Devi Choudhurany Toursim North Bengal: গজলডোবার বিকল্প পর্যটন কেন্দ্র তৈরি হয়ে গেল। এমনিতেই উত্তরবঙ্গে পর্যটকদের চাপ উত্তরোত্তর বাড়ছে। তাই নতুন নতুন বিকল্প পর্যটনকেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। বেশিরভাগই পাহাড়ে হলেও ডুয়ার্সেও কিছু কিছু তৈরি হচ্ছে। এবার ডুয়ার্সে গজলডোবার ভোরের আলো পর্যটন কেন্দ্রের মতো আরেকটা একটু ছোট আকারে তৈরি করা হয়েছে। আকারে কিছুটা ছোট, সুযোগ সুবিধা থাকলেও বিলাসবহুল নয়। তবে জঙ্গল ঘেরা অনাঘ্রাত এই পর্যটনকেন্দ্রটি পর্যটক টানবে এর ঐতিহাসিকতা ও বুনো ফ্লেভারে বলে আশাবাদী জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন।
বৈকুন্ঠপুর জঙ্গল মানেই ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানীর ইতিহাস। আনন্দমঠ উপন্যাস এবং তার চরিত্রগুলি এখানকার মানুষের বিশ্বাসে মিশে মিথ ও ইতিহাসে মাখামাখি করে সত্যের মতো হয়ে গিয়েছে। আর বুনো সৌন্দর্যের পাশাপাশি এটাকেও হাতিয়ার করে পর্যটনের বিকাশ চাইছেন তাঁরা। এই পর্যটনকেন্দ্র থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে দেবী চৌধুরানি ও ভবানী পাঠকের গোপন ডেরা। এখন তা শিকারপুর দেবীচৌধুরানী মন্দির নামে পরিচিত। ঘুরতে গিয়ে এখানে থাকলে এই এলাকাগুলি ঘুরে আসতে পারেন সহজেই। দুদিন এখানে চুপচাপ কাটিয়ে জাস্ট হেঁটে ঘুরুন। ট্রাভেল অব লাইফটাইম হয়ে থাকবে।
দেবী চৌধুরানীর স্মৃতি বিজড়িত জলপাইগুড়ি বৈকুন্ঠপুর বনাঞ্চল। সেই ইতিহাসকে আশ্রয় করে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বারোপাটিয়ার গৌরীকোন এলাকায় তৈরি হয়েছে এই ইকো টুরিজম হাব। নাম দেওয়া হয়েছে আনন্দমঠ ইকো টুরিজম হাব। নামেই পরিষ্কার কোন পথে প্রচার করতে চাইছে প্রশাসন। সোমবারই এই হাবের উদ্বোধন করে দিয়েছেন জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সিইও, অতিরিক্ত জেলা শাসক তেজস্বী রানা।
কী কী সুবিধা মিলবে?
এই হাবে তিনটি কটেজ তৈরি হয়েছে। এটা দিয়েই চালু করে দেওয়া হচ্ছে আপাতত। জানা গিয়েছে পরবর্তীতে এখানে আরও ৩০টিরও বেশি কটেজ তৈরি হবে। একটি কটেজে ৪ জন পর্যন্ত থাকতে পারবেন। একদিনের থাকা খাওয়ার জন্য জনপ্রতি খরচ পড়বে ১২০০ টাকা করে। সবটাই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা পরিচালনা করবেন।
আরও যা যা মিলবে?
এখানে অর্গানিক ফার্ম তৈরি করা হচ্ছে। সেখানকার শাক-সবজিই রান্না করা হবে অতিথিদের জন্য। শুধু তাই নয়। বিশাল আকারে পুকুর কাটা হচ্ছে। সেখানে থাকবে বোটিংয়ের ব্যবস্থা। মাছ চাষও হবে। স্থানীয় মহিলারা এখানেই ঢেঁকি ছাটা চাল তৈরি করে প্যাকেজিং করবেন। এখানেই মুড়ি ভাজা হবে। কেউ চাইলে একবেলাও এসে ঘুরে যেতে পারেন। তাঁদের খাওয়াদাওয়ার চিন্তা নেই। থাকবে রেস্তোরাঁ। জেলা প্রশাসন মনে করছে, এই ইকো টুরিজম হাবকে ঘিরে এলাকার অর্থনীতি নতুন দিন দেখবে।
আশপাশে কী দেখবেন?
কাছেই গজলডোবা ভোরের আলো। সেখানে গাড়ি থাকলে ঘুরে আসতে পারবেন। আছে তিস্তানদী। গৌরীকোনে পরিযায়ী পাখিরা ভিড় জমায়। খুব কাছে সতীপিঠের একপিঠ ভ্রামরী দেবীর মন্দির। রয়েছে শতাব্দী প্রাচীন গৌরীকোন মন্দিরও। এগুলিকে এতদিন আলাদা করে প্রচারে আনেনি কেউই। এসজেডিএ-র তরফে জানানো হয়েছে, আগামী এক বছরের মধ্যে রিসর্ট, রেস্তোরাঁ করারও পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।