কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটতে চলেছে অষ্টম বেতন কমিশনের বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে। একাধিক সূত্রের দাবি অনুযায়ী, এই কমিশন বাস্তবায়নের ফলে শুধু বেতন বৃদ্ধিই নয়, দেশের অর্থনীতিতেও হতে পারে ইতিবাচক প্রভাব। সম্প্রতি কোটাক ইনস্টিটিউশনাল ইক্যুইটিজ একটি বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে অষ্টম বেতন কমিশন কার্যকর হওয়া ও তার সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত তথ্য উঠে এসেছে।
কবে কার্যকর হবে অষ্টম বেতন কমিশন?
প্রতিবেদন অনুযায়ী, অষ্টম বেতন কমিশন ২০২৬ সালের শেষ ভাগে অথবা ২০২৭ সালের শুরুতে কার্যকর হতে পারে। যদিও এখনো সরকার কমিশনের চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা করেনি এবং গঠনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পূর্ণ হয়নি, কিন্তু প্রস্তুতি চলছে। খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার সম্ভাবনা প্রবল।
কত বাড়তে পারে বেতন?
কোটাক ইক্যুইটিজ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অষ্টম বেতন কমিশনের অধীনে মূল বেতন ৩০ থেকে ৩৪ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের সর্বনিম্ন মূল বেতন ১৮,০০০ টাকা, যা বেড়ে প্রায় ৩০,০০০ টাকা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ১.৮ ধরলে, কর্মচারীদের প্রায় ১৩ শতাংশ আর্থিক সুবিধা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
সরকারের খরচ কতটা বাড়বে?
বেতন বৃদ্ধির ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের উপর অর্থনৈতিক চাপও কিছুটা বাড়বে। কোটাক-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিডিপির উপর প্রভাব ০.৬% থেকে ০.৮% পর্যন্ত হতে পারে, যা টাকার অঙ্কে ২.৪ থেকে ৩.২ লক্ষ কোটি টাকার অতিরিক্ত ব্যয় বোঝা সৃষ্টি করতে পারে। তবে এই খরচ দেশের অর্থনীতিতে চাহিদা বৃদ্ধির মাধ্যমেও পুনরুদ্ধার হতে পারে।
চাহিদা, সঞ্চয় ও বিনিয়োগে প্রভাব
বেতন বৃদ্ধি সরাসরি অটোমোবাইল, কনজিউমার গুডস ও রিটেল মার্কেটে চাহিদা বাড়াতে পারে। একই সঙ্গে, সাধারণ মানুষের সঞ্চয় এবং বিনিয়োগ করার প্রবণতাও বৃদ্ধি পাবে। ইক্যুইটি, ব্যাঙ্ক আমানত এবং অন্যান্য বিনিয়োগ খাতে ১ থেকে ১.৫ লক্ষ কোটি টাকার প্রবাহ তৈরি হতে পারে।
উপকৃত হবেন কারা?
এই কমিশনের ফলে ৩৩ লক্ষ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ও প্রচুর পেনশনভোগী উপকৃত হবেন। বিশেষত গ্রেড C-এর কর্মচারীদের আর্থিক অবস্থা উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হতে পারে।