Rain Tourism Darjeeling Hills North Bengal Darjeeling Gangtok: বর্ষায় ফুঁসছে গোটা দেশ। নদী-নালা-হিমবাহ গলে ধসে-বন্যায় বিপর্যস্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত। তার মধ্যেই চলছে রোজকার কাজকর্ম, পর্যটন। জানা গিয়েছে, ধসের ভয়, বিপর্যয়ের আশঙ্কা উড়িয়ে পাহাড়ে ভিড় করছেন পর্যটকরা। উদ্দেশ্য একটাই ঝুঁকি থাকলেও পাহাড়ের বর্ষা উপভোগ করতে চাইছেন সকলেই। কোনও রকমে ২-৩ দিন ছুটি ম্যানেজ করতে পারলেই কেল্লাফতে।
‘মনসুন টুরিজ়ম’ শব্দটি অবশ্য নতুন নয়। কয়েক বছর ধরেই তা ডানা মেলেছে পাহাড়ে। বিশেষ করে ভরা বর্ষায় কোনওমতে পাহাড়ের একটি হোটেলে উঠে পড়লেই হল। চাহিদা বেশি কটেজ ও রিসর্টের। বেশি ঘোরাঘুরির দরকার নেই। দূরে ভেসে আসা মেঘ আর বৃষ্টি দেখতে দেখতে বারান্দায় বসে চা-পকোড়া সহযোগের সুযোগ ছাড়তে চাইছেন না অনেকেই। মাঝে করোনাকালে কিছুটা থমকে গিয়েছিল। ফের গত মরশুম থেকে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। চলতি মরশুমে দারুণভাবে বাড়ছে মনসুন টুরিজম। আকর্ষণ। রাজ্য তো বটেই, ভিন্ রাজ্য এবং বাংলাদেশ থেকে পাহাড়ে বর্ষা উপভোগ করতে আসছেন পর্যটকেরা। খবর মিলেছে সবচেয়ে বেশি আসছেন দক্ষিণ ভারতের পর্যটকেরা। উৎসাহ বাড়াতে ভাল ছাড়াও মিলছে হোটেল, রিসর্টে। পাশাপাশি, কর্পোরেট মিটিং এবং নানা ইভেন্টও চলছে বর্ষার পাহাড়ে। ‘মনসুন টুরিজ়ম’ নিয়ে অনেকটাই আশান্বিত পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে হিমাচলপ্রদেশের ধস, বন্যার প্রভাব কিছুটা হলেও পড়েছে বর্ষার পর্যটনে।
সরকারি বিজ্ঞাপনেও পর্যটন দফতরের তরফে পাহাড়ের বৃষ্টির ছবি দিয়ে প্রচার শুরু হয়েছে। সেখানে বৃষ্টিভেজা দার্জিলিঙের চা বাগান এবং ধোঁয়া ওঠা দার্জিলিং চায়ের কাপশোভা পাচ্ছে। রাজ্য পর্যটন দফতরের তরফে জানা গিয়েছে মনসুন টুরিজ়ম গোটা দেশেই বেড়েছে। পাহাড়েও ধীরে ধীরে তা বাড়ছে। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট’ সংগঠনের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘মনসুন পর্যটন আবার পাহাড়ে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। বুকিংও বাড়ছে। বিপদ এড়িয়ে পৌঁছতে পারলে তো দার্জিলিং সহ এই রিজিয়নের পাহাড়ের সৌন্দর্য সব মরশুমের থেকে বেশি।’’
কালিম্পংয়ে হোটেল ও রিসর্টে ছাড় দিচ্ছেন। জানা গিয়েছে কলকাতা সহ অন্যান্য রাজ্য থেকেও বর্ষায় পর্যটকেরা পাহাড়ে আসছেন। অন্য মরসুমে ঘরভাডা, পরিবহণের খরচ বেশি থাকে। বর্ষায় তা কমে যায়। তাতেও পর্যটনের আকর্ষণ বাড়ছে। সেই সুযোগ নিতে মরিয়া পর্যটকরা।
তবে এ সবের মধ্যেই বর্ষার পাহাড় টানছে পর্যটকদের। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির মধ্যেও বেরিয়ে পড়ছেন পর্যটকেরা, ঘুরে বেড়াচ্ছেন পাহাড়ে। হিসাব বলছে, করোনার আগের দু’বছর বর্ষায় পাহাড়ে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ হোটেলের ঘরের বুকিং হয়েছিল। করোনা-পর্বে পর্যটন ধসে পড়েছিল। এ বার এখনও অবধি সেই সংখ্যা ২৫ শতাংশ পার করছে। এই পরিসংখ্যান আশা জাগাচ্ছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের।