দশমীর গোধূলি লগ্নে সম্প্রীতির ছবি ধরা পরল মরা মহানন্দার ঘাটে। দেবী দুর্গার বিদায় বেলায় লণ্ঠনের আলো দেখিয়ে বিদায় জানালো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা।
সম্প্রীতির এমন নিদর্শনের ছবি ধরা পরলো মালদহের চাঁচলের পাহাড়পুরের মরা মহানন্দার ঘাটে। তবে এবার অবশ্য প্রথম, তা নয়।
প্রায় সাড়ে তিনশ বছরের পুরনো রীতি মেনে আজও দেবী দুর্গার বিদায়বেলায় লণ্ঠনের আলো দেখিয়ে তাকে বিদায় জানান সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ।
সম্প্রীতির এই দুর্লভ ছবি দেখতে পাওয়া যায় মালদহের চাঁচলের মরা মহানন্দা নদীর তীরে। চাঁচলের রাজা রাম চন্দ্র রায় বাহাদুর আজ থেকে প্রায় ৩৫০ বছর আগে এই পুজোর শুভ আরম্ভ করেছিলেন।
রাজবাড়ির পূজো নামে পরিচিত চাঁচল এই ৩৫০ বছরের পুরনো পুজো। বর্তমানে রাজা নেই, নেই তার রাজ বৈভব। কিন্তু রয়ে গিয়েছে রাজ আমলের প্রবর্তিত রীতি।
আর সেই রীতি মেনেই দশমীর দিন গোধূলি লগ্নে চাঁচল পাহাড়পুরের চন্ডী মন্দিরের সামনে ঠিক দুশো মিটার দূরে মহানন্দা নদীতে বিসর্জন দেয়া হয় দেবীপ্রতিমা কে।
আর ওই বিসর্জনের সময় নদীর ওপারের বেশকিছু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ লণ্ঠনের আলো জ্বালিয়ে মা কে বিদায় জানান। কথিত রয়েছে ,কোন এক কালে চাঁচলের মরা মহানন্দা নদীর তীরবর্তী এলাকার বিদ্যানন্দপুর গ্রামে এক ভয়াবহ মহামারী দেখা দিয়েছিল।
সেই সময় নাকি পাহাড়পুরের চন্ডী মন্দিরের দেবী স্বপ্নে তাদেরকে হারিকেনের আলো দেখাতে বলেন। সেই থেকেই ওই এলাকার মানুষেরা আজও মাকে লন্ঠনের আলো জ্বালিয়ে দশমীর দিন বিদায় জানান।
গতকাল সন্ধ্যায় ঠিক গোধূলি লগ্নে মরা মহানন্দার ওই পাড় থেকে দেবী কে বিদায় জানান সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। তবে আস্তে আস্তে সেই হ্যারিকেনের প্রচলন উঠতে চলেছে। এখন ডিজিটাল জমানা কে হাতিয়ার করেই মোবাইলের ফ্ল্যাশ বা চার্জার লাইট জ্বালিয়ে দেবী কে বিদায় জানাচ্ছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা। সম্প্রীতির এমন নিদর্শন ধরা পরল চাঁচলের মরা মহানন্দা ঘাট চত্বরে।