এই পুজো ২০২৫ সালে পা রাখল ১০৯ বছরে। সময় পাল্টেছে, শহর বদলেছে, বদলেছে মানুষের মুখ, কিন্তু পুজো বন্ধ হয়নি একদিনের জন্যও। ১৯৮৬-র গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন হোক কিংবা ২০১৭-র হিংসার দিন, অটুট থেকেছে পুজোর ধারা।
চাঁদা নয়, ভালোবাসার পুজো এই হলের দুর্গাপুজো। কেউ আলাদা করে চাঁদা তোলেন না। ভক্তরা যেটুকু দেন, তাতেই হয় প্রতিমা, ভোগ, সাজসজ্জা, সব কিছু। এমনকী খরচ বাঁচেও। শুরুর দিকে প্রতিমা বিসর্জন হত কাকঝোরা ঝর্ণায়, এখন জল না থাকায় তা হয় বাংলাখোলা রংবুলে।

চাঁদমারির এই পুজোতে নবমীর দিন বিশেষ আকর্ষণ খিচুড়ি ভোগ। তরকারি আর পায়েস মিলে এমন ভোগের আসর, যেখানে শুধু বাঙালিই নন, লেপচা, গোর্খা, নেপালি, সব জাতি-ধর্মের মানুষ ভিড় করেন।
এই হল ঘরেই ১৮৯৮ সালে স্বামী বিবেকানন্দ ভাষণ দিয়েছিলেন। দেশভাগের সময়ে চিত্তরঞ্জন দাশ ও সিস্টার নিবেদিতার উপস্থিতিও দেখা গিয়েছে এই মঞ্চে। কালে কালে এখানেই বসেছে ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট, যেখানে কোর্টে দেখা গেছে প্রকাশ পাড়ুকোনকেও।
আজ দার্জিলিংয়ের বাঙালি পরিবার সংখ্যা হাতে গোনা ৪০-৪৫ এর মতো। চাঁদমারিতে তো মাত্র সাতটি। কিন্তু ঐতিহ্য বহন করেন তাঁরাই। মূর্তি আসে শিলিগুড়ি থেকে। ব্রাহ্মণ সদস্যরাই রান্না করেন নিজ হাতে ভোগ। উৎসর্গে কোনও খামতি নেই।

আগে রীতিমতো শোভাযাত্রা বেরিয়ে শহর পরিক্রমা করত, শেষে বর্ধমান রাজবাড়ির সামনে থেমে রাজা দিতেন স্বর্ণমুদ্রা। সেখান থেকে প্রতিমা যেত কাকঝোরায়। এবার আবার সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার ভাবনা। পরিকল্পনা চলছে টয় ট্রেনের মাধ্যমে প্রতিমা বিসর্জনের, শতাব্দী প্রাচীন ইতিহাসের পুনর্জাগরণ হবে।
কখন দেবেন অঞ্জলি?
মহাষ্টমী শুরু দুপুর ১.২১ মিনিটে। দুপুর ২.৯ এর মধ্যে সন্ধিপুজোর সমাপ্তি। দুপুর ১.৪৫ এ বলিদান। অঞ্জলি দিতে হবে এই সময়ের আগে। ১ অক্টোবর মহানবমীর পুজো। দেবীর নবরাত্রিক ব্রত সমাপন। বিধি মেনেই হবে পুজো ও অঞ্জলি জানিয়েছেন স্থানীয় উদ্যোক্তারা।