গোটা দেশজুড়ে আজ রাষ্ট্রনায়ক নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মজয়ন্তী পালন করা হচ্ছে। বাঙালি আজও ঘরের ছেলে সুভাষকে নিজেদের আইকন বলেই মনে করে। শাহনাওয়াজ় কমিশন কিংবা খোসলা কমিশন যতই বলুক না কেন, ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট একটি বিমান দূর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়েছে। তবু আজও বাঙালির চিন্তনে এবং মননে সুভাষচন্দ্র বসু চিরন্তন হয়ে আছেন।
তবে চলচ্চিত্র পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় আজকের দিনেই কিছুটা বিতর্কিত মন্তব্য করে ফেললেন। তাঁর কথায়, নেতাজিকে নিয়ে বাঙালির নাকি আর কোনও সেন্টিমেন্ট নেই, যাবতীয় সেন্টিমেন্ট আপাতত সৌরভকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হচ্ছে। টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে সৃজিত বললেন, নেতাজি নন, সৌরভকে নিয়ে বাঙালি অনেক বেশি আবেগপ্রবন। সৌরভকে যখন অনৈতিকভাবে ভারতীয় ক্রিকেট দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল, তখন বাঙালির আবেগ কার্যত উথলে উঠেছিল। আর সুভাষচন্দ্র বসুর ক্ষেত্রে বাঙালির শুধুমাত্র একটাই সেন্টিমেন্ট কাজ করে যে তিনি আবারও নাকি ফিরে আসবেন। রাজনৈতিকভাবে তাঁকে একজন 'ট্র্যাজিক হিরো' হিসেবেই তুলে ধরা হয়েছে। এর থেকে বেশি আর কিছু নয়।
এই প্রসঙ্গে আপনাদের জানিয়ে রাখি, ২০০৫ সালে ভারত যখন জ়িম্বাবোয়ে সফরে গেল তখন ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। আর কোচ গ্রেগ চ্যাপেল। ততদিনে সৌরভের সঙ্গে চ্যাপেলের সম্পর্ক একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে চ্যাপেল সাহেব ইমেল করে জানান, সৌরভ শারীরিক এবং মানসিকভাবে ভারতীয় ক্রিকেট দলকে নাকি নেতৃত্ব দিতে অক্ষম। তাঁর 'ডিভাইড অ্যান্ড রুল' নীতি ভারতীয় ক্রিকেট দলের উপরে খারাপ প্রভাব ফেলছে। কোনওক্রমে এই ইমেলটি সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয়ে যায়। এরপরই গর্জে ওঠেন সৌরভের সমর্থকেরা। আসমুদ্রহিমাচলে যত বাঙালি ছিলেন, প্রত্যেকের গলাতেই একই সুর শুনতে পাওয়া যায়, "গো ব্যাক চ্যাপেল"। এমনকী সেইসময় বাংলা তথা গোটা দেশের সংবাদমাধ্যমও সৌরভের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। অবশেষে এই ঘটনার মাস দশেক পরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আবারও সৌরভকে ভারতীয় ক্রিকেট দলে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
২০০৬ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতীয় ক্রিকেট দলের খারাপ ফলাফল এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে একজনের সিরিজ়ে ভারত ৪-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর সৌরভকে টেস্ট ক্রিকেট দলে ডেকে নেওয়া হয়। আর দলে ফিরেই ঝলসে ওঠে মহারাজের ব্যাট। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে অনুশীলন ম্যাচে তিনি ৮৩ রান করেন। সামান্য বদল আনেন ব্যাটিং স্টাইলেও। কামব্যাকের পর জোহানেসবার্গে প্রথম টেস্ট ইনিংসের তিনি অনবদ্য একটি হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন। এরপর থেকে তাঁকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি।