
রাতভর তুষারপাত নাথুলা ও ছাঙ্গুতে। সাদা বরফে মোড়া হিমালয়। বাড়ছে পর্যটকের ভিড়, তবে সতর্কতার নির্দেশ প্রশাসনের।

শুক্রবার রাত থেকেই সিকিমের পূর্বাঞ্চলে শুরু হয়েছে প্রবল তুষারপাত। বিশেষ করে নাথুলা পাস ও ছাঙ্গু লেক অঞ্চলে বরফ পড়তে শুরু করে মধ্যরাতের পর থেকে।

সকাল হতেই দেখা যায় চারপাশের পাহাড়, রাস্তা ও ঘরবাড়ি ঘন বরফে ঢেকে গেছে। একেবারে রূপকথার মতো চিত্র তৈরি হয়েছে গোটা এলাকায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ মরশুমে এটাই সিকিমের প্রথম বড় তুষারপাত। এই বরফ পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই কার্যত শীতের আনুষ্ঠানিক সূচনা ঘটল পাহাড়ে।

ছাঙ্গু বা চোমগো লেক এলাকায় শনিবার ভোর থেকে বরফ পড়তে দেখা যায়। পর্যটকরা সেই মনোরম দৃশ্য মোবাইল ও ক্যামেরায় বন্দি করতে ভিড় জমাচ্ছেন।

নাথুলা পাসের রাস্তাগুলিও এখন বরফে মোড়া। ভারত-চিন সীমান্ত সংলগ্ন এই এলাকায় সেনা সদস্যদের চলাচলও এখন ধীর হয়েছে প্রবল তুষারপাতের কারণে।

উত্তর সিকিমের লাচুং ও লাচেন এলাকায়ও দেখা গেছে একই দৃশ্য। সেখানে ঘরবাড়ির ছাদ, রাস্তাঘাট, পাহাড়ের ঢাল — সবই এখন বরফের আস্তরণে ঢাকা।

পর্যটকরা বলছেন, “এমন দৃশ্য জীবনে একবার দেখা যায়।” ডিসেম্বরের আগেই তুষারপাত শুরু হওয়ায় শীতপ্রেমী ভ্রমণকারীদের উৎসাহ আরও বেড়েছে।

গ্যাংটক থেকে ছাঙ্গু ও নাথুলা যাওয়ার পথে তীব্র ঠান্ডার সঙ্গে বরফের দখল বাড়ছে। অনেক জায়গায় গাড়ি চলাচলে সমস্যা দেখা দিয়েছে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটকদের সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ জারি হয়েছে। বরফে ঢাকা রাস্তাগুলি অত্যন্ত পিচ্ছিল হওয়ায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

সিকিম পর্যটন বিভাগ জানিয়েছে, তুষারপাতের সময় নাথুলা পাস প্রায়শই সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয় নিরাপত্তার জন্য। পর্যটকদের বিকল্প পরিকল্পনা রাখতে বলা হয়েছে।

স্থানীয় হোটেল মালিকরা জানিয়েছেন, সপ্তাহান্তে ঘর ফাঁকা নেই। আগাম বুকিং ছাড়া এখন সিকিমে থাকা প্রায় অসম্ভব।

প্রশাসনের তরফে গাড়িচালকদের জন্য চেন টায়ার (চাকা বরফে স্লিপ না করার সরঞ্জাম) ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পর্যটকরা গ্যাংটক বা তিস্তার আশেপাশের এলাকায় গিয়ে আপাতত বরফের আনন্দ উপভোগ করছেন।

আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, আগামী ২-৩ দিন পর্যন্ত পূর্ব ও উত্তর সিকিমে মাঝারি থেকে প্রবল তুষারপাত চলবে।

ফলে সিকিমে এখন শুরু হয়েছে প্রকৃত শীতের রাজত্ব, যেখানে পাহাড়, হ্রদ ও উপত্যকা সবই সাদা তুষারে আচ্ছন্ন, আর ভ্রমণপ্রেমীরা মুগ্ধ সেই স্বপ্নিল দৃশ্যে।