scorecardresearch
 

Jungle Of Dooars: স্বর্গের মতো! ডুয়ার্সের জঙ্গল ঘোরার সেরা সময় মার্চ-এপ্রিল, কয়েকটি হদিশ রইল

Summer Destination Forests Of Doors: বর্ষার সময় জুন মাস থেকে তিন মাসের জন্য জঙ্গল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তার আগেই ঘুরতে হবে। আর গরমের সময় জীব-জন্তুরা বাইরে খোলা এলাকায় বেশি ঘোরে। ফলে তাদের দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। বিশেষ করে জলার ধারে বা নদীরে পারে জল খেতে আসার সময়টাই সেরা।

Advertisement
স্বর্গের মতো! ডুয়ার্সের জঙ্গল ঘোরার সেরা সময় মার্চ-এপ্রিল, কয়েকটি হদিশ রইল স্বর্গের মতো! ডুয়ার্সের জঙ্গল ঘোরার সেরা সময় মার্চ-এপ্রিল, কয়েকটি হদিশ রইল
হাইলাইটস
  • বর্ষার আগেই জঙ্গল ঘোরার সেরা সময়
  • ডুয়ার্সের সেরা ঠিকানাগুলি জেনে নিন
  • জুনের ১৫ তারিখ বন্ধ হয়ে যায় জঙ্গল

Summer Destination Forests Of Doors: জঙ্গল ঘোরার সেরা সময় গরম। আরও ভাল করে বলতে হলে বর্ষার আগে। বর্ষার সময় জুন মাস থেকে তিন মাসের জন্য জঙ্গল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তার আগেই ঘুরতে হবে। আর গরমের সময় জীব-জন্তুরা বাইরে খোলা এলাকায় বেশি ঘোরে। ফলে তাদের দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। বিশেষ করে জলার ধারে বা নদীরে পারে জল খেতে আসার সময়টাই সেরা। তাই এবার গরমে বুক করে ফেলুন ডুয়ার্সের গন্তব্য।

কীভাবে যাবেন?

আরও পড়ুন

শিলিগুড়িতে বাসে, ট্রেনে কিংবা বিমানে নেমে সরাসরি গাড়ি ভাড়া করে চলে যেতে পারেন। ট্রেনে অবশ্য কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসে শিয়ালদা থেকে উঠলে গরুমারা, লাটাগুড়ি যাওয়ার জন্য মালবাজার স্টেশনে, জলদাপাড়া যাওয়ার জন্য মাদারিহাট স্টেশনে নামতে পারেন। অনেকে আলিপুরদুয়ারে নেমে ডুয়ার্স ঘোরেন। আবার অনেকে উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসে কোচবিহারে নেমে চিলাপাতা ভ্রমণ করতে পারেন। তবে শিলিগুড়ি থেকে একবারে গাড়ি নিয়ে ভ্রমণ করা সবচেয়ে ভাল।

খরচ কেমন?

যাঁরা তরাই-ডুয়ার্সে ঘোরেন তাঁরা জানেন গাড়ি ভাড়ার তারতম্য ছাড়া থাকা-খাওয়া সব মোটামুটি মাঝারি খরচে হয়ে যায়।  পাহাড়ের চেয়ে জিনিসপত্র এখানে সহজলভ্য। তাই খরচ অনেকটা কম। জায়গা ভেদে ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে একদিন থাকা-খাওয়া হয়ে যায়। বাকিটা নিজেদের সুবিধামতো।

বক্সা জঙ্গল ও ফোর্ট

বক্সা পাহাড়কে ঘিরে বক্সা অরণ্য। বক্সায় যে দুর্গ ছিল এক সময়, অধুনা ধ্বংসস্তূপে পরিণত সেই দুর্গে এক সময় অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামী বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। বক্সা আগেও যেমন দুর্গম পথ ধরে যেতে হত, এখনও পথ প্রায় তেমনই দুর্গম। ঘন অরণ্যে ঢাকা দুই পাশ। মাঝখান দিয়ে চলে গিয়েছে বক্সা যাওয়ার রাস্তা। দিনের বেলাও গা ছমছমে ভাব। বক্সার ইতিহাস আর মিথকে গায়ে মেখে অরণ্যে ঘুরে বেড়ানোর মধ্যে একটা আদিম অথচ সজীব ভাব রয়েছে। জয়ন্তী ছাড়িয়ে গাড়ি সান্তালাবাড়ি। সেখান থেকে গাইড নিতে হয়। এখান প্রচুর থাকার জায়গা আছে। সেখানে ঢুকে তারপর গাইড এর সাথে ঘুরে বেড়ান জঙ্গলের ভিতর দিয়ে পাহাড়ের পথে। বক্সায় যেতে যেতে চা-কফি মোমোর প্রচুর ছোট দোকান রয়েছে। জিরিয়ে নেওয়া যায়। বক্সা দুর্গ সবচেয়ে আকর্ষণীয়। বক্সা দুর্গ প্রধানত তৈরি করেছিল ভুটানিরা। ডুয়ার্সে আক্রমণ চালানোর জন্য। ১৭৭৩ সালে এই দুর্গটি ব্রিটিশদের চোখে পড়ে এবং ১৮৬৫ সালে দ্বিতীয় ভুটান যুদ্ধের শেষে এই দুর্গ পাকাপাকিভাবে ইংরেজরা করায়ত্ব করে নেয়। দুর্গটি প্রথমে বাঁশের তৈরি ছিল। পরে ইংরেজরা পাথরের বানায়। এটিকে জেলখানা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। যা আন্দামানের সেলুলার জেলের থেকেও ভয়ঙ্কর বলে কথিত আছে।। বহু স্বাধীনতা সংগ্রামী এই দুর্গের ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত বন্দী অবস্থায় ছিল।

Advertisement
ডুয়ার্স

লেপচাখা 

বক্সা জঙ্গলের মধ্যেই কাছেই, খানিকটা উপরে লেপচাখাতে ঘুরে আসতে পারেন। নির্জন নিরিবিলিতে ভাল লাগবে। বেশ কয়েকটা হোমস্টে এখানে আছে। হাতে সময় থাকলে এখানে একটা দিন থাকতে পারেন। হঠাৎ হঠাৎ গ্রামখানি ঢাকা পড়ে যায় মেঘে। তখন আর কিছু দেখা যায় না।

ভুটানঘাট

তার ঠিক জয়ন্তী থেকে যাওয়া যায় ভুটানঘাট। হাতিপোতা হয়ে ভুটানঘাট এখনও পর্যটকদের ভিড়ে জমজমাট। সব সময়ই যাওয়া যায়। অদ্ভুত নিস্তব্ধতা বিরাজ করে গোটা এলাকায়। 

জয়ন্তী জঙ্গল

অনেকে জলপাইগুড়ি থেকে গাড়ি বুক করে সোজা চলে যান জয়ন্তীও। চেকপোস্ট থেকে কিছু দূরে গেলেই আপনারা দেখতে পাবেন রাস্তা দুই দিকে ভাগ হয়ে গিয়েছে। একদিকে চলে গিয়েছে বক্সা ফোর্ট। সান্তাল বাড়ি লেখা আর অন্যদিকে চলে গেছে জয়ন্তী। নানা ধরনের গাছ লতাগুল্ম বৃক্ষজাতীয় ও অর্কিডের রাজত্ব চোখে পড়বে এখানে এছাড়াও হাতি বাঘ ক্লাউডেড বুনো কুকুর ইত্যাদি চোখে পড়বে। বর্ষাকালে জয়ন্তী নদীর জল ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। কখনো কখনো এখানে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। এখানেও আপনারা পাবেন জঙ্গল সাফারি। তার সামনেই পুখুরি পাহাড়। ওখানের লেকে প্রচুর মাছ আর কচ্ছপ দেখতে পাবেন। হেঁটে উঠতে হবে মহাকাল মন্দিরে । প্রথমে পরে ছোট মহাকাল তারপরে বড় মহাকাল । উঠবার সময় পাহাড়ের গায়ে স্থায়ী এবং অস্থায়ী সিঁড়ি করা আছে। গুহার মধ্যে মহাকাল মূর্তি দর্শন করে নীচে নেমে আসুন। 

জঙ্গল

নেওড়া ভ্যালি জাতীয় উদ্যান

কালিম্পং জেলায় এই জাতীয় উদ্যানটি। এই বনাঞ্চল জাতীয় উদ্যানের শিরোপা পায় ১৯৮৬ সালে। ৮৮ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে এই অরণ্য ছড়িয়ে আছে। জীববৈচিত্র্যের দিক থেকে উত্তরপূর্ব ভারতের সব চেয়ে সমৃদ্ধ অরণ্যভূমি এই নেওড়া ভ্যালি। এখানকার আকর্ষণ বিরল রেড পাণ্ডা। এই বনাঞ্চলের অনেকটাই আজও দুর্গম। সেই দুর্গমতার জন্যই প্রাণী এবং উদ্ভিদগুলি নিরাপদে রয়েছে। নেওড়া ভ্যালির বহু জায়গায় দিনের বেলাতেও বহু জায়গায় সূর্যের আলো পৌঁছয় না। জঙ্গল পথে হাঁটা ছাড়া উপায় নেই। সাধারণ টুরিস্ট কম আসেন দুর্গমতার কারণে। তাই ভবঘুরে পর্যটক, প্রকৃতিপ্রেমী, ট্রেকারদের স্বর্গরাজ্য এটি। নেওড়া ভ্যালির বনপথে ট্রেকিং এক অনন্য অভিজ্ঞতা। লাভা এবং লোলেগাঁও কিংবা রিশপ থেকে হাঁটা শুরু করতে পারেন। পবচেয়ে গভীর এবং সুন্দর অরণ্য এটি। যাঁরা আমাজনের জঙ্গলে গিয়েছেন, তাঁরা কিছুটা ফ্লেভার পেতে পারেন এখানে।

গরুমারা জাতীয় উদ্যান

১৮৯৫ সালে সংরক্ষিত অরণ্য হিসেবে যাত্রা শুরু করে এই অরণ্যভূমি। ভারতের নিজস্ব একশৃঙ্গ গন্ডারের বংশবৃদ্ধির জন্য অভয়ারণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায় ১৯৪৯ সালে। ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি পরিপূর্ণ জাতীয় উদ্যানে পরিণত হয়। ৭ বর্গকিলোমিটার এলাকা থেকে বেড়ে হয় ৮০ বর্গকিলোমিটার। দেশের অন্যান্য জাতীয় উদ্যানের তুলনায় আকারে মোটেই কম নয়। মাঝারি আকৃতির হলেও গরুমারা জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ। কত রকম অজানা প্রাণী এবং উদ্ভিদের দেখা মেলে। প্রায় ৫০ রকম প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৯০-র বেশি প্রজাতির পাখি, ২০-র বেশি প্রজাতির সরীসৃপ, ৭ ধরনের কচ্ছপ, ২৫ রকমেরও বেশি প্রজাতির মাছ এবং আরও নানা জন্তু-জানোয়ার। কখনও কখনও বাঘ অর্থাৎ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারও চলে আসে। নানা বিরল প্রজাতির জীবজন্তু গরুমারাকে করে তুলেছে অনন্য। লুপ্তপ্রায় হয়ে আসা পিগমি হগ এবং হিসপিড খরগোশ এখানে থাকে। কত বিচিত্র পাখি, যেমন সিঁদুরে সহেলি, মৌটুসি, শাহ বুলবুল, কেশরাজ, ভারতীয় ধনেশ, কাঠঠোকরা, মথুরা। চখাচখি পাখির উড়ে যাওয়ার পথে গরুমারা পরে। আরও প্রচুর পরিযায়ী পাখি আসে এই জাতীয় উদ্যানে। এখানেও জিপ সাফারি করে ওয়াচ টাওয়ার থেকে বন্যপ্রাণ দেখার সুযোগ রয়েছে।

Advertisement

পাতলাখাওয়া অভয়ারণ্য

পাতলাখাওয়া জঙ্গলটি জলদাপাড়া অভয়ারণ্যের বিস্তৃত একটা অংশ। এক কালে এখানেও গন্ডারের দেখা মিলত। কোচবিহারের রাজা মহারাজারা এক সময় পাতলাখাওয়া রসমতি বনাঞ্চলে শিকারেও যেতেন। তার পর ধীরে ধীরে এখান থেকেও গন্ডাররা জলদাপাড়ার দিকে চলে যায়। জলদাপাড়ার চাপ কমাতে পাতলাখাওয়ার রসমতী বনাঞ্চলকে গন্ডার আবাসস্থল করা হচ্ছে বনদফতরের তরফে। পাতলাখাওয়া জঙ্গলের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়েছে তোর্সা নদী। নদীর পার দিয়ে গন্ডারেরদের প্রিয় খাবার চাড্ডা, পুরুন্ডি, চেপটি ও মালসা ঘাস লাগানো হয়েছে। গন্ডারের ওপরে নজর রাখতে বসানো হয়েছে নজরমিনারও। তবে শুধু গন্ডারই নয়, এই জঙ্গলে আগে থেকেই হরিণ, গাউর এবং চিতাবাঘ রয়েছে।
 

 

Advertisement