ভারতীয় রেলকোনও সেক্টরে মনোপলি থাকলে তা কীরকম বিপজ্জনক হতে পারে, তার সর্বশেষ উদাহরণ ইন্ডিগো-র বিপর্যয়। এয়ারলাইন্সটি বিপাকে পড়তেই দেশের বিমান পরিবহণ ব্যবস্থা ভয়ঙ্কর সংকটের মধ্যে পড়েছে। হাজারে হাজারে মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা এয়ারপোর্টে অপেক্ষা করছেন। তারপরেও তাঁরা বিমান পাচ্ছেন না। এমন পরিস্থিতিতে আশঙ্কার প্রহর গুনছেন অল ইন্ডিয়া লোকো রানিং স্টাফ অ্যাসোশিয়েনও। সংগঠনটির দাবি IndiGo-র মতো এই পরিস্থিতি হতে পারে ভারতীয় রেলেও! কেন তাঁদের এই আশঙ্কা। বুঝে নেওয়া যাক।
AILRSA-এর তরফে বলা হচ্ছে, IndiGo-র এই বিপর্যয় ভারতীয় রেলের কাছেও দর্পণ হতে পারে। এই বিপর্যয় থেকে রেলের শিক্ষা নেওয়া উচিত। অল ইন্ডিয়া লোকো রানিং স্টাফ অ্যাসোশিয়েনের তরফে জানানো হয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরেই লোকো পাইলটরা বেশ কয়েকটি দাবি করে আসছেন। যেমন-
সংগঠনের দাবি, একাধিক হাই লেভেল কমিটি যেমন- অনিল কাকোডকর কমিটি ২০১২, HPC–র রিপোর্ট এর আগে একাধিকবার সুপারিশ করেছে লোকো পাইলটদের ডিউটি টাইম বিজ্ঞানসম্মত ভাবে তৈরি করার জন্য। কিন্তু, অপারেশনাল অজুহাত দেখিয়ে রেলবোর্ড বারেবারেই সেই প্রস্তাব নাকচ করেছে।
কিন্তু, লোকো পাইলটদের পর্যাপ্ত বিশ্রাম যে কতটা জরুরি তা নানা দুর্ঘটনা থেকে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বিলাসপুর–সিংগপুর দুর্ঘটনার CRS রিপোর্টে (জুলাই, ২০২৩) উল্লেখ করা হয়েছে লোকো পাইলটরা কমপক্ষে ১৪ ঘণ্টারও বেশি টানা ডিউটি করছিলেন। ফলে যাত্রী নিরাপত্তার দিকে নজর রেখেই লোকো পাইলটদের ডিউটি টাইম নির্দিষ্ট করা উচিত।
সরকারে দ্বৈত ভূমিকায় ক্ষুব্ধ রেলের লোকো পাইলটদের সংগঠন
AILRSA-এর তরফে অভিযোগ, সরকারি বা পাবলিক সেক্টরে কর্মীরা আন্দোলনে নামলেই চার্জশিট, শাস্তি, দমননীতির মতো মনোভাব নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু যখন বড় বড় কর্পোরেটগুলি কোনও নিয়ম মানতে চায় না, তখন সরকার নিজেই পিছিয়ে আসে। রেলের ক্ষেত্রেও এমনটাই হচ্ছে বলে দাবি।
রেলের এখনই কী করা উচিত?
ইন্ডিগো-র বিপর্যয়ের পর এমন পরিস্থিতি যাতে ভারতীয় রেলে না আসে, তার জন্য রেলের আশু কর্তব্য স্থির করে দিয়েছে অল ইন্ডিয়া লোকো রানিং স্টাফ অ্যাসোশিয়েন। তাঁদের দাবি-
একটা ইন্ডিগোর ঘটনাই দেশের বিমান পরিবহণ ব্যবস্থাকে কার্যত পঙ্গু করে দিয়েছে। এমন পরিপ্রেক্ষিতে অল ইন্ডিয়া লোকো রানিং স্টাফ অ্যাসোশিয়েনের দাবি, রেলের অবস্থা আরও ভয়ানক। ফলে লোকো পাইলটদের রোস্টার দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্ক হওয়া উচিত। নইলে রেলও হতে পারে দেশের পরবর্তী IndiGo।