর পরিমাণ- এক কাপ টুকরো করে কাটা ১৫২ গ্রামে পাওয়া যাবে ৪৫ দশমিক ছয় ক্যালোরি এবং বল করে কাটা এক কাপ ১৫৪ গ্রাম এ পাওয়া যাবে ৪৬ দশমিক দুই ক্যালোরি। সুতরাং রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে একজন ডায়াবেটিক রোগী ৪০ থেকে ৬০ ক্যালোরি ফল খেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের তরমুজ খাওয়ার ক্ষেত্রে কখনোই পরিমাণ বাড়ানো যাবে না। তরমুজের ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, কপার, ভিটামিন এ ডায়াবেটিস রোগীদের অনেক উপকারে আসে।
লাইকোপেন অনেক শক্তিশালী একটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এর জন্য তরমুজ লাল। আর এই অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ক্যান্সার সহ নানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। সুতরাং তরমুজে ভয় নেই। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা সারাদিনের খাবারের পরিমাণ ঠিক রেখে পরিমিত পরিমাণ তরমুজ সঠিক সময়ে অনায়াসে খেতে পারবে।
তবে তরমুজ স্যালাড হিসেবে খেতে পারলে কিন্তু সবচেয়ে ভাল। ডায়াবিটিস রোগীরা ব্রেকফাস্টের পর একবাটি তরমুজ খেলে ভাল উপকার পাবেন। তবে তরমুজের জুস কিন্তু চলবে না।