দার্জিলিঙের পথে টয়ট্রেন যাত্রার সম্পূর্ণ গাইড, কী দেখবেন কী করবেন?Darjeeling Rangaroon Trekking Route Reopen: দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। প্রায় চল্লিশ বছর পর আবারও খুলে যাচ্ছে দার্জিলিং-রঙ্গারুন ট্রেকিং রুট। পুরোনো এই ঐতিহাসিক পথকে কেন্দ্র করে দার্জিলিংয়ের পর্যটন শিল্পে নতুন গতি আসার আশা করছেন স্থানীয় প্রশাসন থেকে ব্যবসায়ী সকলেই।
দার্জিলিং শহরের আইকনিক চৌরাস্তা থেকে ‘মেলো টি ফেস্টিভ্যাল’-এর বিশেষ ডি-হাইক কর্মসূচির মাধ্যমেই পুনর্জন্ম পাবে রুটটি। এই উপলক্ষে প্রায় ২৫০ জন ট্রেকার ও পর্বতারোহী চৌরাস্তা থেকে রঙ্গারুং পর্যন্ত হাঁটবেন ১২ কিলোমিটার।
চার দশক ধরে বন্ধ ছিল রুটটি
গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের উত্তাল সময় ১৯৮৬ সালে নিরাপত্তাজনিত কারণে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল রাগেরুং ট্রেকিং রুট। এরপর রুটটি পুনরায় চালুর জন্য রাগেরুং হোমস্টে সংগঠন ও স্থানীয় চা বাগান কর্তৃপক্ষ একাধিকবার চেষ্টা করেও সফল হয়নি।
কিন্তু এবার ভিন্ন চিত্র। পর্যটনের পুরোনো জায়গাগুলোকে পুনর্জাগরণ করতে জিটিএ (গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। সেই বড় পরিকল্পনারই গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো রাগেরুং ট্রেক রুটের পুনরায় খোলা।
পর্যটকদের জন্য আদর্শ গন্তব্য
রঙ্গারুং হোমস্টে ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেরিং শেরপা জানান, বর্তমানে রাগেরুং-এ ২২টি হোমস্টে চলছে। ২০১১ সালে শুরুর পর থেকেই জায়গাটি শান্ত পরিবেশ, পাহাড়ি হাওয়া ও মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পর্যটকদের প্রিয় হয়ে ওঠে।
চৌরাস্তা থেকে রুংডুং হয়ে হেঁটে সহজেই পৌঁছানো যায় রঙ্গারুং-এ। পুরো পথটিই দার্জিলিংয়ের পরিচিত পাহাড়ি সৌন্দর্য, চা বাগান আর নীরবতার মেলবন্ধনে সাজানো।
একদা প্রশিক্ষণের পথ, আজ পর্যটনের রুট
এই পথটি একসময় দার্জিলিং হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের অন্যতম অংশ ছিল। আন্দোলনের পর তা বন্ধ হয়ে যায়। পরে ইনস্টিটিউটকে রুটটি পুনরায় চালুর অনুরোধ জানানো হলেও সে প্রচেষ্টা সফল হয়নি।
জিটিএ একসময় ঘোষণা করেছিল তেনজিং নোরগের জন্মবার্ষিকীতে রুট চালুর পরিকল্পনা। তা বাস্তবায়ন না হলেও এবার মেলো টি ফেস্টিভ্যাল ঘিরে সেগুলো পূরণ হচ্ছে।
পর্যটনে আসবে প্রাণ
রুটটি খুলে গেলে দার্জিলিংয়ের পর্যটন আরও গতিশীল হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। বিশেষ করে রাগেরুং এলাকার অর্থনীতি নতুন করে জেগে উঠবে বলে আশা হোমস্টে মালিক ও ব্যবসায়ীদের। প্রতিদিনের ভিড়ভাট্টা থেকে দূরে প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এই ট্রেক রুট দার্জিলিংয়ের ‘নতুন পুরোনো’ আকর্ষণ হয়ে উঠতে পারে।