পাহাড়ের কোলে ইছেগাঁও।Kalimpong Special Tour January: পর্যটনের সুবাদে উত্তরবঙ্গ এমনিতেই পর্যটকদের কাছে ভীষণ জনপ্রিয়। এবার সেই জনপ্রিয়তাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস ট্যুরিজমে বিশেষ জোর দিচ্ছে গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)। সেই লক্ষ্যেই পর্যটন মরশুমে জিটিএ-র সহযোগিতায় আয়োজন করা হচ্ছে ইয়েলবং অ্যাডভেঞ্চার ফেস্টিভাল।
কালিম্পং জেলার ইয়েলবং গ্রামে আগামী ৯ থেকে ১১ জানুয়ারি তিন দিনের এই উৎসব বসতে চলেছে। বিগত দু’বছরে ব্যাপক সাফল্যের পর চলতি বছর আরও বড় আকারে এই উৎসব আয়োজন করা হয়েছে। কালিম্পং জেলা প্রশাসনের তরফেও ইতিমধ্যেই উৎসবের প্রচার শুরু হয়েছে।
জিটিএ-র পর্যটন বিভাগের ফিল্ড ডিরেক্টর দাওয়া গ্যালপো শেরপা জানান, পর্যটকদের মধ্যে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের প্রতি আগ্রহ ক্রমেই বাড়ছে। ইয়েলবং গ্রামে বিভিন্ন ধরনের অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগ রয়েছে। সেগুলিকেই পর্যটকদের সামনে তুলে ধরতেই এই উৎসবের আয়োজন। ইয়েলবং গ্রামের অ্যাডভেঞ্চার অ্যাক্টিভিস্ট ফ্যান্সিস রাই বলেন, আগের বছরগুলির তুলনায় চলতি বছরে পর্যটকরা আরও বেশি অ্যাডভেঞ্চার কার্যকলাপে অংশ নিতে পারবেন।
প্রতি বছর শীতের মরশুমে দেশ-বিদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক পর্যটক উত্তরবঙ্গে আসেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের প্রতি বিশেষ আকৃষ্ট। সেই কথা মাথায় রেখেই প্যারাগ্লাইডিং, কায়াকিং, স্নোরকেলিংয়ের মতো বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চার কার্যকলাপ চালুর দিকে নজর দিয়েছে জিটিএ। চলতি বছরে পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায় প্যারাগ্লাইডিংও চালু হয়েছে।
নেওড়াভ্যালি জাতীয় উদ্যানের কাছেই অবস্থিত ইয়েলবং গ্রাম এখন অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমের নতুন গন্তব্য হিসেবে উঠে আসছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি অ্যাডভেঞ্চারে ভরপুর এই গ্রামে রয়েছে ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে রিভার ক্যানিয়ন ট্রেকের সুযোগ। উত্তরবঙ্গের একমাত্র এই রিভার ক্যানিয়ন ইতিমধ্যেই দেশ-বিদেশের পর্যটকদের নজর কেড়েছে।
এছাড়াও ইয়েলবংয়ে রয়েছে জিপলাইনিং, র্যাপেলিং, রেইনবো জলপ্রপাত দর্শন, ফরেস্ট হাইকিং ও নদীর ধারে ক্যাম্পিংয়ের মতো নানা অভিজ্ঞতা। ছোট্ট একটি গ্রামে এত ধরনের সুযোগ একসঙ্গে থাকায় জায়গাটিকে পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতেই জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের পাশাপাশি পর্যটকদের জন্য পাখি ও প্রজাপতি দেখার ব্যবস্থাও থাকছে। তৃতীয় বছরে পা রাখা এই উৎসবের মাধ্যমে ইয়েলবংয়ের অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমের প্রচারের পাশাপাশি স্থানীয় লেপচা ও নেপালি সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যবাহী খাবারের সঙ্গেও পর্যটকদের পরিচিত করানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এই উৎসবের মাধ্যমে পর্যটকের সংখ্যা বাড়লে এলাকার অর্থনৈতিক অবস্থারও উন্নতি হবে বলে জেলা প্রশাসনের আশা। পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে প্রতিটি অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের জন্য প্রশিক্ষিত গাইড নিয়োগ করা হবে বলেও উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়েছে।