'একশো দিনের কাজে ৭ হাজার কোটি টাকা বকেয়া। এই টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। এটা আমাদের দাবি নয়, সাংবিধানিক অধিকার।' সোমবার বানারহাটের সরকারি সভা থেকে মোদী সরকারকে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন, ১৮ থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকবেন দিল্লিতে। সেই সময় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেখা করার জন্য সময় চেয়েছেন।
গত লোকসভা ভোট তো বটেই, বিধানসভা ভোটেও উত্তরবঙ্গে গেরুয়া শিবিরে দাপট দেখা গিয়েছিল। এ দিন বানারহাটের সরকারি সভা থেকে সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কন্যাশ্রী, ঐক্যশ্রী, মেয়েদের বিয়ের জন্য ২৫ হাজার টাকা দেওয়ার মতো সামাজিক প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন। তার ফাঁকেই মমতা বলেন,'আমরা কাজ করে চলব। তবে আমি আপনাদের কাছে একটা প্রতিশ্রুতি চাইছি, আমার উপর আপনাদের ভরসা আছে? কেউ মিথ্যা বললে শুনবেন না তো? কেউ টাকা দিয়ে ভোট কিনতে চাইলে শুনবেন না তো? টাকা দিলে ভাববেন নিজেদেরই।' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সরব বিরোধীরা। সেই প্রসঙ্গে সরাসরি যাননি মমতা। তবে তাঁর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য,'একজন গরিব একটা বিড়ি ছেড়ে দুটো বিড়ি খেলেই তাঁর বিরুদ্ধে নানা কথা বলা হয়। কিন্তু বড় বড় ডাকাত ও কোটিপতিদের বিরুদ্ধে কেউ কিছুই বলে না। এটা আমাদের অভ্যাস হয়ে গিয়েছে।'
আলাদা উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবি উস্কে দিয়েছিলেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। তার পর একাধিক বিজেপি নেতানেত্রীর মুখে শোনা গিয়েছে আলাদা রাজ্যের কথা। এ দিন মমতা বলেন,'আমি যতদিন বেঁচে থাকব কোনও বিভাজন করতে দেব না। পাহাড়, সমতল, আদিবাসী, দলিত, ভুটিয়া, হিন্দু, মুসলিম, শিখ ও খ্রীষ্ট্র, সবাই ভাইবোন, আমার পরিবার। পরিবারকে কখনও দুঃখে থাকতে দেব না। উত্তরবঙ্গে ২৪ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হচ্ছে।'
একশো দিনের বকেয়া নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন মমতা। বলেন,'বাংলা কারও কাছে মাথানত করে না। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার একশো দিনের কাজে ৭ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে। এটা দাবি নয়, আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। আমি দিল্লি যাচ্ছি, প্রধানমন্ত্রীর কাছে অ্যাপয়েন্টমেন্ট চেয়েছি। আমরা ভেবেছিলাম, এক দেশ এক কর, ভালো হবে! অথচ এখান থেকে কর নিয়ে যায়, বাংলাকে দেয় না।'