ঐতিহাসিক জেলা মুর্শিদাবাদ (Murshidabad)। সারাবছর দেশ বিদেশ থেকে এখানে আসেন পর্যটকরা। ছুঁয়ে দেখেন একসময়ের বাংলা-বিহার- ওড়িশার রাজধানীকে। তবে জানলে অবাক খুবই কম খরচে যাওয়া যায় মুর্শিদাবাদ। মাত্র কয়েক শো টাকা। টাকার অঙ্কটা ২৫০ বা তার থেকে সামান্য বেশি। এত বড় পর্যটন ক্ষেত্রে কীভাবে এত কম সম্ভব? কোথায় থাকবেন? কী খাবেন? ট্রেন ভাড়া কত? (Train Fare) এই সব তথ্য এই প্রতিবেদনে জানাব।
প্রথমেই বলে রাখি একা, বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যেতে পারেন মুর্শিদাবাদ। সেক্ষেত্রে খরচও বাড়বে না। খুব বেশি হলে এক থেকে দেড়শো টাকা বাড়তে পারে। কারণ, মুর্শিদাবাদে ঘুরলেও কোথায় থাকা ও খাওয়া সম্পূর্ণ ফ্রিতে করতে পারবেন, তার ঠিকানা এই প্রতিবেদনে জানাব।
আকর্ষণীয় স্থান (Attractive place In Murshidabad)
মুর্শিদাবাদের সব থেকে আকর্ষণীয় স্থান হল হাজারদুয়ারি প্যালেস। এছাড়াও রয়েছে মতিঝিল, কাঠগোলা বাগান, নিমক হারাম দেওরি, নসিপুর রাজবাড়ি, একাধিক কবরাস্থান, খোশবাগ, রোশনবাগ, ভবানীশ্বর মন্দির ইত্যাদি। যদি ২ দিনের ট্যুর করেন তাহলেই এই সব জায়গা নিশ্চিন্তে ঘুরতে পারবেন। সেক্ষেত্রেও খরচ কিন্তু একটুও বাড়বে না।
কীভাবে যাবেন?
শিয়ালদা স্টেশন (Sealdah Station) থেকে লালগোলাগামী যে কোনও ট্রেনে মুর্শিদাবাদ যেতে পারবেন। নামতে হবে মুর্শিদাবাদ স্টেশনে। স্টেশনের নাম মুর্শিদাবাদ হলেও এলাকাটি লালবাগ নামে পরিচিত। এছাড়াও চিৎপুর স্টেশন থেকে ট্রেন ধরেও যেতে পারেন। লালগোলা প্যাসেঞ্জার,ভাগীরথী এক্সপ্রেস, ধনধান্যে এক্সপ্রেস, হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেস। এই প্রতিটি ট্রেনে আপনি যদি সাধারণ কামরাতে যান তাহলে মাথাপিছু টিকিটের দাম ৪৫ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। আর যদি রিজার্ভেশন করে যান, খরচ সামান্য বেশি পড়বে।
আবার মুর্শিদাবাদে না নেমে বহরমপুর কোর্ট স্টেশনেও নামতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে অটো ধরে লালবাগে আসতে হবে। দূরত্ব ১০ কিলোমিটার মতো। প্রাপ্তি বলতে ভাগীরথীর মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে করতে আপনি লালবাগ পৌঁছে যাবেন।
থাকা-খাওয়া ফ্রি
লালবাগ )lalbagh)পর্যটনক্ষেত্র। স্বাভাবিকভাবেই সেখানে হোটেল রয়েছে। তবে হোটেলে থাকলে খরচ বেশি। তাই খরচ বাঁচাতে আপনি চলে যেতে পারেন ডাহাপাড়া জগৎবন্ধু ধামে। সেখানে সবার জন্য থাকার ও খাওয়ার সুব্যবস্থা রয়েছে। তবে সেই ধামে পৌঁছতে গেলে আপনাকে লালবাগ থেকে নৌকা পেরিয়ে ওপাড়ে যেতে হবে। তারপর হাঁটাপথে কিছুটা।
আর যদি হোটেলে থাকতে চান সেই পথও খোলা রয়েছে। হোটেলে থাকলে সুবিধা এই যে আপনি একেবারে পর্যটনস্থলেই থাকতে পারবেন। এখানকার হোটেলগুলোর ভাড়া ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা বা তার সামান্য বেশি।সরকারি লজও রয়েছে। সেখানে থাকতে গেলে আপনাকে আগে থেকে বুকিং করতে হবে।
আগেই বলেছি যদি নিখরচায় থাকতে চান তাহলে ডাহাপাড়া জগৎবন্ধু ধামে থাকতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে একাধিকবার নৌকা পারাপার করতে হবে। যদিও তাতে খরচ অতি সামান্য। আর মুর্শিদাবাদের ঐতিহাসিক জায়গাগুলো আপনি বা আপনারা স্থানীয় টোটো, অটো বা ঘোড়ার গাড়িতে ঘুরতে পারেন। ঘোড়ার গাড়িতে ঘুরলে খরচ বেশি। কিন্তু, টোটো বা অটোতে খরচ কম। অনেকে আবার হেঁটেও ঘুরে থাকেন।
ভ্রমণ প্ল্যান (Tour Plan)
এবার জানাব, আপনাদের দুদিনের প্ল্যান যদি করেন তাহলে কোথায় কীভাবে যাবেন? প্রথম দিনই যেতে পারেন মতিঝিল, কাঠগোলা বাগান, নশিপুর রাজবাড়ি, বিভিন্ন সমাধী, হাজারদুয়ারি ও খোশবাগ, রোশনবাগ,ভবানীশ্বর মন্দির।
দ্বিতীয়দিন যেতে পারেন মতিঝিল পার্ক (motijhil Park)। সেখান থেকে আবার বহরমপুরও যেতে পারেন ওই একই দিনে। সেখানে কাশিমবাজার রাজবাড়ি-সহ আরও কয়েকটি দর্শনীয় স্থান রয়েছে।
তারপর আপনি বা আপনারা ফের বহরমপুর কোর্ট স্টেশন থেকে কলকাতাগামী ট্রেন ধরতে পারেন। বা ফের বহরমপুর থেকে লালবাগ ফিরে মুর্শিদাবাদ স্টেশন থেকে ট্রেনে চড়তে পারেন।
সুতরাং বুঝতেই পারছেন, মাথাপিছু মাত্র ২৫০ টাকা বা তার থেকে সামান্য বেশি খরচে আপনি বা আপনারা ঘুরে আসতে পারবেন নবাবের জেলা-শহর মুর্শিদাবাদ।