হাইলাইটস
- বাড়ি কেনা একটি বড়সড় বিনিয়োগ। আর তাই গৃহ ঋণের সঠিক EMI স্থির করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- য়াদ যত লম্বা হবে, ততই আপনার মাসিক কিস্তির চাপ কমবে। কিন্তু সব মিলিয়ে, শেষ পর্যন্ত ফ্ল্যাটের যা দাম, তার থেকে অনেকটাই বেশি খরচ হবে। সৌজন্যে সুদ।
- তবে আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মাঝপথে অগ্রিম ঋণ মিটিয়ে দেওয়ারও পরিকল্পনা করতে পারেন। তাছাড়া ঋণের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে অতিরিক্ত পেমেন্ট করলে EMI-ও কমিয়ে আনা সম্ভব।
Home Loan EMI: বাড়ি কেনা একটি বড়সড় বিনিয়োগ। আর তাই গৃহ ঋণের সঠিক EMI স্থির করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘ মেয়াদে ঋণের পরিমাণ এবং সুদের হারের উপর পুরোটা নির্ভর করে। EMI, অর্থাৎ, ইক্যুয়েটেড মান্থলি ইনস্টলমেন্ট তাই খুব ভেবেচিন্তে বাছতে হয়। কারণ মধ্যবিত্তের কাছে একটা বাড়ির জন্য নেওয়া ঋণের অঙ্ক নেহাৎ কম নয়। EMI করলেও, মাসে-মাসে বেশ ভাল অঙ্কেরই টাকা জমা করতে হয়।
EMI স্থির করার পদ্ধতি:
১. ঋণের পরিমাণ নির্ধারণ করুন:
আরও পড়ুন
- আপনার বাজেট এবং ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা বিবেচনা করুন। তার ভিত্তিতেই ঋণের পরিমাণ নির্ধারণ করুন।
- ঋণের পরিমাণ যত বেশি হবে, স্বাভাবিকভাবেই EMI তত বেশি হবে।
২. সুদের হার নির্ধারণ:
- ঋণের ধরন, ঋণের মেয়াদ এবং ঋণদাতার নীতির উপর নির্ভর করে সুদের হার নির্ধারিত হয়।
- সুদের হার যত বেশি হবে, EMI তত বেশি হবে।
৩. ঋণের মেয়াদ:
- ঋণের মেয়াদ যত বেশি হবে, EMI তত কম হবে।
- তবে, মনে রাখবেন, দীর্ঘ মেয়াদের ঋণের ক্ষেত্রে মোট সুদের পরিমাণ বেশি হবে। অর্থাৎ, যত বেশি সময় ধরে ঋণ মেটাবেন, সব মিলিয়ে আপনার খরচও ততটাই বাড়বে।
৪. EMI ক্যালকুলেটর ব্যবহার:
- বিভিন্ন ঋণদাতার ওয়েবসাইটে EMI ক্যালকুলেটর পাওয়া যায়।
- এই ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে আপনি ঋণের পরিমাণ, সুদের হার এবং ঋণের মেয়াদ অনুযায়ী EMI-এর পরিমাণ বের করতে পারেন।
উদাহরণ
ধরুন আপনি ২০ লক্ষ টাকার একটি ফ্ল্যাট কিনবেন। স্বপ্নের বাসায় থাকতে ঋণের বোঝা কতটা হবে, সেটা মাথায় রাখাটাও জরুরি। আসুন, বিভিন্ন মেয়াদের ঋণের ক্ষেত্রে মাসিক কিস্তি (EMI) এবং সুদ কত হবে, সেটা হিসাব করে দেখা যাক।
ধরুন, ফ্ল্যাটের দাম ২০ লক্ষ টাকা এবং আপনার ব্যাংক ঋণের সুদ ৯%। আপনি ৫ লক্ষ টাকা ডাউন পেমেন্ট দিয়েছেন।
মাসিক কিস্তি কত হবে?
- ১০ বছরের ঋণ: প্রতি মাসে আপনাকে ২৯,৫২৮ টাকা কিস্তি দিতে হবে।
- ১৫ বছরের ঋণ: প্রতি মাসে আপনাকে ২১,১৭৮ টাকা কিস্তি দিতে হবে।
- ২০ বছরের ঋণ: প্রতি মাসে আপনাকে ১৮,৪৩৫ টাকা কিস্তি দিতে হবে।
২. মোট কত সুদ দিতে হবে?
- ১০ বছরের ঋণ: মোট সুদ হবে ৮,৯২,৫৮২ টাকা।
- ১৫ বছরের ঋণ: মোট সুদ হবে ১৩,৯১,৩১৭ টাকা।
- ২০ বছরের ঋণ: মোট সুদ হবে ২০,৭৫,৮০৭ টাকা।
অর্থাৎ, মেয়াদ যত লম্বা হবে, ততই আপনার মাসিক কিস্তির চাপ কমবে। কিন্তু সব মিলিয়ে, শেষ পর্যন্ত ফ্ল্যাটের যা দাম, তার থেকে অনেকটাই বেশি খরচ হবে। সৌজন্যে সুদ। তবে আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মাঝপথে অগ্রিম ঋণ মিটিয়ে দেওয়ারও পরিকল্পনা করতে পারেন। তাছাড়া ঋণের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে অতিরিক্ত পেমেন্ট করলে EMI-ও কমিয়ে আনা সম্ভব।
EMI কমানোর উপায়:
- ঋণের পরিমাণ কমানো: ঋণের পরিমাণ কমালে EMI কম হবে। অর্থাৎ ডাউন পেমেন্ট যত বেশি, EMI তত কম।
- ঋণের মেয়াদ বাড়ানো: ঋণের মেয়াদ বাড়ালে EMI কম হবে।
- অগ্রিম অনেকটা করে ঋণ মেটানো: ঋণের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেভাগে অতিরিক্ত পেমেন্ট করলে EMI কমিয়ে আনা সম্ভব। সেক্ষেত্রে নতুন করে EMI স্থির করে দেবে ঋণদাতা।
গৃহ ঋণের EMI স্থির করার সময় ঋণের পরিমাণ, সুদের হার, ঋণের মেয়াদ এবং বাজেট বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। ঋণের শর্তাবলী সম্পর্কে ব্যাঙ্কের সঙ্গে বিস্তৃত আলোচনা করে তবেই সিদ্ধান্ত নিন।