বাংলায় বিধানসভা ভোট শুরুর আগে থেকেই ঊর্ধ্বমুখী ছিল মুরগির মাংসের দাম! কেজিতে ১৮০ টাকা থেকে বাড়তে বাড়তে একটা সময় মুরগির মাংসের দাম ২৫০ টাকা কেজি ছুঁয়েছে।
ভোটের পঞ্চম দফা পেরনোর পর থেকেই মধ্যবিত্তকে স্বস্তি দিয়ে কমতে শুরু করেছে মুরগির মাংসের দাম! বিগত এক সপ্তাহে কেজিতে প্রায় ৭০ টাকা কমেছে দাম।
গত এক মাস ধরে মুরগির মাংসের দামে যে চরম অস্থিরতা ধরা পড়েছে তার কারণ কী? কেনই বা এখন হুড়মুড়িয়ে দাম কমছে মুরগির মাংসের? এমনই নানা প্রশ্নের উত্তর দিলেন ওয়েস্ট বেঙ্গল পোল্ট্রি ফেডারেশন-এর সাধারণ সম্পাদক মদন মোহন মাইতি।
ওয়েস্ট বেঙ্গল পোল্ট্রি ফেডারেশন (WEST BENGAL POULTRY FEDERATION)-এর সাধারণ সম্পাদক মদন মোহন মাইতি জানান, প্রতি বছরই গরম বাড়লে মুরগির মাংসের চাহিদায় ভাটা পড়ে। এ বারেও গরম বাড়তেই মাংসের চাহিদা কিছুটা কমেছে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল পোল্ট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জানান, এই রাজ্যে প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি ৫০ লক্ষ পোলট্রির মুরগির ডিম বিক্রি হয়। প্রতি সপ্তাহে প্রায় ২৫ কোটি কিলোগ্রাম মুরগির মাংস বিক্রি হয়। গরম বাড়লে প্রায় ১৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ বিক্রি কমে যায় মুরগির ডিম আর মাংসের।
মদনমোহনবাবু জানান, মুরগির মাংসের চাহিদা ক্রমাগত কমার ফলেই ইদানীং দাম কমতে শুরু করেছে। ভবিষ্যতে দাম আরও কিছুটা কমতে পারে। তবে মাংসের দাম কেজিতে ২০০ টাকার নীচে নেমে গেলেই লোকশানের মুখে পড়তে ব্যবসায়ীদের। কিন্তু চাহিদা না থাকায় দাম বাড়ালেও বিক্রি কমে যাবে।
কোথাও ১৫০ টাকা তো কোথাও আবার ২২০ টাকায় বিকোচ্ছে মুরগির মাংস। মুরগির মাংসের অঞ্চলভিত্তিক দামের এতটা ফারাক হচ্ছে কী করে? মদনমোহনবাবু জানান, উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গ— মুরগির মাংসের দামে কেজি প্রতি বড়জোড় ১০-১৫ টাকার ফারাক হতে পারে, তবে তার বেশি হওয়া উচিৎ নয়।
তাহলে কী করে মুরগির মাংস ডানলপে ১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও উত্তরপাড়ায় দাম ২২০ টাকারও বেশি? ওয়েস্ট বেঙ্গল পোল্ট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জানান, এই সময়টায় মুরগির মাংসের চাহিদা কম থাকে, তাই বিক্রি বাড়িয়ে আয় বজায় রাখতে অনেকেই মাংসের দাম কিছুটা কম রাখেন। তাই ১৫০ টাকা কেজিতেও কোথাও কোথাও বিক্রি হচ্ছে মুরগির মাংস।
তাহলে যাঁরা ২২০ টাকা কেজি বা তারও বেশি দামে মুরগির মাংস বিক্রি করছেন? মদনমোহনবাবু জানান, হুগলি জেলায় মঙ্গলবার এক কেজি মুরগির মাংসের (কাটা) দাম সর্বোচ্চ ১৮৫ টাকা। কিন্তু এই বাজারেও ২০০ টাকার উপরে যাঁরা মুরগির মাংস বিক্রি করছেন, তাঁরা অন্যায় করছেন। এমনটাই মত ওয়েস্ট বেঙ্গল পোল্ট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের।