দার্জিলিং যাওয়ার মূল রাস্তা বন্ধ ২ মাস, বিপাকে পাহাড়ের পর্যটনSiliguri Darjeeling Tourism Crisis: ভরা পর্যটন মরশুমেও এবারে দার্জিলিং পাহাড়ে ভিড় নেই আগের মতো। সেজন্য অনেকটাই দায়ী শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রুট রোহিণী রোড। গত দু’মাস ধরে এই রাস্তায় যাতায়াত বন্ধ। বিকল্প রুট দীর্ঘ হওয়ায় বাড়ছে যাত্রীভাড়া, সময়ও লাগছে দ্বিগুণ। ফলে বহু পর্যটকই দার্জিলিং সফর বাতিল করছেন। পাহাড়ের হোটেল, রেস্তোরাঁ, ট্যাক্সি ব্যবসা আপাতত বিপাকে।
রোহিণী রোড বন্ধের সবচেয়ে বড় ধাক্কা এসেছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ওপর। রাস্তার ধারে থাকা ছোট চায়ের দোকান, রেস্তোরাঁ, হোমস্টে, বড়-ছোট হোটেল, সব জায়গায়ই অর্ধেকেরও কম রোজগার। সাধারণত শীতের আগে-পরে যে মরশুমে পর্যটকের ঢল নামে, সেই সময়েও ব্যবসা প্রায় ভাটা। এক ক্যাফে মালিকের কথায়,
“দু’মাস ধরে বসে আছি। বলছে আরও এক মাস লাগবে। এই মরশুমটাই শেষ হয়ে গেল।”
প্রশাসন জানিয়েছে, ধারাবাহিক ভূমিধস আর রাস্তায় মারাত্মক ক্ষতির কারণে বাধ্য হয়েই এই রুট বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু পাহাড়ি আবহাওয়ার কারণে মেরামতির কাজ এগোচ্ছে ধীর গতিতে। স্থানীয়দের দাবি, অন্তত বিকল্পভাবে সীমিত যান চলাচলের অনুমতি দেওয়া যেত। দীর্ঘদিনের অচলাবস্থায় ক্ষোভ বাড়ছে বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
ট্যাক্সিচালক ও পর্যটন পরিবহণে যুক্তরা পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে। শিলিগুড়ি-দার্জিলিং রুটের যাত্রীরা একসময় রোহিণী রোডই বেছে নিতেন দ্রুত পৌঁছনোর জন্য। এখন লং রুটে যেতে হচ্ছে। ফলে খরচ বাড়ছে, কিন্তু যাত্রী কমে যাচ্ছে। ট্যাক্সিচালকদের আক্ষেপ, “আগে দিনে চারটে ট্রিপ হত। এখন একটা ট্রিপ করাই মুশকিল। পেট চলবে কী করে?” অনেকে বিকল্প রুট ধরেও লাভের মুখ দেখতে পারছেন না। দীর্ঘ পথ, বেশি জ্বালানি, কম যাত্রী, সব মিলিয়ে ট্যাক্সিচালকদের অবস্থা শোচনীয়।
সব মিলিয়ে পাহাড়ের অর্থনীতিতে রোহিণী রোডের বন্ধ থাকা বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামনে ডিসেম্বর-জানুয়ারির দার্জিলিংয়ের পিক সিজন। তার আগেই যদি রাস্তাটি খুলে না যায়, পর্যটন শিল্পে ক্ষতির পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে বাড়বে বলেই মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। স্থানীয়দের একটাই দাবি, দ্রুত রোহিণী রোড খুলুন, না হলে পাহাড়ের অর্থনীতি আরও বড় সংকটে পড়বে।