বিরাট কোহলির পারফরম্যান্স নিয়ে নানা ধরনের কথা হচ্ছে। কারণ গত তিন বছর ধরে কিছুতেই তিনি নিজের পরিচিত ছন্দে ফিরতে পারছেন না। বিরাট একটা সময় রান মেশিন ছিলেন। কিন্তু এখন তাঁর ব্যাট থেকে সেঞ্চুরি আসছে না। একটা সময় পরপর সেঞ্চুরি করে গিয়েছেন বিরাট। আর এখন একটা সেঞ্চুরির জন্য আকুল ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক। তিন ধরনের ফরম্যাটের কোনও ফরম্যাটেই ফর্মে নেই তিনি। আইপিএল-এর পর বিশ্রাম নিয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন বিরাট। সেখানেও খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে তাঁকে।
তবে সমস্যা শুধু সেঞ্চুরি নিয়ে নয়, এখন সমস্যা হচ্ছে বড় কোনো ইনিংস আসছে না। দলের প্রয়োজন বা পরিস্থিতি অনুযায়ী যে শক্তিশালী ৫০-৬০ বা ৭০ রানের ইনিংসের জন্য প্রয়োজন সেটাও করতে পারছেন না তিনি। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে বিরাট কোহলি কি এই ফর্ম নিয়ে প্লেয়িং-১১-এ জায়গা পাওয়ার যোগ্য?
নামের সাহায্যে কতদিন দলে জায়গা পাবেন?
বিরাট কোহলি শেষবার আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি করেছিলেন ২০১৯ সালে। তারপরে করোনার জন্য ক্রিকেট বন্ধ থাকে। তবে এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে গেছে। কিন্তু বিরাট কোহলির ব্যাট থেকে কোনো সেঞ্চুরি আসেনি। সব মিলিয়ে শেষ সেঞ্চুরি করার পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৭৫টি আন্তর্জাতিক ইনিংস খেলেছেন বিরাট কোহলি।
বিরাট কোহলির সামগ্রিক গড় (টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি সহ) প্রায় ৩৬। ৬ ডিসেম্বর, ২০১৯ থেকে, বিরাট কোহলি মোট ৬৫টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন, ৭৫ ইনিংসে তাঁর রান ২৫১৯। যেটি ভারতীয় ব্যাটসম্যানের জন্য সবচেয়ে বেশি, এই সময়ের মধ্যে বিরাট ২৪টি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। তাঁর গড় ৩৬.৮৯। তবে বিরাট কোহলি ছাড়াও এই সময়ে রোহিত শর্মা ৪টি, কেএল রাহুল ৫টি সেঞ্চুরি করেছেন।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চলা সিরিজে বিরাট কোহলি
৫ টেস্ট, ৯ ইনিংস, ২৪৯ রান, ২৭.৬৬ গড়
৬ ডিসেম্বর ২০১৯-এর পর বিরাট কোহলির রেকর্ড
ম্যাচ - ৬৪, ইনিংস - ৭৫, রান - ২৫০৯
গড় - ৩৬.৮৯, হাফ সেঞ্চুরি - ২৪
রাহানে এবং পূজারাকে বাদ দেওয়া হয়েছিল
ভারতীয় টেস্ট দলের দুই সিনিয়র খেলোয়াড়, অজিঙ্কা রাহানে এবং চেতেশ্বর পূজারাকে কিছুদিন আগে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। দু'জনেই খারাপ ফর্মে ছিলেন। পূজারা ৫০ ইনিংসে কোনও সেঞ্চুরি করেননি এবং অজিঙ্কা রাহানেও দুই বছর ধরে সেঞ্চুরির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এই কারণে দু'জনেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ থেকে বাদ পড়েছিলেন।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচের আগে চোট পান অজিঙ্কা রাহানে। তাই দলে ছিলেন না তিনি। তবে তিনি যে সুযোগ পাবেন তার কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। অন্যদিকে দলে ফিরতে কাউন্টি ক্রিকেট খেলে নিজেকে প্রমাণ করতে হয়েছে চেতেশ্বর পূজারাকে। এরপর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এজবাস্টন টেস্টে তাঁকে খেলান হয়। এই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি করেন চেতেশ্বর পূজারা।
প্রশ্ন হল, যখন অজিঙ্কা রাহানে ও চেতেশ্বর পূজারাকে বাজে ফর্মের ভিত্তিতে বাদ দেওয়া যায়, তাহলে বিরাট কোহলির জন্য আলাদা মাপকাঠি কেন? বিরাট কোহলি নিঃসন্দেহে একজন অসাধারণ ব্যাটার, দলের প্রাক্তন অধিনায়ক এবং অন্যতম বড় ব্যাটসম্যান। কিন্তু ফর্ম এবং রান যদি মাপকাঠি হয়, তাহলে সবার জন্য একই হওয়া উচিত।
টিম ম্যানেজমেন্ট এবং নির্বাচকরা এত বড় এবং কঠিন সিদ্ধান্তের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে পারে কি না সেটাই দেখার বিষয়। নাকি এমন পরিস্থিতি ঘটার আগেই বিরাট কোহলির ব্যাটে আগুন লেগে যায়?