scorecardresearch
 

Ram Mandir : 'অযোধ্যা থেকে ফিরতেই CPI(M)-এর লোকজন মারধর শুরু করল, চ্যাংদোলা করে নিয়ে গেল পার্টি অফিসে'

১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর। সেদিন পশ্চিমবঙ্গ থেকে হাজার হাজার করসেবক গিয়েছিলেন অযোধ্যায়। তাঁদের উদ্দেশ্যও পূরণ হয়। কিন্তু তারপরের ঘটনা অনেকের জানা নেই। করসেবকদের প্রাণ হাতে করে বাড়ি ফিরতে হয়। লিখছেন বিজেপি নেতা দুধকুমার মণ্ডল। আজ প্রথম পর্ব।

Advertisement
Ayodhya Ayodhya
হাইলাইটস
  • ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর রাজ্য থেকে কারা গিয়েছিলেন অযোধ্যায়
  • সেদিনের অভিজ্ঞতা কেমন ?

অযোধ্যা তো ছাড়লাম, কিন্তু তারপর যে আমাদের ভাগ্যে খারাপ কিছু অপেক্ষা করছিল সেটা তখনও বুঝিনি। টের পেলাম তখন যখন অযোধ্যা ছাড়লাম। রাস্তায় দেখলাম হাজার হাজার পুলিশ, কেন্দ্রীয় বাহিনী। অনেকের ব্যাগ চেক করা হচ্ছে, কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ। আমাদের কাছে খবর এল বারাণসী যেতে হবে। সেখানে ভারত সেবাশ্রম সংঘে রাতটুকু কাটিয়ে পরদিন ভোরে ট্রেনে করে রওনা দিতে হবে যার যা গন্তব্যে। সেই মোতাবেক ভারত সেবাশ্রমের কাছে গেলাম। কিন্তু পৌঁছে দেখলাম অবস্থা ভালো নয়। এলাকায় যেন ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। পুলিশে ছয়লাপ। সেবাশ্রম সংঘে তিল ধারণের জায়গা নেই। রাস্তায় উল্টো দিকে অন্য ধর্মের মানুষ তখন দাঁড়িয়ে। তাঁরা শ্লোগান দিচ্ছেন। তারইমধ্যে খবর এল, দেশের নানা রাজ্যে ব্যাপক পুলিশি ধরপাকড় শুরু হয়েছে। কর সেবকদের উপর অত্যাচার শুরু হয়েছে। 

অবস্থা বুঝে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, যেমন করেই হোক ট্রেন ধরেই রাতে রওনা দিতে হবে। সেই মতো স্টেশনে গেলাম। কিন্তু সেখানেও হাজার হাজার করসেবকদের ভিড়। এমন এমন খারাপ খবর এসে পৌঁছাচ্ছিল যে, কোনও রকমে ট্রেনে উঠতে পারলেই যেন হয়। করসেবকরা তখন যে যা ট্রেনে উঠছেন, উঠে পড়ছেন। আমরাও তাই করলাম। ঠিক ছিল আসানসোল, বর্ধমান বা হাওড়া পৌঁছব। সেই মতো ট্রেন ধরলাম। ট্রেনে উঠেও শান্তি নেই। স্টেশনে স্টেশনে পুলিশ উঠছে কামরায়। আমরা করসেবক ছিলাম। অনেকের মাথায় গেরুয়া ফেট্টি, গলায় রুদ্রাক্ষের মালা ছিল। পুলিশ তাদের বেছে বেছে ধরছিল। আর জিজ্ঞাসাবাদ করছিল। পুলিশের মতিগতি আমাদের একদম ভালো লাগছিল না। সেজন্য আমাদের মধ্যে কেউ কেউ নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করেননি। এভাবে কোনওরকমে আমরা রাজ্যে ঢুকলাম। 

আসোনসোল, বর্ধমান স্টেশনে অনেকেই নেমে গেল। তবে রাজ্যে ট্রেন ঢোকার পরই বুঝলাম অবস্থা ভালো নয়। স্টেশনের বাইরে সিপিএম-সহ অন্য বামপন্থী দলগুলোর ক্যাডাররা দাঁড়িয়েছিল। তারা মারধর করছিল করসেবকদের। সে কী অত্যাচার! আমাদের অনেকে অন্ডালে নামল, অনেকে বর্ধমানে। সেই প্রথম আমরা বিচ্ছিন্ন হলাম। যারাই স্টেশনে নামছিল তাদের জিজ্ঞাসা করা হচ্ছিল, কোথায় গেছিলাম, কেন গেছিলাম, কোথা থেকে আসছি ইত্যাদি। সন্তোষজনক উত্তর না পেলেই মারধর করা হচ্ছিল। দেখেশুনে মনে তখন একটাই প্রশ্ন, আমরা কি আদৌ বাড়ি পৌঁছতে পারব? 
কিন্তু তখনই টের পেলাম স্টেশনে নামা আমাদের লোকজনকে মারধর করছে সিপিআইএম-এর লোকজন। লাল ক্যাডাররা ট্রেনেও উঠে পড়ছিল। আমাদের কয়েকজন তখন চা খেতে নেমেছে স্টেশনে। অনেকক্ষণ হয়ে যাওয়ার পর দেখলাম ওরা ফিরছে না। তখন আমিও নামলাম। 

আরও পড়ুন

Advertisement

আমাকে দেখেই সিপিআইএম-এর লোকজন ঝাঁপিয়ে পড়ল। ওই স্টেশনেই পুলিশের সামনে আমাকে ব্যাপক মারধর। জনা দশ পনের লোক আমাকে একদম চ্যাংদোলা করে নিয়ে চলে গেল। বুঝতে পারলাম প্রাণে মেরে ফেলতে পারে। তবে তখন তো আমার কিছু করার নেই। অতজনের সঙ্গে আমি একা পারব কীভাবে ? 

(লেখক দুধকুমার মণ্ডল। এই বক্তব্য একান্তই তাঁর। bangla.aajtak.in-এর দায়িত্ব নেবে না।)

 

Advertisement