Durga Puja 2025 Coochbehar Barodebi: নররক্ত ছাড়া এই পুজো হয় না, এই পুজোর ইতিহাস গা ছমছমে, ৫০০ বছর ধরে ঘুরছে মিথ

Durgapuja 2024: ৫০০ বছরের বেশি পুরনো কোচবিহারের বড়দেবীর পুজো রহস্য-রোমাঞ্চে ভরা। পুজো শুরুর কাহিনী যেমন হাড় হিম করে দেয়, তেমনই এখনও নররক্ত উৎসর্গ করার ঘটনা শিহরিত করে। রাজ্যের অন্যতম প্রাচীন পুজোকে ঘিরে রয়েছে নানা রহস্য, রোমাঞ্চ।

Advertisement
নররক্ত ছাড়া এই পুজো হয় না, এই পুজোর ইতিহাস গা ছমছমে, ৫০০ বছর ধরে ঘুরছে মিথনররক্ত ছাড়া এই পুজো হয় না, এই পুজোর ইতিহাস গা ছমছমে, ৫০০ বছর ধরে ঘুরছে মিথ

দুর্গাপুজো মানেই শুধু উৎসব নয়, তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক রহস্যঘেরা ঐতিহ্য, রক্তপাতের প্রাচীন নিয়ম আর অলৌকিক বিশ্বাসের ছায়া। শ্রাবণের শুক্লা অষ্টমী থেকে শুরু হয়ে মহাঅষ্টমী পর্যন্ত চলা এই পুজোয় দেবী দুর্গা আরাধিত হন ‘বড়দেবী’ রূপে। আর সেই পুজো তখনই সম্পূর্ণ হয়, যখন দেবীর চরণে দেওয়া হয় মানুষের রক্ত। কোচবিহারে এই পুজো নিজেই একটা ইতিহাস।

স্থানীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, রাজা বিশ্বসিংহের শৈশবে এক বন্ধুর বলিই ছিল বড়দেবী আরাধনার সূচনা। কথিত আছে, খেলার ছলে বন্ধু বলি দিতে গিয়ে তাঁর মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সেই ঘটনা থেকেই দেবীর অলৌকিকতা বিশ্বাস করে পুজোর প্রচলন শুরু করেন বিশ্বসিংহ। পরে তাঁর পুত্র মহারাজা নরনারায়ণ স্বপ্নাদেশ পেয়ে শারদীয় দুর্গাপুজোর প্রচলন করেন, যেখানে দেবী রূপ পান দশভুজা ও ভীতিকর চেহারায়। রক্তরাঙা গাত্রবর্ণ, সিংহ ও বাঘ, দলিত অসুর, পাশে জয়-বিজয়া।

এই পুজোর নিয়মও স্বতন্ত্র। ভাঙ্গরাই মন্দিরে মহাস্নান করানো ময়না গাছের কাঠ দিয়েই তৈরি হয় প্রতিমার মেরুদণ্ড। সেই কাঠ একমাস ধরে মদনমোহন মন্দিরে বিশেষ পুজোয় থাকে। এই পুজোয় পায়রা বলি দেওয়া হয়। পরে সেটি স্থানান্তরিত হয় বড়দেবীর মন্দিরে।

সবচেয়ে রহস্যময় দিক হল, প্রতিবছর অষ্টমীর রাতে বিশেষ গুপ্তপুজো। বাইরের কেউ প্রবেশ করতে পারেন না। রক্তদান হয় পুরোহিত বা রাজপরিবারের কোনও এক প্রতিনিধির হাতে নিজের আঙুল কেটে কয়েক ফোঁটা রক্ত দিতে হয় দেবীর পদতলে। সেসময় চালের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি মানুষরূপী পুতুলকে দেওয়া হয় প্রতীকী বলি।

জনশ্রুতি অনুযায়ী, একসময় এখানে নরবলি হত, যা বন্ধ করেন রাজা নরেন্দ্রনারায়ণ। তবে বলা হয়, নররক্ত না পেলে দেবী কুপিত হন। সেই কারণে প্রতীকী বলির মাধ্যমেই বজায় রাখা হয় প্রাচীন ঐতিহ্য।

এই পুজোকে ঘিরে কোচবিহারে আবেগ, ভক্তি আর গা ছমছমে কৌতূহলের শেষ নেই। শতাব্দী পেরিয়ে আজও স্বমহিমায় চলছে সেই বড়দেবীর রক্তমাখা পুজো, যার রীতি কখনও বদলায় না, শুধু ইতিহাসের মতো বিস্ময় জাগিয়ে রেখে যায়।

Advertisement

 

POST A COMMENT
Advertisement