খাবারে কেউ ঝাল আবার কেউ বা বিনা ঝালের খাবার খেতে পছন্দ করেন। অনেকের কাছে ঝাল খাবার ছাড়া তাঁদের মুখে সেই খাবার ভালোই লাগে না। তবে অতিরিক্ত ঝাল খাওয়ার পর জিভে জ্বালাপোড়া শুরু হয়ে যায়। আর সেই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে অনেকে জল খেয়ে নেয়। কিন্তু জল খাওয়ার পর সেই ঝাল লাগা কমে না, বরং বেড়ে যায়। আসুন জেনে নিই ঝাল লাগলে ঠিক কোন উপায়ে স্বস্তি পাওয়া যাবে।
কেন ঝাল লাগে
ঝাল খাবারে ক্যাপাসাইসিন নামক এক ধরনের উপাদান থাকে। সেই উপাদানে এক ধরনের প্রাকৃতিক তেল পাওয়া যায়। আর তেল ও জল কখনও মেশে না। যা আপনার কোষঝিল্লি থেকে ক্যাপসিসিন তাড়ানোর বদলে মুখের ভেতরের অন্য অংশে ছড়িয়ে দেয়। এতে করে মুখের ভেতর আরও ঝাল লাগা অনুভূত হয়। জলের পরিবর্তে কিছু খাবার আছে সেগুলো খেলে ঝাল লাগা থেকে দ্রুত স্বস্তি পাওয়া যায়
টমেটো ও লেবু
টমেটো ও লেবু মুখের ঝালভাব কমাতে দারুণ কাজে দেয়। ঝালের যে অ্যাসিড থাকে, তা টমেটো বা লেবু খেলে কার্যকারিতা হারায়। ঝাল লাগলে তাই দ্রুত এক টুকরো টমেটো মুখে দিতে পারেন। কমলা, আনারস ও লেবুর রসেও একই ধরনের উপাদান আছে। যদি তরকারি খুব বেশি ঝাল হয় তাহলে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নিন। ঝাল দ্রুত কমে যাবে।
দুগ্ধজাতীয় খাবার
ঝাল লাগলে দুগ্ধজাত খাবার দ্রুত যাদুর মতো কাজ করে। ঠাণ্ডা এক চুমুক দুধ বা এক চামচ দই মুখের জ্বালা জুড়াতে পারে। দই মুখে দিলে দ্রুত মুখের জ্বলুনি কমবে। দুগ্ধজাত খাবারে ক্যাপসিসিন নামক এক উপাদান থাকে, যা ঝালে থাকা ক্যাপসিসিনকে ভেঙে ফেলে ও এর প্রভাব থেকে মুক্তি দেয়।
চিনি ও মধু
মুখে বেশি ঝাল লাগলে একটু চিনি বা এক চামচ মধু খেয়ে নিতে পারেন। তেলজাতীয় ক্যাপসিসিনকে চিনি বা মধু শোষণ করে নেয় এবং মুখের জ্বলা ভাব দ্রুত দূর করে।
ভাত বা রুটি
মুখে বেশি ঝাল লাগলে দ্রুত ফোলা রুটি বা একগাল ভাত খেয়ে নিতে পারেন। ক্যাপসিসিন ও মুখের মধ্যে প্রাকৃতিক বাধা দেয় শ্বেতসার। এতে কিছুটা ক্যাপসিসিন শোষিত হয়। এছাড়া ঝোলজাতীয় কোনো তরকারিতে ঝাল বেশি হলে তখন আলুর কয়েক টুকরা দিয়ে দেবন। এতে করে তরকারিতে ঝাল অনেকটা কমবে। একইভাবে স্যুপেও ঝাল হলেও একই পদ্ধতি কাজে লাগাতে পারেন।
টক দই
মেদ ঝরানো থেকে ঝাল কমানো— সবেতেই সিদ্ধহস্ত টক দই। ঝাল কমাতে এই দইয়ের জুড়ি মেলা ভার। তবে সবচেয়ে ভাল হয় যদি ঝাল কোনও খাবার খেয়ে এক চামচ টক দই খেয়ে নিতে পারেন। দইয়ে থাকা উপকারী উপাদান মুখের ভিতরে একটা স্তর তৈরি করে। যা ঝালের সঙ্গে লড়াই করে।
লিকার চা
মশলাদার খাবার খেয়ে ঝালের চোটে প্রাণ ওষ্ঠাগত? সুস্থ হতে কিন্তু চুমুক দিতে পারেন চায়ের কাপে। চায়ে থাকা ট্যানিন ক্যাপাসাইসিনের সক্রিয়তা ধীরে ধীরে কমাতে থাকে। তবে এই সময়ে খুব গরম চা খাওয়ার দরকার নেই। তাতে সমস্যা হতে পারে। তার চেয়ে ঈষদুষ্ণ গরমজলে চা ফুটিয়ে নিতে পারেন। উপকার পাবেন।