Abhishek Banerjee: ''হাইকোর্টের বিচারপতি স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিচ্ছে না। পুলিশের হাত বেঁধে দিয়েছে। তাহলে পুলিশ কীভাবে কাজ করবে? '' সাংবাদিক সম্মেলন করে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থাকে আক্রমণ করেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, "এমন জাজমেন্ট দিচ্ছে, শুভেন্দু অধিকারীকে সেফগার্ড দিচ্ছে হাইকোর্ট। বিজেপির গুণ্ডাবাহিনীকে প্রোটেকশন দিয়ে রেখেছে।" এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। রাজ্য সরকারকে ব্যবস্থা নিতে দিচ্ছে না। অভিষেকের অভিযোগ, "বাকি বিচারপতিরা নিরপেক্ষ কাজ করছে। একজন বিচারপতির কারণে পুরো বিচারব্যবস্থা নষ্ট হচ্ছে। তিনি দিল্লির অর্ডারে কাজ করছেন। বিচারব্যবস্থা নিরপেক্ষভাবে কাজ করা উচিত। দোষী যেন জেলে যায়।" হাইকোর্টের বিচারপতির কী বাধ্যবাধকতা রয়েছে তাও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
তাঁর দাবি, "এত কুৎসা, ষড়যন্ত্রের তারপরও তৃণমূলের ভোট ৪৮ থেকে ৫২ হয়েছে। বিজেপির ৩৮ থেকে ২২ হয়েছে। জনতার আদালতে লড়াই করছি। নির্বাচনের দিন আপনারা ৬০-৬২ টি বুথের ঘটনা দেখিয়া কলুষিত করার চেষ্টা করেছে। কোচবিহার-জলপাইঘুড়ি-আলিপুরদুয়ার-দক্ষিণ দিনাজপুর-পুরুলিয়া-বাঁকুড়ায় কোনও ঝামেলা দেখাতে পারবেন না। ৬০ হাজার বুথে শান্তিপূর্ণে। ০১ শতাংশ বুথে গোলমাল হয়েছে। মৃত্যুগুলো হয়েছে বেদনায়দায়ক, দুর্ভাগ্যজনক।" এরপরই তাঁর দাবি বেশিরভাগ মারা গিয়েছেন তৃণমূলকর্মীরাই। তাঁর দাবি, "৩১ জন তৃণমূলকর্মীকে হারিয়েছি। ৭০ শতাংশ তৃণমূলের কর্মী। তৃণমূল সন্ত্রাস করতে যাব কেন? যেখানে সন্ত্রাস হয়নি সেখানে বিজেপি জেতেনি। শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে যেখানে, সেখানে ৯০ শতাংশ ভোটে জিতেছে। মানুষের মত নিয়ে প্রার্থীদের দাঁড় করিয়েছি। ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে প্রার্থী করা হয়েছে। মানুষ আমাদের তাঁর প্রতিদান দিয়েছে।
আক্রমণ শুভেন্দু ও বিজেপিকেও
তাঁর প্রেস কনফারেন্সের অনেকটা অংশ জুড়ে তিনি এদিন রাজ্য় বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করেন। তিনি শুভেন্দুকে আক্রমণ করে বলেন, "তাঁর গাড়িতে নিরীহ লোকেরা মারা যাচ্ছে। তাঁর মানবতা নেই, তিনি নেমে দেখেন না পর্যন্ত। রাজ্য কোনও ব্যবস্থা নিতে পারছে না কারণ হাইকোর্ট রক্ষা কবচ দিয়ে রেখেছে। তাঁর প্রশ্ন আমি গেলে রক্ষাকবচ দেবে? আমার শ্য়ালিকাকে দেয়নি। বিজেপি নেতাদের দিচ্ছে।
সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে ক্ষোভ
"সংবাদমাধ্যমে সঠিকভাবে চিত্র তুলে ধরা হয়নি। বাংলার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য সন্ত্রাস হয়েছে। আপনারা সঠিকভাবে উপস্থাপিত করছেন না। কারা অশান্তি করছে তা দেখান।" দাবি অভিষেকের। ১০০ দিনের টাকা বন্ধ, ধারাবাহিক লাঞ্ছনা, বঞ্চনা রয়েছে। এরপরই তিনি বলেন, তৃণমূল-বিজেপির ব্যবধান বাড়বে। তিনি বলেন, যাঁরা বড় ভাষণ দেয়, নিজেদের জেলায় কী হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর বিজেপির শক্তিশালী ঘাঁটি বলে শুনেছি। সেখানে হেরেছে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের এলাকা বালুরঘাটেতেও দল হেরেছে বলে জানান তিনি। ১০ থেকে ১৯ পার্সেন্টের ব্যবধান হয়েছে। যাঁরা তৃণমূল ভয় পাচ্ছে বলে ভয় দেখায়, দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার নিজেদের এলাকায় হেরে গিয়েছে। শান্তনু ঠাকুর আটকে দিয়েছিল। এবার নিজের বুথে হেরেছেন। বিজেপির এসব নেতারা তৃণমূলের লক্ষ্মী। রাজ্যপাল এত রিপোর্ঠ পাঠান, বিজেপির বিরুদ্ধে বলবে না। বিজেপিকে প্রোটেকশন দেবে।
এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের নেতৃত্ব কোচবিহারের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম ঘুরে দেখেন। তাঁরা এমন অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন। তাঁর প্রেক্ষিতে অভিষেক বলেন, "বাংলায় সংবাদমাধ্যম মমতার বাপ বাপান্ত করছে, তারপরও ঘুরে বেড়াচ্ছে। মধ্যপ্রদেশে পারবেন? রবিশ্ঙ্কর প্রসাদ ঘুরে বেড়াচ্ছেন, এটাই প্রমাণ করে গণতন্ত্র আছে।"