করোনার কোপে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে গ্রামীন শিল্পদের হাতের তৈরি শিল্পীসত্তা। গত দু'বছর ধরে কাজ না থাকায় পেটের দায়ে পেশা বদল করেছে অধিকাংশ শিল্পীরা।
তবে বছর দুর্গাপূজায় এখনো বিগ বাজেটের পুজো না হওয়ায় অনিশ্চয়তায় রয়েছে ডেকোরেটরস ব্যবসায়ীরা ও শিল্পীরা।
বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা । পশ্চিমবঙ্গের দুর্গা পূজাকে ঘিরে প্রতিবছরই উৎসবের মেজাজ থাকে রাজ্যের সর্বত্রই। দুর্গা পূজাকে ঘিরে গোটা রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতে পুজো উদ্যোক্তারা বিশাল আয়োজন করে থাকে।
মূলত বিগ বাজেটের পুজো গুলিতে নজরকাড়া আকর্ষণ থাকে মণ্ডপসজ্জা এবং প্রতিমা। তবে দর্শকদের চোখ ধাঁধানো এই মণ্ডপসজ্জা ও প্রতিমা সজ্জার নেপথ্যে থাকে গ্রাম বাংলার শিল্পীদের হাতের তৈরি শিল্পীসত্তা ও তাদের পরিশ্রম ।
প্রতিবছরই পুজোর সময় বিগ বাজেটের পূজামণ্ডপগুলোতে মন্ডপতৈরির জন্য ভিন জেলার শিল্পীরা কাজ করতে আসে। কিন্তু করোনার কারনে গত দুই বছর ধরে পুজো উদ্যোগতাদের পুজোর বাজেটে কাটছাট হওয়ায় আজ কাজ হারাতে বসেছে গ্রাম বাংলার শিল্পীরা।
শুধু তাই নয় আগের তুলনায় দুর্গা পুজোর আয়জন ছোটো হয়ে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে ডেকোরেটর্স ব্যবসায়ীরা। জানা গিয়েছে প্রতি বছর, দুর্গাপুজার মণ্ডপ তৈরি করতে উত্তরবঙ্গে দূর দুরন্ত থেকে আসে শিল্পীরা।
বিশেষত মেদিনীপুর, কৃষ্ণনগর, নদীয়া বিভিন্ন জায়গা থেকে শিল্পরা এসে তাদের হাতের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলে মণ্ডপ সজ্জার মাধ্যমে। কিন্তু এবছর সেই শিল্পীর সংখ্যা রয়েছে হাতে গোনা।
মূলত ডেকোরেটার্স রা সারা বছরই কাজ না পাওয়ায় সে সমস্ত শিল্পীদের তারা কাজে রাখতে পারেনি । তাই পেটের টানে অনেক শিল্পী আজ পেশা পরিবর্তন করে ফেলেছে। তবে এইভাবে চলতে থাকলে আগামী দিনে হারিয়ে যেতে পারে গ্রাম বাংলার এই শিল্পকলা।
ডেকোরেটার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ নর্থবেঙ্গলের সাধারণ সম্পাদক গোপাল সরকার বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সব কিছুর ওপর ছাড় দেওয়া হলেও, এই ব্যবসায় এখনো সেভাবে ছাড় মেলে নি।
সরকার যে টাকা ক্লাব গুলোকে দিচ্ছে পুঁজো করার জন্য তার মধ্যে কিছুটা টাকা ডেকোরেটরের সাথে যুক্ত শিল্পী সহ ব্যবসায়ীদের দেওয়া হলে এই শিল্পকে বাঁচানো যেতো। সরকারের উচিত অবিলম্বে শিল্পীও ডেকোরেটর দিকে নজর দেওয়া।
ডেকোরেটার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ নর্থ বেঙ্গল এর সাধারণ সদস্য টিংকু দত্ত বলেন, করোনার কারণে বর্তমানে শিল্পীদের যা অবস্থা তাতে আগামী দিনে গ্রাম বাংলার এই শিল্পকলা আজ ধ্বংসের মুখে।