পেট্রোল-ডিজেলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গোটা দেশে গত কয়েক মাস ধরে বেড়ে চলেছে ভোজ্যতেলের দাম। সাধারণ সরষের তেলের পাইকারি দাম ১২০ থেকে বাড়তে বাড়তে ১৬০ টাকা ছাড়িয়েছে। খুচরো দোকানে দাম আরও কিছুটা বেশি।
এ বছর গত বছরের তুলনায় অধিক ফলন সত্ত্বেও সরষের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। দেশজুড়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবে ভোজ্য তেলের দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কারবারীরা!
সরষের তেল ছাড়া অন্যান্য সমস্ত ধরনের ভোজ্য তেলের অধিকাংশই এখনও বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। দেশের মোট চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। তার উপর ওই সব তেলের উপর কেন্দ্রীয় আমদানি শুল্ক চাপে। সব মিলিয়ে সূর্যমুখী, সয়াবিন, রাইস ব্রান— সব ধরনের ভোজ্য তেলের দামই বেড়ে গিয়েছে।
বর্তমানে ভোজ্য তেলের উপর প্রায় ৪০-৫০ শতাংশ হারে আমদানি শুল্ক নেওয়া হয়। পোস্তার পাইকারি ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, আমদানি শুল্কের জন্য প্রতি কেজিতে ২৫-৩০ টাকা দাম বেশি পড়ে যায়।
তবে এবার ভোজ্য তেলের দাম কমার ইঙ্গিত মিলেছে। মঙ্গলবার সলভেন্ট এক্সট্র্যাক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন (SEA)-এর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, জুন মাসে ভারতে পাম তেলের আমদানি প্রায় ২৪ শতাংশ কমেছে। ফলে কমতে চলেছে ভোজ্যতেলের দামও।
ফুড অ্যান্ড পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন ডিপার্টমেন্টের সম্পাদক সুধাংশু পাণ্ডে জানান, ইতিমধ্যেই ভোজ্য তেলের উপর আমদানি শুল্ক কমিয়েছে কেন্দ্র। বেড়েছে দেশীয় উৎপাদনও। ডিসেম্বর মাস থেকেই সোয়াবিন তেল ও পাম তেলের দাম বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। শুধু তাই নয়, ধীরে ধীরে অনেকটাই দাম কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ভারত বিশ্বের বৃহত্তম ভোজ্যতেলের আমদানিকারক দেশ। ২০২০ সালের জুনে মোট ৫,৬৪,৮৩৯ টন পাম তেল ভারতে আমদানি করা হয়েছিল। যেখানে, ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত ভারতে ৭,৬৯,৬০২ টন পাম তেল আমদানি করা হয়েছে।
গত বছরের জুনে ভারতে মোট ১১.৯৮ লক্ষ টন ভোজ্যতেল আমদানি করা হয়েছিল। এ বছর জুন পর্যন্ত মোট ৯.৯৬ লক্ষ টন ভোজ্যতেল আমদানি করা হয়েছে। অর্থাৎ, গত বছরের তুলনায় এ বছর ভারতে ভোজ্যতেলের আমদানি কমেছে ১৭ শতাংশ!
ভারতে মোট যত পরিমাণ ভোজ্যতেলের আমদানি করা হয় তার প্রায় ৬০ শতাংশই হল পাম তেল। সলভেন্ট এক্সট্র্যাক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন (SEA) জানিয়েছে, দেশীয় বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ মজুদ থাকার কারণে উদ্ভিজ্জ তেলের আমদানিও মে মাসের তুলনায় জুনে বেশ কিছুটা কমেছে।