একশো টাকা পার করা পেট্রোল আর একশো ছুঁই ছুঁই ডিজেলের দামে রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠছে আম জনতার। কিন্তু তেমন কোনও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় হাত পুড়িয়েই গাড়িতে তেল ভরতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
বর্তমানে বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম নিম্নমুখী। তবুও ১৫ এপ্রিলের পর আর দাম কমেনি তেলের। কলকাতায় মঙ্গলবার পেট্রোলের দাম প্রতি লিটারে ১০২ টাকা ০৮ পয়সা আর ডিজেল প্রতি লিটারে ৯৩ টাকা ০২ পয়সা।
২৬ মে, ২০১৪-এ দেশের চতুর্দশ প্রধানমন্ত্রী (Fourteenth Prime Minister) হিসাবে প্রথম শপথ নেন নরেন্দ্র মোদী। সে সময় দিল্লিতে পেট্রোলের দাম সাড়ে ৭১ টাকার আসেপাসে ঘোরাফেরা করছে। বর্তমানে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে পেট্রোলের দাম।
অগ্নিমূল্য পেট্রোল-ডিজেলে আম জনতার যেমন হাত পুড়ছে, তেমনই সমস্যায় পড়েছেন বাংলার শতাধিক ছোট তেলের পাম্প মালিক। অনেক পাম্পই লোকসানের মুখে পড়ে বন্ধ হয়ে যেতে বসেছে!
শুনতে অদ্ভুত লাগলেও পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়ায় কেন্দ্রীয় নীতির চাপে বিগত বছর খানেক ধরেই ধুঁকছে বাংলার শতাধিক ছোট ও মাঝারি পেট্রোল পাম্প! কারণ, কেন্দ্র তেলের দাম বাড়ালেও পেট্রোল পাম্প মালিকদের কমিশন বিগত বছর চারেকে এক পয়সাও বাড়ায়নি।
হাওড়া আমতার একটি পেট্রোল পাম্পের মালিক জানান, ২০১৭ সালে কলকাতার বাজারে পেট্রোলের দাম মোটামুটি ৬৭ টাকার আশপাশে ছিল আর ডিজেলের দাম লিটার ছিল ৫৮ টাকার মতো। পরবর্তী চার বছরে তেলের দাম ৩২-৩৩ টাকা বাড়লেও পেট্রোল পাম্প মালিকদের কমিশন বাড়েনি।
তেলের দাম বাড়ায় কী ভাবে ক্ষতির মুখে পেট্রোল পাম্প মালিকরা? তেলের দাম বাড়ায় বেড়েছে বিনিয়োগের পরিমাণ। আগে যেখানে পাম্পের রিজার্ভার ভরতে ২৫-৩০ লক্ষ টাকা খরচ হতো, বর্তমানে তা বেড়ে প্রায় ৪৫-৫০ লক্ষ টাকায় পৌঁছে গিয়েছে। ফলে এই বিপুল অঙ্কের ‘ওভার ড্রাফট’ দিতে রাজি হচ্ছে না অধিকাংশ ব্যাঙ্ক। ফলে সমস্যায় পড়ছেন পেট্রোল পাম্প মালিকরা।
তার উপর এই বছর চারেকে বেড়েছে বিদ্যুৎ, ইনসিওরেন্স, রক্ষণাবেক্ষণের খরচ, বেড়েছে কর্মচারীদের বেতনও। ফলে কেন্দ্র কমিশন না বাড়ানোয় লাভের মুখ দেখতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পাম্প মালিকদের। চার বছর আগে পেট্রলিয়াম মন্ত্রক নির্ধারিত পেট্রলের লিটার প্রতি কমিশন ৩ টাকা ১৭ পয়সা আর ডিজেলের ক্ষেত্রে কমিশন ছিল ২ টাকা ১১ পয়সা। এই কমিশনের অঙ্ক প্রতি ছ’মাস পর পর বাড়ানোর কথা থাকলেও বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি।