গদি টলমল মহ ইউনূসের, কিন্তু বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান আর কতদিন এই ভাবে দড়ির উপর দিয়ে হেঁটে ভানুমতীর খেল দেখাতে পারবেন? বাংলাদেশের সেনাবাহিনী কতদিন সমন্বয়ক বা তথাকথিত উপদেষ্টাদের যাবতীয় বেয়াদপিকে সহ্য করবে? ইউনুস ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে মরিয়া বলেই নির্বাচন ২০২৫-এ করতেই চান না, আর মসনদে আসতে মরিয়া বিএনপি ভোট নিয়ে চাপ দিয়েই চলেছে। ৩২ নম্বর ধানমন্ডি গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরেও বিভিন্ন বিশেষ দিনে মুজিবের নামে জয়ধ্বনি দেওয়া বা জয় বাংলা স্লোগান দেওয়া বন্ধ করা যায়নি। তাহলে বাংলাদেশ কোন পথে?
প্রতিবেশী দেশ সম্পূর্ণ ভাবে মৌলবাদীদের নিয়ন্ত্রণে
বাংলাদেশ নিয়ে যেটুকু চর্চা করেছি এবং সনজিদা খাতুনের মতো সর্বজনশ্রদ্ধেয় শিল্পীর মৃত্যুর পরও যে রকম সোশ্যাল ট্রোলিং দেখলাম, তাতে এইটা পরিষ্কার যে আমাদের প্রতিবেশী দেশ সম্পূর্ণ ভাবে মৌলবাদীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছে। এবং মৌলবাদীদের দাপটে যতটা অসহায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা, ততটাই মহিলারা। তা না হলে ধর্ষণের প্রতিবাদে, মহিলাদের সুরক্ষার দাবি নিয়ে ঢাকার রাস্তায় ওই রকম তুমুল বিক্ষোভ হয়? আর মহিলাদের ক্ষোভের সামাল দিতে ব্যর্থ ইউনুস শেষ পর্যন্ত নিজের বাসভবনের সামনে যে কোনও ধরনের সমাবেশকেই নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন।
ইউনূস ইসলামি খিলাফত কায়েম করার দিকে বাংলাদেশকে ঠেলে দিয়েছেন
মূল প্রশ্নটায় তাহলে আবার ফেরা যাক, বাংলাদেশ কোন পথে? এটা পরিষ্কার যে গত বছরের ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে যে অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে, তা চূডান্ত ব্যর্থ। ইউনূসের নেতৃত্বাধীন তথাকথিত সমন্বয়কদের সরকার না পেরেছে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে, না গণতন্ত্রের দেখা মিলেছে। আওয়ামি লিগের বিরুদ্ধে যদি একনায়কতন্ত্র কায়েম করার অভিযোগ থাকে, তাহলে ইউনূস ইসলামি খিলাফত কায়েম করার দিকে বাংলাদেশকে ঠেলে দিয়েছেন, যে শাসনে সংখ্যালঘু বা মহিলাদেরও কোনও স্থান নেই। যদি আমার ইসলামি খিলাফত শাসনের প্রচেষ্টা মন্তব্যকে অতিশয়োক্তি বলে মনে হয়, তাহলে ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় হিজবুর তাহরিকের মতো নিষিদ্ধ সংগঠনের পোস্টারে ছেয়ে যাওয়া বা আইএসের পতাকা নিয়ে মিছিলকে মনে করিয়ে দেব।
বাংলাদেশে কি সেনাবাহিনী ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ হাতে নেবে?
আমাদের প্রতিবেশী দেশ সিরিয়া হয়ে যাবে কী না, রবীন্দ্রসঙ্গীত-জামদানি-ইলিশের অনুষঙ্গে খ্যাত ঢাকা কালাশনিকভ আর আরডিএক্স এর জন্য পরিচিতি পেতে শুরু করবে কি না, এই সব উত্তপ্ত তর্কবিতর্কের মধ্যে ২টি সম্ভাবনা নিয়ে জোর জল্পনা চলছে। এক নম্বর, ডোনাল্ড ট্রাম্প কীভাবে তাঁর রাজনৈতিক শত্রু হিলারি ক্নিন্টনের বসিয়ে দিয়ে যাওয়া ইউনূসকে উৎখাৎ করবেন? ২ নম্বর জল্পনা, ইউনুসকে সরিয়ে বাংলাদেশে কি সেনাবাহিনী ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ হাতে নেবে? সেনাশাসন প্রতিষ্ঠিত হলে কি বাংলাদেশ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে এবং সেই নির্বাচনে কি বিএনপি ক্ষমতায় আসবে? এক দিক থেকে দেখতে গেলে এই দুটি জল্পনা আবার পরষ্পরের সঙ্গে সম্পর্কিত ও সম্পৃক্ত। ট্রাম্প বা তার প্রশাসনের চাপে, যার প্রথম ইঙ্গিত তুলসী গবার্ডের মন্তব্যে পাওয়া গিয়েছে, যদি ইউনূস এবং তাঁর সমন্বয়ক সাঙ্গপাঙ্গরা ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন, তাহলে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ কাদের হাতে যাবে? অবশ্যই সেনাবাহিনীর। বাংলাদেশে সেনাবাহিনীই এখন একমাত্র পারে আইনের শাসন ফেরাতে, গণতান্ত্রিক উপায়ে ভোট করিয়ে নির্বাচিত সরকারকে ঢাকায় ক্ষমতায় বসাতে।
শেখ হাসিনারও শেষ সফর ছিল চিনই
তাহলে আমরা ঘুরেফিরে সেই প্রশ্নটাতেই ফিরলাম, বাংলাদেশে সেনাবাহিনী কী করবে? সবাই এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে। বাংলাদেশের মানুষ, আন্তর্জাতিক মহল, সবাই। একই সঙ্গে আর একটি কাকতালীয় যোগাযোগের কথা মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের কোনও রাষ্ট্রপ্রধানই চিন সফরের পরে বেশিদিন ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেননি। ১৯৮১-তে জিয়া উর রহমান এপ্রিলে চিন সফর সেরে ফিরে আসার পরেই সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন। এরশাদও চিন সফর সেরে ফেরার পরই বিরোধীদের আন্দোলনের ফলে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। শেখ হাসিনারও শেষ সফর ছিল চিনই। নোবেল বিজয়ী থেকে সরকারের প্রধান হয়ে যাওয়া ইউনূসও এখন চিন সফরেই!
বাংলাদেশে কোন মোড় আসতে পারে, তা আসলেই কেউ জানে না!
বিঃ দ্রঃ- এই প্রতিবেদনটি লেখকের সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত মত। bangla.aajtak.in এর দায় নিচ্ছে না।