অসম্ভবকে সম্ভব করে দেওয়া বিজ্ঞান কাজ করতে শুরু করেছে। এখন শুধু প্রয়োজন সঠিক টেকনিক এবং ধৈর্য। টেকনিক তো হাবল টেলিস্কোপ (Hubble Telescope) এর কাছে আছে। ধৈর্য রাখাটা অত্যন্ত জরুরি এবং সঠিক অ্যাঙ্গেলে আসা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ হাবল টেলিস্কোপ এমন দুটি আকাশগঙ্গার ছবি তুলেছে, যা একটি আরেকটির ওপর আলাদা আলাদা দিকে মুখ করে রয়েছে এবং আটকে আছে বলেও দেখা যাচ্ছে। সঙ্গে ইতিমধ্যে তিনদিকে এর বিভিন্ন অংশ ছড়িয়ে রয়েছে। এ রকম জটিল পরিস্থিতিতে একটা ছবি তুলে আনা অত সহজ নয়।
ভাগ্য ভালো যে হাবল টেলিস্কোপ Hubble Telescope একটা সঠিক অ্যাঙ্গেলে পৌঁছে গিয়েছিল এবং এটি দেখতে পায় যে ৩২ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অ্যান্ড্রমেডা নক্ষত্র (Andromeda Constellation) এর ভিতর আকাশগঙ্গা নিজের নিজের গুরুত্ব আকর্ষণ শক্তির কারণে নিজেদের মধ্যে আটকে রয়েছে। খুব দ্রুত তারা ঘুরছে। হাবল টেলিস্কোপ সময় নষ্ট না করে এই দুটি আকাশগঙ্গার ছবি ক্যাপচার করে নিয়েছে। সঙ্গে এই ছবি দুটি আকাশগঙ্গা থ্রি ডাইমেনশন ডিটেইলস ক্যাপচার করেছে।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে উপরের দিকে ভার্টিক্যালি খাড়া হয়ে থাকা ছোট গ্যালাক্সির নাম পোলার রিং গ্যালাক্সি 1559 (Polar Ring Galaxy IC 1559) তার নীচে গোলাকার বড় ঘুরতে থাকা গ্যালাক্সির নাম এনজিসি169(169 (NGC 169) একসাথে দুটি আর্প 282 (Arp 282) বলে পরিচিত হচ্ছে। অর্থাৎ হাল্টন অব অ্যাটলাস অব পিকিউলিয়ার গ্যালাক্সিস।
নাসার বিজ্ঞানীরা একটি বয়ান জারি করে জানিয়েছেন যে আকাশগঙ্গার এইভাবে নিজেদের মধ্যে মিলে আটকে থেকে নাচ করা অত্যন্ত বড় বিষয় নয়। অ্যাস্ট্রোনমি চর্চাকারীরা আকাশগঙ্গার এই মিলনের প্রক্রিয়াকে স্টাডি করেন। গ্যালাক্সিরা নিজেদের মধ্যে মিলে যায়, ধাক্কা খায়, বিস্ফোরণ ঘটায় এবং পরে আবার আলাদা হয়ে যায়। এই ঘটনা একটা আলাদা মানে রয়েছে। যাতে তারা আকার এবং ব্যবহার বদলে যায়। সকলের জন্য এই ছবি নেওয়াত্ত মুশকিল। কারণ এটি আকাশগঙ্গা আলাদা ভাবে নিজেদের মধ্যে মিশে থাকে।
আর্প ২৮২ মাল্টি ডাইমেনশনে ছিল। সঙ্গে এর আশপাশে কোনও অন্য তারা সমূহ ছিল। ধুলো ছিল, গ্যাসীয় পদার্থ ছিল। কিন্তু হাবল টেলিস্কোপ সঠিক জায়গাতে থাকার কারণে এই দুটি আকাশগঙ্গার সঠিক ফটো নিতে পেরেছে। যদিও এই কারণে এটি অত্যন্ত কঠিন কাজ, কারণ এরকম ছবি সহজে পাওয়া যায় না। পোলার গ্যালাক্সি আসলে ভাল করে দেখাই যায় না। বড় আকাশগঙ্গার সঙ্গে মিলিত ভাবে দেখা যায়।