প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের কাছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পৌঁছে দিতেন 'কালীঘাটের কাকু' সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত সুজয়কৃষ্ণের চার্জশিটে এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। স্বাভাবিক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে জড়িয়ে গেল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নামও।
১২৬ পাতার মূল চার্জশিটের ৭৫ নম্বর পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, তাপস মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কাছের লোক ছিলেন কুন্তল ঘোষ। বেআইনিভাবে নিয়োগের জন্য তাপসের থেকে টাকা নিতেন সুজয়কৃষ্ণ। এই সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রই তৃণমূলের তৎকালীন যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হিসাবপত্তর দেখতেন। তৎকালীন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের কাছে অভিষেকের বার্তা নিয়ে যেতেন সুজয়কৃষ্ণ। ২০১৪ সালের টেটে ৩২৫ জন চাকরিপ্রার্থীকে নিয়োগ করার জন্য মানিককে তথ্য দিয়েছিলেন তিনিই।
ইডির চার্জশিটে আরও বলা হয়েছে, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি। রাজনৈতিক পদ বা শিক্ষা দফতরে না থাকলেও মানিক ভট্টাচার্যের দফতরে তাঁর অবাধ যাতায়াত ছিল। চাকরির নিয়োগ নিয়ে কথা বলতেই মানিকের কাছে যেতেন সুজয়কৃষ্ণ।
ইডির চার্জশিট নিয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন,'কেন্দ্রীয় চার্জশিটে এমনটা বলেই থাকে। এটাই যে ধ্রুব সত্য এমনটা ভাবার কারণ নেই। বহু ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় শাসক দলের অঙ্গুলিহেলনে এটা করা হয়। বিচারের পর সত্য বেরিয়ে আসে।'
গত ৩০ মে 'কালীঘাটের কাকু' সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে গ্রেফতার করে ইডি। নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তল ঘোষ তাঁর নাম উল্লেখ করেছিলেন। কুন্তল ঘোষের সঙ্গে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সংযোগ করিয়ে দিয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণ। এর মধ্যে গত ১৭ জুলাই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। বর্তমানে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। বৃহস্পতিবার তাঁর আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, তাঁর হার্টের তিনটি ব্লকেজ ধরা পড়েছে। বাইপাস সার্জারি করাতে হবে। তবে তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক।