scorecardresearch
 

Basanta Utsav Exclusive: শিশুতীর্থে বসন্ত উৎসব উদযাপনে ঠাকুর বাড়ির সদস্যরা

বিশ্বভারতী (Visva Bharati)  প্রাঙ্গণ থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে শান্তিনিকেতনে ঠাকুর পরিবারের (Tagore Family) সদস্যরা একটি স্কুল তৈরি করছেন ২০১৯ সালে। পাঠভবন, শিক্ষাসত্রের পর এটিই ঠাকুর পরিবারের নির্মিত তৃতীয় স্কুল।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Rabindranath Tagore) মৃত্যুর পরে এই প্রথম শান্তিনিকেতনে তাঁর পরিবারের বংশধরদের দ্বারা নির্মিত প্রথম স্কুল শিশুতীর্থ । রাঙা মাটির দেশে আয়োজিত হচ্ছে বসন্ত উৎসবের বিশেষ অনুষ্ঠান।

Advertisement
শিশুতীর্থে বসন্ত উৎসব উদযাপন ২০১৫ সালে (ছবি সৌজন্য: অঞ্জনাভ রায়) শিশুতীর্থে বসন্ত উৎসব উদযাপন ২০১৫ সালে (ছবি সৌজন্য: অঞ্জনাভ রায়)
হাইলাইটস
  • বিশ্বভারতী প্রাঙ্গণ থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে শান্তিনিকেতনে ঠাকুর পরিবারের সদস্যরা একটি স্কুল তৈরি করছেন।
  • শিশুতীর্থে বসন্ত উৎসব উদযাপনে ঠাকুর বাড়ির সদস্যরা
  • আজতক বাংলার সঙ্গে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে কথা বললেন ঠাকুর বাড়ির উত্তরসূরি সুদৃপ্ত ঠাকুর।

বিশ্বভারতী (Visva Bharati)  প্রাঙ্গণ থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে শান্তিনিকেতনে ঠাকুর পরিবারের (Tagore Family) সদস্যরা একটি স্কুল তৈরি করছেন ২০১৯ সালে। পাঠভবন, শিক্ষাসত্রের পর এটিই ঠাকুর পরিবারের নির্মিত তৃতীয় স্কুল।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Rabindranath Tagore) মৃত্যুর পরে শান্তিনিকেতনে তাঁর পরিবারের বংশধরদের দ্বারা নির্মিত প্রথম স্কুল শিশুতীর্থ। স্কুলটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বড় ভাই সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৌত্র সুপ্রিয় ঠাকুরের ছেলে সুদৃপ্ত ঠাকুর মূলত তৈরি করেছেন। এটি বীরভূমের বল্লভপুরডাঙ্গা গ্রামে অবস্থিত।

১৯৮৯ -এ স্থাপিত শিশুতীর্থ আশ্রমে  (Sishutirtha Ashram) প্রতি বছরই বসন্ত উৎসব পালন করা হয়। এই বছর তার মধ্যে রাঙা মাটির দেশে আয়োজিত হচ্ছে আরও বিশেষ অনুষ্ঠান। আজতক বাংলার সঙ্গে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে কথা বললেন ঠাকুর বাড়ির উত্তরসূরি সুদৃপ্ত ঠাকুর। তাঁর কথায় উঠে এল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিশ্বভারতী, বসন্ত উৎসবের এবারের আয়োজন থেকে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি।

শিশুতীর্থ

প্রশ্ন: শিশুতীর্থে এই বছরও বসন্ত উৎসব উদযাপন করছেন আপনারা। কী কী থাকছে?  

সুদৃপ্ত ঠাকুর: ছোট বাচ্চাদের বসন্ত উৎসব তো এই বছর করতে পারবো না, তাঁদের যেহেতু ভিড়ে আনা যাবে না। কিন্তু একদম বসন্ত উৎসবে কিছু হবে না তা তো হয় না। তাই কিছু অতিথিদের আমন্ত্রণ করা হয়েছে। এই ভাবেই আমরা আশ্রমে বসন্ত উৎসব পালন করবো।

সুপ্রিয় ঠাকুর
সুপ্রিয় ঠাকুর

প্রশ্ন: বাইরের থেকে কেউ  চাইলে কি এখানে সামিল হতে পারেন?

সুদৃপ্ত ঠাকুর: হ্যাঁ, অবশ্যই। তবে আমাদের সিট রিসার্ভ করা থাকবে। যাতে ভিতরে বেশি ভিড় না হয়। যোগাযোগ করে আস্তে পারেন। 

প্রশ্ন: এই বছর বিশ্বভারতীতে যেহেতু বসন্ত উৎসব প্রায় নিশ্চুপেই হল, সেই জন্য কী আরও বিশেষ ভাবে এই উদযাপন? 

Advertisement

সুদৃপ্ত ঠাকুর: বিশ্বভারতীর সঙ্গে কোনও রকম আর যোগাযোগ রাখতে চাই না। ওরা ওঁদের মতো। 

 

সুদৃপ্ত ঠাকুর
সুদৃপ্ত ঠাকুর

প্রশ্ন: বিশ্বভারতীর বর্তমান পরিস্থিতি অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনাকেও প্রায়ই সরব হতে দেখা যায়। সংস্কৃতির পরিবর্তন হয়ে কি কোথাও একটা অচলায়ন বানানোর চেষ্টা চলছে?

সুদৃপ্ত ঠাকুর: খুবই খারাপ লাগে। কিন্তু এটা নিয়ে বলার কিছু নেই। আমরা বাইরে থেকে তো কেউ কিছু করতে পারবো না আর। বিশ্বভারতীর অভ্যন্তরীণ বিষয় হয়ে গেছে এটা এখন। যারা এখন প্রশাসনিক স্তরে আছেন, যদি তাঁরা মনে করেন, তাঁরাই শুধু করতে পারেন। আমরা শুধু প্রতিবাদ করতে পারি।  

প্রশ্ন: কতটা মন খারাপের জায়গা এটা? 

সুদৃপ্ত ঠাকুর: খুবই মন খারাপের জায়গা! মানে ওই ভয়েস রেকর্ডিং যেটা শোনা যাচ্ছে সেটা যদি সত্যি হয়, যে বিশ্বভারতী বন্ধ করে দেবো একজন উপাচার্য বলছেন, তাহলে আর কী বলবো বলুন? তবে অবশ্যই সেটা যদি সত্যি হয়। ওটার সত্যতা তো এখনও যাচাই করা হয়নি। 

শিশুতীর্থ

প্রশ্ন: নির্বাচনের প্রাক্কালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সহ অন্যান্য মনীষীদের নাম বারবার আসছে এবং বিশ্বভারতীকে টেনে আনা হচ্ছে। কোথাও গিয়ে কী রবীন্দ্রনাথকে এখন রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে? ঠাকুর বাড়ির সদস্য হয়ে আপনার কী মনে হয়?

সুদৃপ্ত ঠাকুর: রাজনীতির সঙ্গে যারা যুক্ত তাঁদের কোনটায় কী লাভ হবে তাঁরা নিজেরা অঙ্ক কষেন। এর পিছনে আমাদের সাধারণ মানুষের প্রায় কোনও যোগাযোগ নেই। কিন্তু সবার কাছে এটাই অনুরোধ ওঁর (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের) স্পিরিটটা যেন নষ্ট না করেন কেউ। 

শিশুতীর্থ

প্রশ্ন: তার মানে কি পুরনো শান্তিনিকেতন বা বিশ্বভারতী যেটা সকলে দেখে অভ্যস্ত, আপনি সেটায় আঘাত না লাগার কথা বলছেন?

সুদৃপ্ত ঠাকুর: পুরনো নয়। রবীন্দ্রনাথের তো একটা আদর্শ আছে, ওঁর কিছু মতাদর্শ এখানে মেনে চলা হত। যে দলই এটাকে ব্যবহার করছে, সেটাকে যদি বাঁচিয়ে রাখার কেউ প্রচেষ্টা করে, সেই প্রচেষ্টাই আমার কাছে  গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন: নতুন প্রজন্মের কাছে কী তাহলে রবীন্দ্রনাথ আস্তে আস্তে কিছুটা ফিকে হয়ে যাচ্ছে?

সুদৃপ্ত ঠাকুর: রবীন্দ্রনাথকে ফিকে করার ক্ষমতা এখনও অবধি কারও নেই। তিনি এখনও সকলের মধ্যে বিভিন্ন রকম ভাবে বেঁচে আছেন। বিভিন্ন রকমের এক্সপেরিমেন্ট হচ্ছে ওঁর গানে। সেটার ভুল- ঠিক প্রসঙ্গে আমি যাচ্ছি না। কিন্তু এখনও তাঁকে এড়িয়ে যাওয়া মুশকিল। 

শিশুতীর্থ
শিশুতীর্থ স্কুল

প্রশ্ন: শিশুতীর্থ স্কুল , যেটা ঠাকুর পরিবারের তৃতীয় স্কুল আপনি তৈরি করেছেন, বর্তমানে কী অবস্থা যদি বলেন...

সুদৃপ্ত ঠাকুর: আমরা প্রথম বছরেই ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যায় তিন থেকে তিরিশে পৌঁছে গিয়েছিলাম। কিন্তু দ্বিতীয় বছরে এপ্রিল থেকেই তো সব বন্ধ। অপেক্ষা করছি কবে সব খুলবে।

শিশুতীর্থ স্কুল
শিশুতীর্থ স্কুল

প্রশ্ন:  এখন কী তাহলে অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে?

সুদৃপ্ত ঠাকুর: নিয়মিত অনলাইনে ক্লাস চলছে। একদিনও বাদ যায়নি। 

প্রশ্ন: সকলকে ঠাকুর পরিবারের তরফ থেকে কোনও বার্তা আপনি দিতে চাইবেন?

সুদৃপ্ত ঠাকুর: আশাটা ছাড়া যাবে না। যাই হয়ে যাক না কেন নিরাশ হওয়ার কোনও সুযোগ নেই এই পৃথিবীতে। 

Advertisement
বসন্ত উৎসব

আরও পড়ুন: বসন্ত উৎসব বা দোল! বাংলার এই জায়গাগুলি বিখ্যাত রঙের উৎসবের জন্য 

প্রসঙ্গত, ২৮ থেকে ৩০ মার্চ প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৮ টা অবধি চলবে শিশুতীর্থে এই বিশেষ বসন্ত উৎসবের অনুষ্ঠান। রবি ঠাকুরের প্রাণের জায়গায় এভাবেই বেঁচে থাকুক তাঁর তৈরি প্রতিটি সংস্কৃতি। 

Advertisement