Health Insurance Claim: যদি আপনার স্বাস্থ্য বিমার ক্লেম রিজেক্ট হয়, তাহলে আর আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। কয়েকটি সহজ পদক্ষেপের মাধ্যমে আপনি আপনার অধিকার ফিরে পেতে পারেন। স্বাস্থ্য বিমার উদ্দেশ্য হল অসুস্থতা বা জরুরি অবস্থার ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা, কিন্তু কখনও কখনও বিমা কোম্পানি ক্লেম প্রত্যাখ্যান করে। এই পরিস্থিতিতে, বসে থাকার পরিবর্তে, আপনি সঠিক তথ্য এবং পদক্ষেপের মাধ্যমে আপনার টাকা ফেরত পেতে পারেন। প্রথমত, আপনার দাবি কেন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে তা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। বিমা কোম্পানিকে আপনাকে লিখিতভাবে কারণ জানাতে হবে। এই কারণটি পলিসির শর্তাবলীতে লুকিয়ে থাকতে পারে, যেমন পূর্ব-বিদ্যমান শর্ত প্রকাশ না করা, ভুল তথ্য প্রদান করা, অথবা সময়মতো নথি জমা না দেওয়া।
রিজেকশন লেটার সঠিকভাবে পরীক্ষা করুন
প্রত্যাখ্যান পত্রটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং বুঝুন কোম্পানিটি কী কারণে দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। যদি আপনার মনে হয় এটি ঠিক নয়, তাহলে অবিলম্বে কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আপনি তাদের কাস্টমার কেয়ার বা Grievance Redressal Officer সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনার বক্তব্য স্পষ্টভাবে বলুন। কখনও কখনও, অসম্পূর্ণ নথির মতো ছোটখাটো ত্রুটিগুলি সংশোধন করা যেতে পারে এবং ক্লেম অনুমোদিত হতে পারে।
IRDAI এর সাহায্য নিন
যদি কোম্পানি আপনার কথা না শোনে, তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপ হল ইন্সুরেন্স রেগুলেটরি এন্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার( IRDAI) সাহায্য নিন । IRDAI-এর একটি অনলাইন পোর্টাল আছে যেখানে আপনি আপনার অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। আপনাকে আপনার পলিসি নম্বর, ক্লেম নম্বর এবং রিজেকশন লেটারের একটি কপি প্রদান করতে হবে। IRDAI আপনার অভিযোগের তদন্ত করবে এবং কোম্পানিকে জবাব জানাতে বলবে। এর ফলে প্রায়শই ক্লেমটি অনুমোদিত হয়। যদি বিষয়টির এখনও সমাধান না হয়ে থাকে, তাহলে আপনি বিমা ন্যায়পালের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। এটি একটি বিনামূল্যের পরিষেবা যা ছোটখাটো বিষয়গুলি দ্রুত সমাধান করে। ন্যায়পালের কাছে আপিল করার জন্য, আপনাকে ক্লেমের এক বছরের মধ্যে আপিল দায়ের করতে হবে।
আপনার পলিসির শর্তাবলী মনোযোগ সহকারে পড়ুন
আরেকটি বিকল্প হল ভোক্তা আদালতে যাওয়া। যদি আপনার ক্লেম গুরুত্বপূর্ণ হয় এবং আপনি মনে করেন যে কোম্পানি অন্যায্য আচরণ করেছে, তাহলে আপনি ভোক্তা আদালতে মামলা দায়ের করতে পারেন। এটি করার জন্য আপনি একজন আইনজীবী নিয়োগ করতে পারেন, তবে ছোট দাবির জন্য এটি ব্যয়বহুল হতে পারে। অতএব, প্রথমে কোম্পানি এবং IRDAI এর সঙ্গে কথা বলা ভাল । ক্লেম করার আগে পলিসিরি শর্তাবলী মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কখনও কখনও লোকেরা অসুস্থতা বা হাসপাতালের নাম গোপন করে, যার ফলে দাবি প্রত্যাখ্যান করা হয়। বিল, টেস্ট রিপোর্ট এবং ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনের মতো সমস্ত নথি সময়মতো জমা দিন।
শুরু থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করলে, দাবি রিজেকশনের সম্ভাবনা কম থাকবে। পলিসি কেনার সময় সম্পূর্ণ এবং সঠিক তথ্য প্রদান করুন। যদি আপনার কোনও সন্দেহ থাকে, তাহলে একজন বিমা এজেন্ট বা আর্থিক উপদেষ্টার সঙ্গে পরামর্শ করুন। এই পদক্ষেপগুলি আপনাকে আপনার অধিকার সুরক্ষিত করতে এবং কঠিন সময়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে সহায়তা করবে।
উল্লেখ্য, যদি আপনার জীবন বিমা বা স্বাস্থ্য বিমা কোম্পানি কোনও বৈধ কারণ ছাড়াই আপনার দাবি প্রত্যাখ্যান করে অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে অর্থ প্রদানে বিলম্ব করে, তাহলে আপনি সরাসরি বিমা ন্যায়পালের কাছে আপনার অভিযোগ দায়ের করতে পারেন এবং কোনও খরচ ছাড়াই ন্যায়বিচার পেতে পারেন।
বিমা লোকপাল কী?
বিমা লোকপাল একটি স্বাধীন সংস্থা যা বিমা গ্রাহক এবং বিমা কোম্পানিগুলির মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি করে। এর উদ্দেশ্য হল গ্রাহকরা যাতে আদালতের কার্যক্রম ছাড়াই দ্রুত এবং ন্যায্য সমাধান পান তা নিশ্চিত করা।
আপনি কখন বিমা লোকপালের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন?
যদি কোম্পানি সাড়া না দেয় অথবা আপনি উত্তরে সন্তুষ্ট না হন, তাহলে দাবি প্রত্যাখ্যানের তারিখ থেকে এক বছরের মধ্যে আপনি বিমা লোকপালের কাছে যেতে পারেন। তবে, এক বছর পরে অভিযোগ গ্রহণ করা হবে না।
কোন কোন ক্ষেত্রে আপনি অভিযোগ করতে পারেন?
কীভাবে অভিযোগ করবেন, কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন?
বিমা লোকপালের কাছে যাওয়ার আগে, একজন গ্রাহকের নিজেরাই বিমা কোম্পানির কাছে একটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করা উচিত। যদি এক মাসের মধ্যে সমস্যাটি সমাধান না হয়, তাহলে তারা লোকপালের কাছে যেতে পারেন।
অভিযোগের সঙ্গে এই নথিগুলি প্রয়োজনীয়
সিদ্ধান্ত পেতে কত দিন সময় লাগে?
বিমা লোকপালের লক্ষ্য হল ৬০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করা। যদি উভয় পক্ষ (গ্রাহক এবং বিমা কোম্পানি) মধ্যস্থতায় সম্মত হয়, তাহলে ৩০ দিনের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করা যেতে পারে।
বিমা কোম্পানি কি লোকপালের আদেশ মানতে বাধ্য?
হ্যাঁ, অবশ্যই। বিমা লোকপাল নিয়মাবলী, ২০১৭ অনুসারে, বিমা কোম্পানিকে অবশ্যই ৩০ দিনের মধ্যে লোকপালের আদেশ বাস্তবায়ন করতে হবে। তা না করলে প্রতিদিন ৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। তবে, এই জরিমানা গ্রাহকের কাছে নয়, 'Policyholders’ Protection Fund'যাবে। অতএব, যদি কোম্পানি আদেশ মেনে না চলে, তাহলে গ্রাহক ভোক্তা ফোরামের মাধ্যমে সাহায্য নিতে পারেন।
বিমা লোকপাল কেন গুরুত্বপূর্ণ?