Flower Tourism Of India: "বসন্ত এসে গেছে।" ফুলে ফুলে ছেয়ে গিয়েছে ফুলের উপত্যকা। যদি ফুল ভালবাসেন, ফুলের সৌন্দর্যে গা ভাসিয়ে এই বসন্তে যদি সঙ্গীকে নিয়ে হারিয়ে যেতে চান তাহলে দেশের ৬ টি ফুলের উপত্যকা আপনার জন্যই অপেক্ষা করছে। ছুটি থাকলে ৩-৪ দিনের টুরে ঘুরে আসুন। মিস করলে নিজেকেই ঠকাবেন। দেখে নিন কোন কোন জায়গায় গেলে ফুলের সাম্রাজ্য পাবেন।
মুন্নার ভ্যালি (Munnar Valley) কেরল-
কেরলের মুন্নার ভ্যালি নীলকুরিঞ্জি ফুল এর জন্য প্রসিদ্ধ। এই জায়গায় ১২ বছরে একবার নীলকুরিঞ্জি ফুল ফোটে। এই জায়গা কেরলের ইডুক্কি জেলাতে অবস্থিত। বসন্তের সময় পর্যটন কেন্দ্রে ল্যাভেন্ডার ফুলে ভরে যায়। ল্যাভেন্ডারের সৌরভে দূরদূরান্ত পর্যন্ত সুরভিত থাকে। এখানে যাওয়ার জন্য অক্টোবর থেকে আগস্ট পর্যন্ত যে কোনও সময় অত্যন্ত আদর্শ।
ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স (Valley Of Flowers) উত্তরাখণ্ড
উত্তরাখণ্ডের ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স দেখতে গেলে আপনাকে গোবিন্দ ঘাট গ্রাম থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার ট্রেকিং(trekking) করতে হবে। এই ঘাঁটি নন্দাদেবী বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ এর অংশ। এই ঘাঁটিতে আপনি হিমালায়ান টিবলু, হিমালায়ান পপি, ব্রহ্মকমল, মেরিগোল্ড, রডোডেনড্রন, ডেইজি এবং কোবরা লিলির হরেক রকমের প্রজাতি দেখতে পাবেন। জুন থেকে সেপ্টেম্বর এর মধ্যে এখানে গেলে আপনার মন ভরে যাবেষ এখানেও সারা বছরই কিছু-না-কিছু ফুল ফোটে।
ইয়ুমথাং ভ্যালি Yumthang Valley সিকিম
সিকিমে হিমালয় পর্বতমালা এবং ফুলের সৌন্দর্যের বিভিন্ন প্রজাতির সঙ্গে অর্কিডের সংমিশ্রণে ইয়ুমথাং ভ্যালি প্রকৃতির একটা অদ্ভুত নমুনা। নর্থ সিকিমে ছাঙ্গুর বাড়িতে একটা অংশ যেখানে আপনি এই ফুল ২৪ ধরনের ফুল দেখতে পাবেন। এছাড়া আপনি রডোনডেনড্রন, কোবরা লিলি, আইরিশ, পপি, লাউজাভা, জারভেরা বিভিন্ন অর্কিডের এর বিভিন্ন সুগন্ধি ফুলের বিভিন্ন প্রজাতি দেখতে পাবেন। এখানে সারাবছরই প্রচন্ড ঠান্ডা থাকে। তবে বর্ষা বাদ দিয়ে যে কোনও সময় গেলেই এখানে ফুলের সমাহার দেখতে পাওয়া যাবে। তবে শীতে ফুল কিছুটা কম থাকে।
কাস প্লেটিউ (Kas Pletyu) মহারাষ্ট্র-
কাস প্লেটিউ মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার একটি জায়গা। যেখানেকার সৌন্দর্যের সঙ্গে তুলনা করতে গেলে বিদেশের চোখ ধাঁধানো ডেস্টিনেশন এর সঙ্গে তুলনা করতে হবে। এই ঘাঁটির নাম কাসা ফুলের নাম অনুসারে হয়েছে যা অত্যন্ত বিরল এবং দুর্লভ প্রজাতির একটা ফুল। ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের লিস্টে জায়গা করে নেওয়া ৮৫০ এর বেশি ফুলের প্রজাতি এখানে রয়েছে। এই ফুল গুলির কতগুলি এমন প্রজাতি রয়েছে সেগুলি সারা দিনে একাধিকবার ফোটে এবং একাধিকবার ঝরে পড়ে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার একাধিকবার জীবনচক্র আবৃত হয়ে যায়। অগাস্টের শেষ থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে এখানে যাওয়ার সবচেয়ে আদর্শ সময়। যদিও সারা বছরই ফুলের সমাহার দেখতে পাওয়া যায়।
জুকাও ভ্যালি(Jukao Valley) নাগাল্যান্ড-
নাগাল্যান্ড মণিপুর বর্ডারের পাশ থেকে জুকাও ভ্যালি কমের্সিয়ালিজেশন জগত থেকে অনেক দূরে। কম এক্সপ্লোর হওয়া অত্যন্ত সুন্দর ডেস্টিনেশন। লিলির একটা দুর্লভ প্রজাতির শুধু এখানেই পাওয়া যায় গোটা বিশ্বের মধ্যে। এই জায়গায় অ্যাকোনিটম, ইউফোর্বিয়স, রডোডেনড্রনের একাধিক সুন্দর প্রজাতি রয়েছে, যেগুলো খুব কম জায়গাতেই পাওয়া যায়। বিখ্যাত হয়ে চলা এই এলাকায় বর্তমানে বেশ কিছু বছর ধরে পর্যটকদের আনাগোনা অনেকটাই বেড়েছে। এখানে যাওয়া সবচেয়ে ভালো সময় জুন থেকে সেপ্টেম্বর এর মধ্যেই। বর্ষার পরে এখানে ফুল খিলখিলিয়ে ওঠে।
টিউলিপ গার্ডেন (Tulip Garden) কাশ্মীর-
কাশ্মীর শুধুমাত্র বরফে ঢাকা পাহাড় কিংবা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত নয়। বসন্তে কাশ্মীরের অন্যরূপ যারা প্রত্যক্ষ করেননি, তাঁরা এর সৌন্দর্য কল্পনাও করতে পারবেন না। এখানকার টিউলিপ গার্ডেন পর্যটক এর আকর্ষণের সবচেয়ে বড় কেন্দ্র। এটি এশিয়ার সবচেয়ে বড় টিউলিপ গার্ডেন। যদিও এখানে আপনি হাইসিন, নার্সিসাস, ড্যাফোডিল, মাস্কারিয়া এবং আইরিশের ফুলের বিভিন্ন প্রজাতিও দেখতে পাবেন। তবে টিউলিপ এখানকার মূল আকর্ষণ। লাল, হলুদ, নীল, কমলা বিভিন্ন রঙের টিউলিপ আপনার চোখকে দুর্দান্ত আরাম দেবে। নিশান বাগ এবং চশমা শাহী, মোগল গার্ডেন দিয়ে ঘেরা এই জায়গা আপনাকে ডাল লেকের সৌন্দর্য চোখের সামনে তুলে ধরবে। এই জায়গা শ্রীনগরে অবস্থিত এবং এখানে আপনি মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে যেতে পারলে সবচেয়ে সুন্দর দেখতে পাবেন। তবে শীতকালে সৌন্দর্য অনুপস্থিত থাকে।