
শীতের ছুটি মানেই পাহাড়ে ভ্রমণের মরশুম। সেই সুযোগে ফের উৎসবের আমেজ দার্জিলিংয়ে। প্রতি বছরের মতো এবারও ঘুম ফেস্টিভ্যালের জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন করছে দার্জিলিং হিমালয়ান রেল কর্তৃপক্ষ। এবার উৎসবকে ঘিরে টয়ট্রেনপ্রেমীদের জন্য একাধিক চমকও থাকছে।

ডিএইচআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বেঙ্গালুরু থেকে দু’টি হেরিটেজ ইঞ্জিন আনা হয়েছে। সেই দুটি ইঞ্জিন ঘুম ফেস্টিভ্যালের মঞ্চ থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হবে। পাশাপাশি পর্যটকদের ভিড় সামলাতে ছ’টি নতুন টয়ট্রেন পরিষেবা শুরু করছে দার্জিলিং হিমালয়ান রেল।

এনজেপি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত সকালে টয়ট্রেনের চাহিদা ছিল অনেক। কিন্তু আগে সকালের দিকে তেমন কোনও স্থায়ী পরিষেবা ছিল না। এতে রাজ্যের বাইরের এবং বিদেশি পর্যটকদের টয়ট্রেনে দার্জিলিং পৌঁছতে বেশ অপেক্ষা করতে হত।

এবার সেই সমস্যার সমাধান করতে এনজেপি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত নতুন স্থায়ী টয়ট্রেন চালু করা হয়েছে। আগে সকাল সাড়ে ন’টায় ট্রেন ছাড়ত, কিন্তু নতুন এই পরিষেবায় সকাল সাড়ে সাতটায় এনজেপি থেকে টয়ট্রেন ছাড়বে। ফলে সকাল সকাল রওনা দিতে পারবেন পর্যটকরা।

বর্তমানে দার্জিলিং থেকে ঘুম পর্যন্ত আটটি জয় রাইড চলে। কিন্তু শীতের মরশুমে পাহাড়ে ভিড় বাড়লে এই টিকিট এক মাস আগেই শেষ হয়ে যায়। ফলে অনেক পর্যটক টয়ট্রেন ভ্রমণের সুযোগ হারান। তাই এবার আরও চারটি অতিরিক্ত জয় রাইড চালু করা হচ্ছে দার্জিলিং থেকে ঘুম পর্যন্ত।

এছাড়াও, এনজেপি থেকে তিনধারিয়া পর্যন্ত একটি নতুন স্পেশাল জয় রাইড শুরু হবে বিকেলে। সব মিলিয়ে ছ’টি নতুন পরিষেবায় উচ্ছ্বসিত পর্যটনমহল। এই সিদ্ধান্তে দার্জিলিং ও আশপাশের হোটেল ব্যবসায়ীরাও আশাবাদী।

ডিএইচআরের অধিকর্তা ঋষভ চৌধুরী বলেন, পর্যটকদের সুবিধার জন্যই এই নতুন ছয়টি পরিষেবা চালু করা হচ্ছে। সকাল সাড়ে সাতটায় এনজেপি থেকে স্থায়ী টয়ট্রেন ছাড়বে দার্জিলিংয়ের উদ্দেশে। পাশাপাশি শীতের পর্যটন মরশুমে চারটি নতুন জয় রাইড চালু করা হচ্ছে।

তিনি জানান, এবারের ঘুম ফেস্টিভ্যাল হবে সম্পূর্ণ নতুন রূপে। ডিএইচআরের অধীনে প্রতিটি স্টেশন সাজিয়ে তোলা হবে। মোট ১৩টি টয়ট্রেন ইঞ্জিনের নামে ১৩টি বিশেষ বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হবে।

ইংল্যান্ডের ডিএইচআর সোসাইটির ডিরেক্টর ডেভিড চার্লসওয়ার্থ বলেন, ডিএইচআর বিশ্বের অন্যতম ঐতিহ্য। তাজমহলের মতোই গুরুত্বপূর্ণ এই রেললাইন, কারণ পাহাড়ি এলাকায় এমন রেল পরিষেবা বিশ্বের আর কোথাও নেই। এই ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখা কঠিন হলেও কর্তৃপক্ষ প্রশংসনীয় কাজ করছে।

তাঁর মতে, পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে হলে আরও আগে থেকেই পরিষেবা চালু করতে হবে এবং নিয়মিত রাখতে হবে। শুধু উৎসবের সময় ট্রেন চালালেই চলবে না, সময়মতো রুটিন বজায় রাখতে হবে এবং প্রচারের মাধ্যমে তাকে জনপ্রিয় করে তুলতে হবে। তাহলেই দার্জিলিং টয়ট্রেনের প্রতি আকর্ষণ আরও বাড়বে।

